কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে ঢাকা মহানগরীতে সরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর, সহিংসতা ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, আমাদের হাতে আসা সিসিটিভি ফুটেজে কে কীভাবে আগুন লাগায় এবং মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।এ ঘটনায় জড়িত অনেকের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে।
বুধবার (২৪ জুলাই) বিকেলে মিন্টোরোডের গোয়েন্দা কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মহাখালী সেতু ভবনে ঢুকে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া ও লুটপাটের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার দুজন হলেন, জজ মিয়া (২৩), মো. রাকিব (২২)। মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) দিনগত রাতে মহাখালী থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আন্দোলনের নামে ঢাকা শহরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাট করা হয়েছে। মনোবল ভেঙে দেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা ও আহত করেছে। তথ্যপ্রযুক্তি ডাটা সেন্টারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। হামলার রসদ সরবরাহ করার তথ্য প্রমাণ আমাদের হাতে আছে। মহাখালীর সেতু ভবনে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির কিছু নেতা টাকা পয়সা দিয়ে সাততলা বস্তিসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন সংগ্রহ করেছে। এরপর মহাখালীতে জড়ো হয়ে ইটপাটকেল শুরু করে। পরবর্তীতে তারা সেতু ভবনে ঢুকে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং লুটপাট চালায়। আমাদের হাতে আসা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে তারা কীভাবে আগুন লাগায় এবং মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় জড়িত অনেকের নাম-পরিচয় পেয়েছি।
হারুন বলেন, গ্রেপ্তারদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাত বিএনপি ও জামায়াত নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তারা হলেন- ঢাকা উত্তর যুবদলের সাবেক সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর, বিএনপি নেতা বরকতুল্লা বুলুর ছেলে সানিয়াত বুলু, মহানগর দক্ষিণ বিএনপি সহ সভাপতি মোশারফ হোসেন খোকন ওরফে কাইল্লা খোকন, কৃষক দলের সহ সভাপতি নাসির উদ্দিন, ছাত্রদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান দয়াল, জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা এস এম কামাল উদ্দিন ও ভাটারা থানার আমির রেজাউল করিম।
জামায়াত-বিএনপি সরকারি স্থাপনাকে কেন টার্গেট করছে জানতে চাইলে হারুন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলছে। পুলিশকে হত্যা, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, ডাটা সেন্টার, বিটিভি, আমাদের গর্বের মেট্রোরেলে হামলা করেছে। সব জায়গায় গান পাউডার দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে। তারা ৭১ সালের মতো পুরোনো দিনে ফিরে গেছে। তারা চেয়েছিল সরকার উৎখাত করতে। দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলছে আর তারা ঢাকার বর্ডার এলাকায় ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা করেছে। আমরা সবার নাম-পরিচয় পেয়েছি। তারা কীভাবে কার মাধ্যমে গান পাউডার ও অস্ত্র এনেছে বের করা হবে।
তারা পুলিশ মারার জন্য ও আগুন দেওয়ার জন্যও টাকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। কে নির্দেশনা দিয়েছেন, কারা অর্থায়ন করেছেন সব বের করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন ডিবি প্রধান হারুন।