মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী হিসেবে দলের আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন গ্রহণ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মিলওয়াউকিতে দলীয় কনভেনশনের চতুর্থ দিনে এ মনোনয়ন গ্রহণ করেন তিনি। ঐক্যের ডাক দিয়ে ট্রাম্প তাঁর বক্তব্য শুরু করলেও কিছুক্ষণ পরই তিনি রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের নিয়ে আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিতে শুরু করেন।
কনভেনশনে দেওয়া বক্তব্যে ট্রাম্প তাঁর ওপর হওয়া সাম্প্রতিক হামলা নিয়ে কথা বলেন। বলেন, ‘আজ রাতে আমার এখানে থাকার কথা ছিল না।’ শান্ত কণ্ঠে ট্রাম্প তাঁর প্রাণে বেঁচে যাওয়াকে ‘অলৌকিক মুহূর্ত’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কৃপা আছে বলেই কেবল আমি এ জায়গায় আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছি।’
ট্রাম্প এদিন প্রায় ৯১ মিনিট ধরে বক্তব্য দিয়েছেন। বক্তব্যের শুরুতে তিনি বলেন, ‘গোটা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য আমি লড়ছি, অর্ধেক আমেরিকার জন্য নয়। কারণ, অর্ধেক আমেরিকার জন্য জয়ী হওয়াকে ঠিক বিজয় বলা যায় না।’
এ সময় উপস্থিত দর্শকেরা বলে ওঠেন, ‘ফাইট! ফাইট! ফাইট!’ (লড়াই! লড়াই! লড়াই!)
বক্তব্যের শুরুতে ট্রাম্প এমন ঐক্যের কথা বললেও কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর সুর পাল্টাতে থাকে। তিনি ন্যান্সি পেলোসিকে ‘উন্মাদ’ বলে উল্লেখ করেন। ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটরা কারচুপি করেছেন বলে অভিযোগ তোলেন ট্রাম্প। রিপাবলিকান এই নেতা বলেন, ‘নির্বাচনে এমন ফল আমরা আর কখনো হতে দেব না। তারা কোভিড নিয়েও প্রতারণা করেছে।’
সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে ১০ জন প্রেসিডেন্টের কথা ভাবুন। সবচেয়ে খারাপ ১০ জন। এরপর তাঁদের সবার কর্মকাণ্ড একসঙ্গে করে মূল্যায়ন করুন। দেখবেন, বাইডেন একাই যতটা ক্ষতি করেছেন, তাঁরা সবাই মিলেও ততটা ক্ষতি করতে পারেননি।’
এ সময় ট্রাম্প অঙ্গীকার করেন, বক্তব্যে তিনি প্রেসিডেন্টের নাম একবারই উচ্চারণ করবেন।
গত শনিবার পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের বাটলার এলাকায় ট্রাম্পের নির্বাচনী সমাবেশে হামলা হয়। সমাবেশস্থলের কাছে একটি একতলা ভবনের ছাদ থেকে মঞ্চ লক্ষ্য করে পরপর কয়েকটি গুলি করেন হামলাকারী। এতে ট্রাম্পের ডান কানের ওপরের অংশে ছিদ্র হয়ে যায়। এ হামলার ঘটনায় দর্শক সারিতে থাকা ফায়ার সার্ভিসের কর্মী কোরি কম্পারেটর গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। তিনি তাঁর পরিবারের সদস্যদের বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ হারান।
বৃহস্পতিবার কনভেনশনে কোরি কম্পারেটরের হেলমেটে চুমু খান ট্রাম্প। তিনি কোরির ইউনিফর্মটিও জড়িয়ে ধরেন।
বক্তব্যের একপর্যায়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি সেই মানুষ, যে কিনা দেশের জনগণের জন্য গণতন্ত্র রক্ষায় কাজ করছি।’
ট্রাম্প মূল্যস্ফীতি কমানো এবং প্রতিটি আন্তর্জাতিক সংকট নিরসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে এ ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা কী হবে, তা সুনির্দিষ্ট করে উল্লেখ করেননি।
নতুন করে ক্ষমতায় গেলে তেল উত্তোলনের জন্য খননকাজ চালাবেন এবং সীমান্ত বন্ধ করে দেবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প।