হামাসের বন্দিদশা থেকে ফিরে তেল আবিবে ‘ধর্ষণের শিকার’ ইসরায়েলি তরুণী

হামাসের বন্দিদশা থেকে ফিরে তেল আবিবে ‘ধর্ষণের শিকার’ ইসরায়েলি তরুণী

গাজায় হামাসের হাতে ৫৫ দিন বন্দি থাকার পর মুক্ত হন মিয়া শেম নামের এক ইসরায়েলি তরুণী। আর মুক্ত হয়ে তেল আবিবে ফিরে নিজ অ্যাপার্টমেন্টেই ধর্ষণের শিকার হয়েছেন তিনি।একজন সুপরিচিত ফিটনেস ট্রেইনারের বিরুদ্ধে তাকে মাদক দেওয়ার ও ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছেন মিয়া শেম।

তিনি জানিয়েছেন, বন্দিদশা অবস্থায় ধর্ষণের শিকার হতে পারেন বলে শঙ্কায় থাকতেন। অথচ সেখানে ভালোই ছিলেন। ধর্ষণের শিকার হলেন নিজ রাষ্ট্রে, নিজ ঘরেই।

হিব্রু ভাষার দৈনিক পত্রিকা মারিভ–এর বরাতে মিডল ইস্ট মনিটরের খবরে বলা হয়, হামাসের জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়া তরুণী মিয়া শেম স্বীকার করেছেন, তিনি ইসরায়েলের তুলনায় গাজায় অধিক নিরাপদ ও সুরক্ষিত বোধ করেছিলেন।

ইসরায়েলের দৈনিক পত্রিকা হারেৎজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরীক্ষায় মিয়া শেমের শরীরে ধর্ষণের আলামত মিলেছে। মিয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে গত মার্চের শেষ দিকে ওই প্রশিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।  

গত ৩ মে রাতে এ বিষয়ে মিয়া শেম ইসরায়েলের টেলিভিশন চ্যানেল-১২–তে একটি সাক্ষাৎকার দেন। সেখানে তিনি নিজ অ্যাপার্টমেন্টে ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আমি সত্য প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। লুকিয়ে থাকাদের দলে আমি নই। সারা জীবন এটাই আমার সবচেয়ে বড় ভয় ছিল, জিম্মি হওয়ার আগে, জিম্মি থাকার সময়। জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর যেখানে আমার সবচেয়ে নিরাপদ থাকার কথা, সেখানেই আমার সঙ্গে এ ঘৃণ্য ঘটনা ঘটলো। ’

মিয়া বলেন, বাড়ি ফেরার পর ওই প্রশিক্ষকের সঙ্গে তার আলাপ হয়। ওই প্রশিক্ষক আমাকে জানিয়েছিলেন, তার জীবনের গল্প নিয়ে একটি সিনেমা নির্মাণ হতে পারে। এজন্য হলিউডের এক প্রযোজককে আমার অ্যাপার্টমেন্টে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেন প্রশিক্ষক। আমি প্রস্তাবে রাজি হই।

মিয়া আরও বলেন, ওই দিন অ্যাপার্টমেন্টে নির্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টা পর প্রশিক্ষক আসেন। ওই সময়ের পর থেকে মিয়ার স্মৃতি ঝাপসা। তিনি সব ঠিকমতো মনে করতে পারছেন না দাবি করে বলেন, ‘আমার শরীর মনে রেখেছে; এটি সবকিছু অনুভব করতে পেরেছে। কিন্তু আমার সঙ্গে ঠিক কী ঘটেছে, সেটা আমি জানতাম না। আমার সঙ্গে কী ঘটেছে বুঝঝে আমার তিন দিন সময় লেগেছে। ’

এই তরুণী বলেন, প্রশিক্ষককে আমি আমার ঘরে বিবস্ত্র অবস্থায় দেখতে পাই। ঘরে দ্বিতীয় আরেক ব্যক্তির উপস্থিতি টের পেয়েছিলাম। এরপর আর কিছুই মনে করতে পারেননি মিয়া।

সম্ভবত মিয়া শেমকে মাদক দেওয়া হয়েছিল বলে জানান মিয়ার এক বন্ধু।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরে ইসরায়েলে নোভা মিউজিক ফেস্টিভ্যালে অতর্কিত আক্রমণ করে যে কয়জনকে জিম্মি হিসেবে নিয়ে যায় হামাস, মিয়া শেম তাদের মধ্যে একজন। সেদিন হামাসযোদ্ধাদের গুলিতে আহত হন মিয়া। তার হাতে গুলি লাগে।  

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS