News Headline :
রাজশাহীতে বিক্ষোভ, নেতানিয়াহুর কুশপুতুলে আগুন জামালপুরে চেক প্রতারণার মামলায় বিএনপি নেতার কারাদণ্ড ফিলিস্তিন ইস্যুতে লুটপাট প্রতিবাদের ভাষা হতে পারে না: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা রাশিয়ার ‘অ্যাটমস্কিলস চ্যাম্পিয়নশিপে’ ৫ বাংলাদেশি পুরস্কৃত গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদে গায়েবানা জানাজা গাজা-রাফায় ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধের দাবি যশোরের সাংবাদিকদের কুমিল্লায় কেএফসিতে ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪ ট্রাম্পের ঘোষণার পর ক্রিপ্টোবাজারেও অস্থিরতা, কমেছে বিটকয়েনের দাম ভিয়েতনাম থেকে এলো ১২ হাজার ৭০০ টন আতপ চাল মুন্সিগঞ্জে দু-এক মাসের মধ্যে মেডিকেল কলেজের কাজ শুরু হতে পারে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ট্রাম্পের শুল্কারোপ ১০০ বছরে বিশ্ববাণিজ্যে বৃহত্তম পরিবর্তন

ট্রাম্পের শুল্কারোপ ১০০ বছরে বিশ্ববাণিজ্যে বৃহত্তম পরিবর্তন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপ করেছেন। এর প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতিতে ব্যাপক হবে।এটি প্রতিফলিত হবে মার্কিন শুল্ক আয়ের গ্রাফের রেখায়, যা এক শতাব্দীতে দেখা যায়নি—এমনকি বিংশ শতাব্দীর ত্রিশের দশকের উচ্চমাত্রার রক্ষণশীল বাণিজ্যনীতির সময়ও না। এটি প্রকাশ পাবে রাতারাতি শেয়ারবাজারের পতনে, বিশেষ করে এশিয়ায়।

তবে এই পরিবর্তনের প্রকৃত মূল্যায়ন করা যাবে দীর্ঘদিনের বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রবাহে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের মাধ্যমে। মূলত, এটি একটি সর্বজনীন শুল্ক, যা শুক্রবার রাতে কার্যকর হতে যাওয়া সব আমদানির ওপর ১০ শতাংশ হারে প্রযোজ্য। এর পাশাপাশি ‘সবচেয়ে খারাপ অপরাধীদের’ জন্য তাদের বাণিজ্য উদ্বৃত্তের ভিত্তিতে পাল্টা শুল্ক ধার্য করা হবে।

এছাড়া এশীয় দেশগুলোর ওপর শুল্কের প্রভাব হবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

এটি হাজারো প্রতিষ্ঠান, কারখানা ও সম্ভবত দেশগুলোর পুরো ব্যাবসায়িক মডেল ভেঙে দেবে। বিশ্বের বৃহত্তম কম্পানিগুলোর তৈরি সরবরাহ শৃঙ্খল কিছুক্ষণের মধ্যেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। এর অনিবার্য প্রভাব হবে উৎপাদন কার্যক্রম চীনের দিকে সরিয়ে নেওয়া।

তাহলে কি এটি শুধুই একটি বড় কৌশলগত দর-কষাকষি? মার্কিন প্রশাসন তাদের পরিকল্পিত কর হ্রাসের জন্য এই শুল্ক রাজস্ব ব্যবহার করতে চাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। দ্রুত কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা খুব কম।  

হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘এটি কোনো দর-কষাকষি নয়, এটি একটি জাতীয় জরুরি অবস্থা। ’

নতুন শুল্কনীতির কাঠামো

যুক্তরাষ্ট্রের তথাকথিত ‘পাল্টা শুল্ক’ কাঠামো মূলত যেকোনো দেশকে শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপের মাধ্যমে দণ্ডিত করছে, যদি সেই দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যে উদ্বৃত্ত রাখে, অর্থাৎ আমদানির তুলনায় বেশি পণ্য রপ্তানি করে। এমনকি কোনো উদ্বৃত্ত না থাকলেও ১০ শতাংশ সর্বজনীন শুল্ক আরোপ করা হবে।

এই সিদ্ধান্ত দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রকাশ করে।

প্রথমত, মার্কিন নীতির লক্ষ্য হলো তাদের বাণিজ্য ঘাটতি শূন্যে নামিয়ে আনা। এটি বিশ্ববাণিজ্যের প্রবাহকে সম্পূর্ণ নতুন পথে প্রবাহিত করবে এবং এশিয়াকে বিশেষভাবে শাস্তিমূলক অবস্থানে ফেলবে। দ্বিতীয়ত, দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে কোনো পরিবর্তন সম্ভব হয়নি বা কার্যকর হয়নি।
একটি সুস্থ বাণিজ্য ব্যবস্থায় ঘাটতি ও উদ্বৃত্ত সাধারণ বিষয়, যেখানে দেশগুলো নিজেদের উৎপাদন দক্ষতা অনুযায়ী বিশেষায়িত হয়ে থাকে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এখন এই বাণিজ্যিক ভারসাম্যের মৌলিক যুক্তি সম্পূর্ণ উল্টে দিয়েছে। কিন্তু কারখানা স্থানান্তর করতে অনেক বছর লাগবে। এশিয়ার ওপর আরোপিত ৩০-৪০ শতাংশ শুল্কের ফলে পোশাক, খেলনা ও ইলেকট্রনিকসের দাম খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।

বিশ্বের প্রতিক্রিয়া কী হবে?

কিছু ইউরোপীয় ভোক্তা পোশাক ও ইলেকট্রনিকসের বিকল্প সরবরাহ ব্যবস্থার মাধ্যমে সুবিধা পেতে পারে। তবে যখন বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি নিজেকে বিচ্ছিন্ন করছে, তখন অন্য বৃহৎ অর্থনীতিগুলো পারস্পরিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো দৃঢ় করতে পারে।

টেসলার বিক্রির পতন থেকে বোঝা যায়, এটি শুধু সরকারের প্রতিক্রিয়ার বিষয় নয়; বরং ভোক্তারাও এর জবাব দিতে পারেন। এটি হতে পারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমভিত্তিক নতুন ধরনের বাণিজ্যযুদ্ধ।

ইউরোপ সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তারা আর মার্কিন ব্র্যান্ডের ভোক্তাপণ্য কিনবে না, যা এতদিন বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। এ ছাড়া এই শুল্কবৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় মার্কিন কর্তৃপক্ষকে সুদের হার বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে। ফলাফল হিসেবে বিশ্বব্যাপী একটি বিশৃঙ্খল বাণিজ্যযুদ্ধ প্রায় অনিবার্য হয়ে উঠেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS