আগরতলার ৯০ শতাংশই পানির নিচে, ৭ প্রাণহানি

আগরতলার ৯০ শতাংশই পানির নিচে, ৭ প্রাণহানি

চার দিন ধরে টানা ভারী বৃষ্টির কারণে ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলা শহর রীতিমতো জলাশয়ে পরিণত হয়েছে। শহরের প্রায় ৯০ শতাংশ এখন পানির নিচে।প্রতিটি রাস্তায় কোথাও হাঁটু পানি আবার কোথাও কোমরসমান পানি দাঁড়িয়ে রয়েছে। বন্যার কারণে রাজ্যজুড়ে এখন পর্যন্ত সাতজনের প্রাণহানি হয়েছে।

রাজধানীর ওপর দিয়ে বয়ে চলা হাওড়া নদীর পাড় উপচে শহরের পানি প্রবেশ করছে কিছু কিছু জায়গায়। আদালত চত্বর, পশ্চিম জেলা শাসকের কার্যালয় থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. মানিক সাহার বাসভবনের সামনেও পানি জমেছে। জরুরি কাজে মুখ্যমন্ত্রী বাড়ি থেকে কার্যালয়ে গেছেন। পানির কারণে নিরাপত্তা বাহিনী এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. মানিক সাহাকে পাম্পের নৌকায় করে বাড়ি থেকে কার্যালয়ে নিয়ে যান।  

এ সময় সাংবাদিকদের কাছে রাজ্যের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, দক্ষিণ জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। রাজ্যের অন্যান্য জেলায়ও প্রায় আড়াইশো মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এমন বৃষ্টিপাত আগে আর কখনো হয়নি। এই পরিস্থিতিতে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা রাজ্যজুড়ে কাজ করে যাচ্ছেন।  

পরিস্থিতিকে দ্রুত সামাল দেওয়ার জন্য এদিন সকালে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন বলে জানান মানিক সাহা। তার কাছে জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্য পাঠানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। খুব দ্রুত বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনীর বিশেষ টিম রাজ্যে আসবে বলেও আশা ব্যক্ত করেন তিনি।  
 ‍
মুখ্যমন্ত্রী জানান, এখন পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বন্যার কারণে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে এবং দুজন নিখোঁজ রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি সহায়তা করা হবে।

মানিক সাহা বলেন, ভারী বৃষ্টির কারণে গোমতী জেলায় রাজ্যের একমাত্র পানিবিদ্যুৎ প্রকল্পের ডুম্বুর জলাধারে প্রয়োজনের তুলনায় অধিক পানি জমা হয়ে পড়েছে, তাই যেকোনো সময় বাঁধ ভেঙে বড় বিপর্যয় ঘটতে পারে। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় এলাকায় আগাম ঘোষণা দিয়ে জলাধার কর্তৃপক্ষ স্লুইস গেট খুলে বাড়তি পানি ছেড়ে দিয়েছে। এর ফলে গোমতী ও সিপাহীজলা জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার বাড়িঘর ও কৃষি জমিতে ভয়ানক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। রাজ্যের আট জেলায় প্রশাসনের উদ্যোগে এখন পর্যন্ত মোট ১৮৩টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতিতে ত্রাণ ও উদ্ধারকাজে এখন পর্যন্ত ২০০টিরও বেশি টিমকে কাজ করছে।

ভারী বৃষ্টি হলেও আগরতলা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বাংলানিউজকে জানিয়েছে, বিমানবন্দরে ফ্লাইট সেবা স্বাভাবিক রয়েছে। তবে শহরের রাস্তায় পানি থাকার কারণে দূর দূরান্তের মানুষ বিমানবন্দরে যেতে পারছেন না।  

এভাবে অবিরাম বৃষ্টি চললে নতুন করে আরও অনেক জায়গা পানির নিচে তলিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS