সেই মার্করামের হাত ধরেই ফাইনালের স্বাদ পেল দক্ষিণ আফ্রিকা

সেই মার্করামের হাত ধরেই ফাইনালের স্বাদ পেল দক্ষিণ আফ্রিকা

সবকিছুই যেন একসঙ্গে মনে পড়েছে। বেরসিক বৃষ্টি , অ্যালান ডোনাল্ডের ভোলা মন, শন পোলকের অবিশ্বাসের ঘোরে থাকা সেই ছবি, শিশুদের মতো মরনে মরকেলের কান্না- এর বাইরেও আরও কত গল্প রয়েছে অনেকের।সেসবই দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠতে না পারার কাব্যের প্রচ্ছদ কেবল। নামের পেছনে লেগে গিয়েছিল চোকার্স তকমা। কিন্তু আজ সেগুলো মনে করে হৃদয় পুড়ছে না কারোর, বরং এসব ঝেরে ফেলার সময় এসেছে। সেটাই কি নয়! কেননা আফগানিস্তানকে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠল প্রোটিয়ারা। ওয়ানডেতেও যে স্বাদ আগে কখনো পায়নি তারা।

শন পোলক, গ্রায়েম স্মিথ, এবি ডি ভিলিয়ার্স, ফাফ ডু প্লেসিরাও যা পারেননি তা আজ করে দেখালেন এইডেন মার্করাম। তার অধিয়নায়কত্বেই নিজেদের ইতিহাসে প্রথম বিশ্বকাপ ফাইনালে নাম লেখাল দক্ষিণ আফ্রিকা। গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপে দলকে ফাইনালে নিয়ে যাওয়ার কাছাকাছিই ছিল তারা। কিন্তু সেবারও ফিরতে হয় সেমিফাইনাল থেকে। তবে নামটা মার্করাম বলেই হয়তো নতুন করে আস্থা খুঁজে পায় প্রোটিয়ারা। হতাশা ঝেরে ফেলে ঘুরে দাঁড়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য।

জাতীয় দল পর্যায়ে না হলেও বয়সভিত্তিক পর্যায়ে চ্যাম্পিয়নের তকমা আগেই পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০১৪ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছে তারা।  তখন সেই দলটির নেতৃত্বে ছিলেন এই মার্করামই। এবার তার কাঁধে ভর করেই নতুন করে স্বপ্ন বুনছে প্রোটিয়ারা। অপেক্ষা কেবল আর একটি জয়ের।

সেমিফাইনালে খুব একটা ঝামেলা পড়তে হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকাকে। তাদের পেস তোপের সামনে মাত্র ৫৬ রানেই গুটিয়ে যায় আফগানিস্তান। তাড়া করতে নেমে ৬৭ বল ও ৯ উইকেট হাতে রেখেই জিতে যায় প্রোটিয়ারা।  

মার্করাম অবশ্য ফাইনালে ওঠার কৃতিত্বটা নিজে না নিয়ে দিলেন পুরো দলকেই। ম্যাচশেষে ২৩ রানে অপরাজিত থাকা প্রোটিয়া অধিনায়ক বলেন, ‘ভালো লাগছে (ফাইনালে উঠে)। শুধু অধিনায়কের কারণে এতোদূর আসা যায় না, সেজন্য বিশাল দলীয় প্রচেষ্টা থাকতে হয়। একইসঙ্গে পর্দার আড়ালেও আছেন অনেকেই। ভাগ্য ভালো যে টস হেরেছি, নইলে আমরাও আগে ব্যাটিং নিতাম। বল হাতে দুর্দান্ত ছিলাম আমরা। বোলাররা আমাদের জন্য অবিশ্বাস্য কাজ করে দিয়েছে। এখানে ব্যাটিং করাটা চ্যালেঞ্জিং ছিল। ভাগ্য আমাদের পাশে ছিল এবং পরে আমরা একটি জুটি গড়তে পেরেছি। আমরা কিছু ম্যাচ কাছাকাছি থেকে শেষ করেছি। আনন্দিত যে, আজ সহজেই জিততে পেরেছি। ফাইনালে পৌঁছানোটা আমাদের জন্য একটা আরও একটি ধাপ মাত্র। এই সুযোগটি আমরা আগে কখনো পাইনি, ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এই জয় অনেক কিছুই বহন করে, আমাদের দলে কিছু বিশ্বমানের খেলোয়াড় আছে। কিন্তু যেটা আগেও বলেছি, এমন পারফরম্যান্স উপহার দেওয়ার জন্য পুরো দলীয় প্রচেষ্টা লাগে। ‘

গত বছরের মার্চেই টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্বের ভার তুলে দেওয়া হয় মার্করামের কাঁধে। দেড় বছর না যেতেই দলকে ইতিহাসের সর্বোচ্চ সাফল্য এনে দিলেন এই ক্রিকেট।  খুব আনন্দে না ভেসে মার্করাম অবশ্য পা মাটিতেই রাখছেন। কারণ তার কাজ যে এখনো শেষ হয়নি!

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS