সারা দেশে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার ও কোটা প্রথার যৌক্তিক সমাধানের দাবিতে খুলনার তিনটি পয়েন্টে মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৭ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে মহানগরীর নতুন রাস্তা মোড়ে খুলনা-যশোর মহাসড়ক অবরোধ করে বিএল কলেজ, হাজী মুহাম্মদ মুহসীন কলেজসহ বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বেলা ১১টার দিকে শিববাড়ি মোড়ে খুলনা-যশোর মহাসড়ক, শিববাড়ি থেকে সোনাডাঙ্গা, ময়লাপোতা, রূপসা সড়ক অবরোধ করে নর্দান ইউনিভার্সিটি, মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা।
অপরদিকে একই দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) এর শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদী চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে নগরীর প্রবেশপথ জিরো পয়েন্ট মোড়ে অবস্থান করেন আন্দেলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে এসব সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এছাড়া আন্দোলন করছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলোজি খুলনাসহ অন্যান্য কলেজের শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, যৌক্তিক দাবি নিয়ে আমরা আন্দোলনে নেমেছি, ন্যায্য অধিকার চাওয়ায় সহপাঠীদের ওপর নির্মমভাবে হামলা চালানো হচ্ছে। গুলি করে ছাত্র মারা হয়েছে। এই হামলার বিচার আর আমাদের কোটা সংস্কারের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
‘আমার ভাইয়ের ওপর হামলা কেন প্রশাসন জবাব দে’, ‘ছাত্রলীগের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও, ‘দালালি না রাজপথে সংগ্রাম, রাজপথ রাজপথ’ চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার, ’কোটা দিয়ে বৈষম্য নয়, বৈষম্যমুক্ত দেশ চায়’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ ’আমার সোনার বাংলায় কোটা প্রথার ঠাঁই নাই’, ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তানুযায়ী সকল শিক্ষা কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। বুধবার বিকাল ৫টার মধ্যে ছাত্রদের এবং আগামীকাল ১৮ জুলাই (বৃহস্পতিবার) সকাল ১০.৩০ মিনিটের মধ্যে ছাত্রীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ৯২তম (জরুরি) সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল দাপ্তরিক কার্যক্রম যথারীতি চলমান থাকবে।
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এর সিন্ডিকেটের জরুরী সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষা কার্যক্রম ও আবাসিক হলসমূহ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। একই সাথে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে ১৭ জুলাই বুধবার সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে ছাত্রদের এবং ১৮ জুলাই বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার মধ্যে ছাত্রীদের আবাসিক হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।