কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে সৃষ্ট অস্থিরতার সুযোগে কুষ্টিয়ার খাজানগরের চালের মোকামে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে। হঠাৎ কোনো কারণ ছাড়াই মিলগেটে চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজা। দাম না কমালে মিল সিলগালা করে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে বাড়তি দামে চাল বিক্রি করায় আকস্মিক অভিযান চালিয়ে দুই মিলমালিককে ৪০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠান দুটি হলো জিন্নাহ আলমের মালিকানাধীন সুবর্ণা অ্যাগ্রো ফুড ও সাহেব আলীর মালিকানাধীন কুষ্টিয়া রাইস মিল। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে এই জরিমানা করেন জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট ও খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।
খাদ্য অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, দেশে দুই সপ্তাহ ধরে ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট অস্থিরতার সুযোগে খাজানগর মোকামে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে। কয়েকটি অটোরাইস মিল আরও দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে। এমন খবরে আজ বিকেলে খাজানগর মোকামে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে দেখা যায়, সুবর্ণা অ্যাগ্রো ফুড প্রতি কেজি সরু চাল (মিনিকেট) ৬৭ টাকায় বিক্রি করছে। একই দামে চাল বিক্রি করছে কুষ্টিয়া রাইস মিল। কয়েক দিন আগেও মিলগেটে প্রতি কেজি সরু চালের দাম ছিল ৬৫ টাকা। হঠাৎ দুই টাকা দাম বাড়ার বিষয়টি অস্বাভাবিক বলে মনে করছে জেলা প্রশাসন ও খাদ্য বিভাগ। তাই এ দুই প্রতিষ্ঠানকে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এদিকে কয়েকজন মিলমালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ‘ধানের দাম প্রতি মণে ২০০ টাকা বেড়েছে। তাই চালের দামও বাড়তি। তবে যে দুই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে, তারা দুই টাকা বেশি দামে চাল বিক্রি করছিল। এ কারণে তাদের জরিমানা করা হয়।
সরু চালের পাশাপাশি আটাশ ও কাজললতা চালের দামও দুই টাকার বেশি বেড়েছে। কয়েক দিন আগে কাজললতা চাল ৫৬ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। এখন সেই চালের কেজি ৬০ টাকা। আর আটাশ চাল ৫৩ টাকা থেকে বেড়ে এখন প্রায় ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে কয়েকটি মিলে।
জেলা চালকল মালিক সমিতির (একাংশ) সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, ‘কোনো মিলমালিক ইচ্ছা করে দাম বাড়াচ্ছেন না। ধানের দাম বেড়েছে, তাই চালের দাম সমন্বয় করা হচ্ছে। তবে কোনো কোনো মিলমালিক বাজার পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে একটু বেশি দামে বিক্রি করছেন। তাঁদের সতর্ক করা হয়েছে। আশা করছি, কেউ বেশি দাম নেবেন না।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজা বলেন, ‘অস্থিরতার সুযোগে আমাদের দৃষ্টি যখন অন্যদিকে, সেই সুযোগে মিলমালিকেরা চালের দাম কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন। বিষয়টি আমরা খুবই গভীরভাবে দেখছি। যারা বেশি দাম নিচ্ছে, তাদের জরিমানা করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত অভিযান চলবে। প্রয়োজনে অনিয়ম পেলে মিল সিলগালা করে দেওয়া হবে।’