যুক্তরাষ্ট্রে চলছে দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলের সবচেয়ে বড় মহারণ কোপা আমেরিকা। গেল আসরের ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার কাছে ফাইনালে ১-০ গোলে হেরে শিরোপা জয়ের স্বপ্নভঙ্গ হয় নেইমার-ভিনিসিয়ুসদের।তবে যে কোনো টুর্নামেন্টে ফেভারিট হিসেবে মাঠে নামে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। কোপা আমেরিকার এবারের আসরে ‘হট ফেভারিট’ হিসেবে নামবে কোচ দরিভাল জুনিয়েরের শিষ্যরা। কোপার মিশনে তারুণ্য নির্ভর দলেই আস্থা রাখতে চান বলে জানিয়েছেন ব্রাজিল কোচ।
গত জানুয়ারিতে ব্রাজিলের কোচ হন দরিভাল। এরপর থেকে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা মোট ম্যাচ খেলেছে চারটি। সেরা সাফল্য ছিল গত মার্চে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। তবে কোপা আমেরিকার ঠিক আগে খেলা দুটি ম্যাচ দলটির খেলায় ছিল না সেই ধার। মেক্সিকোর সঙ্গে ৩-২ গোলে জেতার পর যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ড্র করে ১-১ গোলে।
আগামীকাল সোমবার সকালে কোস্টারিকার বিপক্ষে ম্যাচকে সামনে রেখে সংবাদ সম্মেলনে দরিভাল দল নিয়ে তার চ্যালেঞ্জের দিকটি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমাকে এমন একটি দলের জন্য ভারসাম্য খুঁজে বের করতে হবে যে দলটি মাত্র তিন মাস আগে একত্র হয়েছিল। আর ১৫ বা ২০ দিনের কাজের একটি নির্দিষ্ট সময়ের পরে তাদের আবার নিজেদের খুঁজে বের করতে হবে। ফুটবলে আপনি অনুশীলনের সময়ের প্রস্তুতির ধাপগুলো এড়িয়ে যান না, কিন্তু সেই কারণেই আমরা তাদের সবাইকে এক সুতোয় বাঁধার চেষ্টা করি। ’
দরিভাল জানিয়েছেন ২০২৬ আমেরিকা বিশ্বকাপের আগে দলকে সার্বিকভাবে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনার প্রথম ধাপ হতে চলেছে চলতি কোপা। তিনি বলেন, ‘তারুণ্যে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ব্রাজিল দল গঠন করা হয়েছে, দলকে দক্ষ করে তুলতে ধাপে ধাপে এগোতে হবে। নতুনদের ফুটবল আমি উপভোগ করছি। ওদের মানসিকতা বুঝতে চাইছি। দুই বছর পরেই রয়েছে বিশ্বকাপ। তার আগে ব্রাজিল যাতে নিজেকে সবদিক থেকে তৈরি করে ফেলতে পারে, সে দিকে নজর রেখেই কোপা আমেরিকায় আমি কিছু বিষয় দেখে নিতে চাই। ’
ব্রাজিলের বর্তমান দলে বড় নাম ভিনিসিয়াস জুনিয়র। তাকে ঘিরেই আক্রমণ সাজাবেন বলে জানিয়েছেন কোচ। তিনি বলেন, ‘ভিনি কী মানের ফুটবলার, সেটা সকলে জানেন এবং রিয়ালের হয়ে তা প্রমাণ করেছে। রিয়ালের খেলার সঙ্গে ব্রাজিল ফুটবলের ধরনের বেশ সাদৃশ্য রয়েছে। তাই ভিনিকে নতুন করে কিছু বোঝানোর দরকার পড়বে না। আমি ভিনির মতো ক্ষিপ্র এবং তরতাজা ফুটবলার চাই, যে মাঠে নেমে প্রতিপক্ষকে ক্রমাগত চাপে রাখবে। ’
চোটের কারনে বর্তমানে দলের বাইরে আছেন নেইমার। তবে সুস্থ হলে দলে ফিরবেন কিনা জিজ্ঞেস করা হয় কোচ দরিভাল জুনিয়রকে। দরিভাল বলেছেন, ‘নেইমার ব্রাজিল ফুটবলের সম্পদ। তবে এখন চাই বড়মাপের একটা পরিবর্তন এবং সংস্কারের। সেখানে নেইমারকে বাদ দিয়ে নতুন মুখদের নিয়েই আমাকে কৌশল ঠিক করতে হবে। এই মুহূর্তে নেইমার আমার ভাবনায় নেই। ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে হারানো গৌরব ফেরাতে হলে নতুন কিছু নিয়ে ভাবতে হবে। এই তরুণ ব্রাজিলের প্রতি অগাধ আস্থা রয়েছে আমার। ’
ম্যাচ শুরুর বেশ আগেই একাদশ ঘোষণা করে দিয়েছেন দরিভাল। সেখানে জায়গা মেলেনি তরুণ সেনসেশন এন্দ্রিক। চোটের কারণে নেইমার না থাকার পাশাপাশি ব্রাজিলের জার্সিতে এই বছর রিয়াল মাদ্রিদের এই স্ট্রাইকারের যে ফর্ম, তাতে অনেকেই তাকে দেখছিলেন শুরু একাদশে।
কিন্তু সেটা কেনো হচ্ছে না প্রথম ম্যাচে? দরিভাল এর কারণও বলেছেন। তিনি বলেন, ‘এটি (এন্দ্রিকের শুরুর একাদশে জায়গা করা) এমন কিছু যা স্বাভাবিকভাবেই ঘটবে। এটা হতে বেশি সময় নাও লাগতে পারে, কারণ খেলোয়াড় হিসেবে সে বেশ দক্ষ। আমি তাকে মাঠে নামানোর জন্য তাড়াহুড়ো করছি, তবে আপনাকে একটি নির্দিষ্ট ভারসাম্যও ধরে রাখতে হবে। তার দুর্দান্ত দক্ষতা রয়েছে এবং সে এই সময়ের সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিশীল খেলোয়াড়। ’
কোস্টারিকার বিপক্ষে ব্রাজিল একাদশ: আলিসন, দানিলো, এদের মিলিতাও, মারকিনিওস, গিলেরমে আরানা, ব্রুনো গিমারেস, জোয়াও গোমেস, লুকাস পাকেতা, রাফিনিয়া, রদ্রিগো ও ভিনিসিয়ুস জুনিয়র।