বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিসহ সাতটি প্রতিষ্ঠান বিদ্যুতের খুঁটি (এসপিসি পোল) সরবরাহের কাজ পেয়েছে। তাদের কাছ থেকে সরকার ২০২১ সালে নেওয়া ‘বৈদ্যুতিক বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধন (খুলনা বিভাগ)’ শীর্ষক প্রকল্পের জন্য ৭২ হাজার ৮৯৭টি খুঁটি কিনবে। এ দফায় ৩টি আলাদা দর প্রস্তাবের মাধ্যমে এসব খুঁটি কিনতে ব্যয় হবে ২২৮ কোটি টাকা।
আজ বুধবার ঢাকায় সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে খুঁটি কেনার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। জানা গেছে, প্রকল্পটিতে আরইবিসহ বাংলাদেশ সরকার ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) অর্থায়ন করছে। মোট ব্যয়ের আকার ৩ হাজার ৭৬ কোটি ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রকল্পটি ২০২১ সালের ৪ মে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদিত হয়। প্রকল্পের মেয়াদ চার বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন।
আরইবির আওতায় ৯টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এলাকায় পল্লী বিদ্যুতায়ন নেটওয়ার্কের আধুনিকায়ন ও ক্ষমতা বৃদ্ধি, ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো, নিরবচ্ছিন্ন ও গুণগত মানসম্পন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য প্রকল্পটি নেওয়া হয়। সমিতিগুলো হচ্ছে বাগেরহাট, যশোর-১, যশোর-২, ঝিনাইদহ, খুলনা, কুষ্টিয়া, মাগুরা, মেহেরপুর ও সাতক্ষীরা।
জানা যায়, লট-১–এর আওতায় কেনা হবে ২৪ হাজার ৩০০টি খুঁটি। এগুলো কেনার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে তিনটি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি লিমিটেড ৭৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা, কনফিডেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড ৭৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং যৌথভাবে দাদা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড, রয়্যাল গ্রিন প্রোডাক্টস লিমিটেড ও পাশা পোলস লিমিটেড ৭৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা দর উল্লেখ করে। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি লিমিটেডকে কাজটি দেয়।
লট-২–এর আওতায়ও খুঁটি কেনা হবে ২৪ হাজার ৩০০টি। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে ৭৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকায় চরকা এসপিসি পোলস লিমিটেড, দাদা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড, টিএসসিও পাওয়ার লিমিটেড এবং পাশা পোলস লিমিটেডের নাম সুপারিশ করে। এ লটেও বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি লিমিটেড অংশ নিয়েছিল। তবে তাদের দেওয়া দর ছিল কাজ পাওয়া কোম্পানিগুলোর চেয়ে তিন কোটি টাকা বেশি।
লট-৩–এর আওতায় খুঁটির পরিমাণ তিনটি কম, যা পরিমাণে ২৪ হাজার ২৯৭টি। পোলস অ্যান্ড কনক্রিট লিমিটেড, কনটেক কনস্ট্রাকশন লিমিটেড, রয়্যাল গ্রিন প্রোডাক্টস লিমিটেড এবং শেলটেক টেকনোলজি যৌথভাবে এ কাজ পেয়েছে ৭৬ কোটি ৬১ লাখ ৫৬ হাজার টাকায়।
এদিকে ‘ডিজিটাল সরকার ও অর্থনীতি শক্তিশালীকরণ (ইডিজিই)’ শীর্ষক প্রকল্পের দুটি লটে ১০৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ের একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি)। একটি লটের কাজ পেয়েছে থাকরাল ইনফরমেশন সিস্টেমস প্রাইভেট লিমিটেড। এতে ব্যয় হবে ৫১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। ইডিজিই প্রকল্পের লট-২–এর কাজ যৌথভাবে পেয়েছে ইএসএল ও ইউসিসিএল জেভি। এতে ব্যয় হবে ৫১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
এদিকে ক্রয় কমিটির বৈঠকের পাশাপাশি আজ আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থাপিত তিনটি প্রস্তাবই নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়। এর মধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ‘খানপুর ইনল্যান্ড কনটেইনার টার্মিনাল (আইসিটি) নির্মাণ’ প্রকল্পটি পিপিপি তালিকা থেকে প্রত্যাহার, বিদ্যুৎ বিভাগের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার টু সরকার (জি-টু–জি) চুক্তির আওতায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) ফার্টিগ্লোব ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়।