দিনের শেষে ঘরে ঢুকে এখানে জিনিস, ওখানে ডাঁই করে রাখা পোশাক, অগোছালো টেবিল দেখলে কার মাথার ঠিক থাকে? অন্দরসজ্জা শিল্পীরা বলেন, পরিচ্ছন্ন এবং সাজানো ঘর যেমন ক্লান্তি দূর করে, তেমনই অগোছালো ঘর বিরক্তি বাড়িয়ে দেয়।
কিন্তু গতিশীল যুগে নির্দিষ্ট সময়ান্তরে ঘর গোছানো সবার দ্বারা সম্ভব হয় না। কারও ক্ষেত্রে অগোছালো ঘরের কারণ যদি সময়াভাব হয়, কারও আবার আলস্যই নেপথ্য কারণ। দিনের শেষে বা একটি ছুটির দিনে ঘর গোছাতে মন চায় না।
নিয়ম করে ঘর না গুছিয়েও বাড়ি পরিচ্ছন্ন রাখা যায় অন্দরসজ্জার গুণেই। শুধু নিশ্চিত করতে হবে জায়গার জিনিস যেন জায়গায় থাকে।
অন্দরসজ্জা শিল্পীদের কথায়, আধুনিক অন্দরসজ্জায় একাধিক জিনিস দিয়ে ঘর সাজানোর দরকার হয় না। বরং যেখানে, যেটুকু দরকার— সেটাই খুব ভেবেচিন্তে কিনতে হয়। মুখের আদলে তৈরি টেবিল ল্যাম্প, কাঠের কারুকাজহীন অথচ আধুনিক নকশার চেয়ারও ঘরের সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্য যথেষ্ট হতে পারে। জিনিস যত কম হবে, ঘর তত অপরিচ্ছন্ন হওয়ার সম্ভবনা কমবে।
অতিরিক্ত নয়, কিন্তু স্বল্প জিনিসের গুণমানে নজর দেওয়া দরকার। সোফা হোক বা কাউচ কিংবা দেরাজ— অল্প কিছু জিনিস থাকুক, কিন্তু সেটি যেন দৃষ্টিনন্দন হয়। পর্দা থেকে আসবাবের ঢাকা, কাঠ, মার্বেলের আসবাব, সুদৃশ্য দেরাজ ঘরের রূপ বদলে দিতে পারে।
ঘরের আসবাবের মধ্যে যেন সামঞ্জস্য বজায় থাকে। চেয়ারও হতে শিল্পবস্তু। শৌখিন কাঠের কারুকাজ নয়, বরং আরামদায়ক সোফা, ব্যবহারে সুবিধাজনক ওয়ার্ড্রোবই আধুনিক অন্দরসজ্জার অঙ্গ। যে জিনিসগুলি বেছে নেওয়া হবে, তা যেন পরস্পরের সঙ্গে মানানসই হয়।
অন্দরসজ্জায় একটি বা দু’টি জিনিসই যথেষ্ট হতে পারে, যদি তার শিল্পগত আবেদন থাকে। একটি নকশিকাঁথা, কাপড়ের কাজের শিল্পবস্তুই দেওয়ালে সাজালে পুরো ঘরের সৌন্দর্যে বাড়তি মাত্রা যোগ হতে পারে। মার্বেলের ফুলদানি, পিতলের ভাস্কর্য— এমন ছোট ছোট একটি জিনিসই বাড়ির ভোল পাল্টাতে পারে। কিন্তু তাতে যেন রুচিবোধের ছোঁয়া থাকে।
বাইরে বসার জায়গা, কিন্তু ভিতরে জিনিস রাখার এমন আসবাব এখনকার দিনে জনপ্রিয়। খাটের পাশে রাখা দেরাজ যেমন ঘরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিতে পারে, তেমনই প্রয়োজনের জিনিস তার ভিতরে ভরে দেওয়া যায়। ফলে ঘর অপরিচ্ছন্ন দেখায় কম।