কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। আহত হয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন অনেকে। কেউ হারিয়েছেন চোখের আলো, কেউ পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। এই আন্দোলনে পুত্র নিহতের খবর শুনে দেশে ছুটে আসেন ওমান প্রবাসী এক বাবা। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে অঝোরে কাঁদছেন আর প্রশ্ন করছেন তিনি, ওরা আমার একমাত্র ছেলেটাকে কেনো মারল? চিৎকার করে আল্লাহর কাছে পুত্র হত্যার বিচার চাইতে থাকেন তিনি। এ সময় বিদেশ থেকে আগত যাত্রীরা তাকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দেন।
সোমবার (২২ জুলাই) বেলা ৩টার দিকে বিমানবন্দরে এ হৃদয়বিদারক ঘটনার অবতারণা হয়। ফ্লাইট নামার পর যাত্রীরা ইমিগ্রেশনের জন্য লাইনে দাঁড়াচ্ছিলেন। ঠিক তখনই এক অসহায় বাবা চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করেন। জানা যায়, ওই ব্যক্তি ওমানের রাজধানী মাসকাট থেকে এসেছেন। তিনি ১০ বছর ধরে সেখানে কর্মরত আছেন।
তার কান্না দেখে শতশত মানুষজন জড়ো হন সেখানে। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলতে থাকেন, অনেক কষ্ট করে বিদেশে আয় করি। সেই অর্থ দিয়ে ছেলেকে পড়াশোনা করিয়েছি। অনেক আশা নিয়ে ছেলে লেখাপড়া করছিল। সেই ছেলেকে কেনো গুলি করে মেরে ফেলেছে?
প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গেল বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ওই দিন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। পরদিন শুক্রবার, শনিবার ও রোববার থেমে সংঘর্ষ চলে। এসব সংঘর্ষে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এ অবস্থায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শুক্রবার (১৯ জুলাই) মধ্যরাত থেকে দেশে কারফিউ জারি করেছে সরকার। বেসামরি প্রশাসনকে সহায়তা করতে মাঠে রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। ফলে পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে জনজীবন।