সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এখন আমাদের জীবনের অনুষঙ্গ হয়ে গেছে। বর্তমান সময়ে এর মধ্যে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যাই বেশি। কেবল সময় কাটাতে নয়, ব্যক্তিগত যোগাযোগসহ নানান গুরুত্বপূর্ণ কাজেও ব্যবহৃত হচ্ছে ফেসবুক। তাই ব্যবহারের পাশাপাশি এটির নিরাপদ সংরক্ষণও জরুরি।
যেহেতু ফেসবুক ব্যবহার করে অপরাধ করারও সুযোগ আছে, তার জন্য থাকা চাই বাড়তি সতর্কতা। কারণ নানান কৌশলে প্রতারণার ফাঁদ পাতছে প্রতারক চক্র। চক্রটি অ্যাকাউন্ট হ্যাক করেই অনাকাঙ্ক্ষিত বা অপরাধমূলক কিছু পোস্ট করে, যা আপনাকে বিপদ ও বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে ফেলে দেবে। অনেকে এর শিকার হচ্ছেন। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে পড়লে আপনি কী করবেন?
অ্যাকাউন্ট উদ্ধারের জন্য ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে বার্তা পাঠাবেন। কীভাবে বার্তা পাঠানো যায়, সেই অপশনগুলো ফেসবুকেই পাবেন। আর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাকড হলে বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে আপনাকে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। দ্রুত আপনি কাছের থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করুন। এই জিডি আপনাকে যেকোনো ঝামেলা এড়াতে আইনি সুরক্ষা দেবে। এখন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে হ্যাক হওয়া ফেসবুক আইডি উদ্ধার করবেন।
১. প্রথমেই এই লিঙ্কে যান http://www.facebook.com/hacked
২. একটি পেজ আসলে My account is compromised বাটনে ক্লিক করুন।
৩. এই পেজে হ্যাক হওয়া আইডির তথ্য চাইবে। তিনটি অপশনের যেকোনো একটির তথ্য দিন। এরপর সার্চ এ ক্লিক করুন-
৪. আপনার প্রদত্ত তথ্য সঠিক হলে আপনার আইডি দেখাবে। এবার This is My Account এ ক্লিক করুন। ক্লিক করার পর আপনার পুরাতন পাসওয়ার্ডটি চাইবে।
আপনার পুরাতন পাসওয়ার্ডটি দিয়ে Continue বাটনে ক্লিক করলে একটা কনফরমেশন মেসেজ দেওয়া হবে। একে একে পরের ধাপগুলো পার করুন।
সাধারণত পরের ধাপে আপনার কাছ থেকে একটা নতুন পাসওয়ার্ড চাওয়া হবে। পরের ফরমগুলো ঠিকঠাক পূরণ করলে আপনার ফেসবুক আইডি আবার ফেরত পেয়ে যাবেন।
আইনি সহযোগিতা নিন:
পুলিশের পরামর্শ অনুযায়ী এই ধরনের সাইবার ক্রাইমের ঘটনার শিকার হলে যত দ্রুত সম্ভব অভিযোগ জানানো উচিত। অভিযোগ করার ক্ষেত্রে আপনার অভিযোগের স্বপক্ষে কিছু তথ্য ও প্রমাণ সঙ্গে রাখা প্রয়োজন। যেমন: সাইবার ক্রাইমের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আলামতের স্ক্রিনশট, লিংক, অডিও/ভিডিও ফাইল অথবা সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র। স্ক্রিনশট সংগ্রহের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যেন অ্যাড্রেসবারের ইউআরএলটি দেখা যায়। এ ছাড়া পুলিশের ‘Hello CT’ অ্যাপ ও ই-মেইলের মাধ্যমে অভিযোগ জানাতে চাইলে এসব তথ্যপ্রমাণাদি সংযুক্ত করে আপলোড করা যাবে। সরাসরি দেখা করে অভিযোগ জানানোর ক্ষেত্রে সফট কপি দেয়া যেতে পারে। পরামর্শ নেয়া যেতে পারে সাইবার ক্রাইম ইউনিটের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের সঙ্গেও।
এ ছাড়াও সিসিটিসি’র সাইবার ক্রাইম বিভাগে নারীদের পরামর্শ দেয়া, মামলা তদন্ত ও সব প্রকার আইনি সহায়তা দেয়ার জন্য নারী পুলিশ ও রয়েছেন।
সমস্যা জটিল হলে আপনি সশরীরে ‘৩৬ শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী সরণি, রমনা, ঢাকা’ ঠিকানার ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ডিভিশনের সাইবার ক্রাইম ইউনিট বিভাগে সরাসরি চলে আসুন। যোগাযোগ করার জন্য প্রথমে উপরে উল্লিখিত নম্বরে ফোন দেয়ার পর পুলিশ সদর দপ্তরে সশরীরে যোগাযোগ করতে হবে।