কেমন হবে শিশুর শয্যা

কেমন হবে শিশুর শয্যা

শরীর ও মনের সার্বিক সুস্থতায় পর্যাপ্ত ঘুমের গুরুত্ব অপরিসীম। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে প্রতি দিন অন্তত ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন ঘুমের প্রয়োজন।তবে শিশুদের ঘুমের চাহিদা একটু বেশি। পর্যাপ্ত ঘুম শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

বিছানা, বালিশ, পাশ বালিশ, বাম্পার প্যাড, সুতি চাদর, নরম সুতি কাপড়ের কাঁথা, রেসলিং, ম্যাট্রেস, বেবি কট, মশারি, কিছু নিরাপদ খেলনা। বেবি কটে প্রয়োজন ছাড়া শিশুকে রাখা ঠিক নয়। মায়ের কাছে বেশি নিরাপদ নবজাতক। বাচ্চাদের জন্য নরম ও আরামদায়ক বিছানা প্রয়োজন।

শিশুকে বিছানায় ডানে বা বায়ে কাত করে শুইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে। চিত করে শুইয়ে দেওয়া যাবে না। শিশু নিজে নিজেই উপুড় হয়ে যাচ্ছে কি না সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। চিত বা উপুড় অবস্থায় শিশুর দম আটকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

বিছানার ম্যাট্রেস যেন ছেঁড়া বা উঁচু-নিচু না থাকে। শিশুর শয্যার আশপাশে বই, খেলনা, বাড়তি কাঁথা-কাপড় রাখা যাবে না। এ জাতীয় জিনিসে শিশু ব্যথা পেতে পারে, দম আটকে যেতে পারে। শয্যার আশপাশে এমন কিছু রাখা যাবে না, যাতে শিশুর দৃষ্টি ও বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।

মাথার বালিশ শিশুর উপযুক্ত মাপের হতে হবে। পাতলা সুতি কাপড় পেঁচিয়েও গোল করে মাথার বালিশ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। নবজাতকের মস্তিষ্ক এবং হাড় গঠনে নরম সুতি কাপড় খুবই সহায়ক। তুলা কিংবা ফোমের বালিশ পাশ বালিশ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। বালিশের কাভারটাও হতে হবে পাতলা সুতি কাপড়ের। ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে দেবেন। মশার সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে কয়েল কিংবা স্প্রে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।

কেমন বিছানা কিনবেন

ভূমধ্যসাগরীয় বিছানা, লজ, প্যাস্টেল ডেনিশ, কাঠের, প্লাস্টিকের, কাপড়ের তৈরি বিভিন্ন ধরনের বিছানা পাওয়া যায় বাজারে। এদের মধ্যে ভূমধ্যসাগরীয় বিছানা সাধারণত উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য উপযুক্ত। এটি বাঁশের তৈরি সুন্দর নকশার। লজ ও প্যাস্টেল ডেনিশ হলো উন্নত ও বিলাসবহুল বিছানা। কাস্টমাইজড নানা বিছানা কিনতে পাবেন বাজারে। এগুলোর সঙ্গে জিপার যুক্ত থাকায় সহজেই খোলা এবং আটকানো যায়। কিছু বিছানায় শিশুকে শুইয়ে সহজেই কোলে নিতে পারবেন আপনি।

শয্যা হবে আরামদায়ক

শিশু তার নিজের জায়গায় কতটা স্বাচ্ছন্দ্য ও আরাম বোধ করে সেটাই সব থেকে বড় বিষয়। এ জন্য বিছানায় তুলার ম্যাট্রেস ব্যবহার করতে পারেন। তবে খুব নরম না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ম্যাট্রেসের আকার বেবি কটের রেলিংয়ের ফাঁকা অংশ সঠিক মাপের হতে হবে। ম্যাট্রেস ছোট হলে ফাঁকা অংশে শিশুর হাত, পা, আঙুল আটকে যেতে পারে। আর রেলিংয়ের ফাঁকা বেশি হলে শিশুর মাথা ঢুকে বিপজ্জনক অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।

বিছানা বেশি নরম নয় 

নরম বিছানা শিশুর ঘুমের জন্য নিরাপদ নয়। অনেক অভিভাবকই শিশুর শয্যার জন্য নরম বালিশ ও কম্বলের ব্যবস্থা করে থাকেন, কিন্তু এতে শিশুর ঝুঁকি থাকে। তারা নরম বিছানার ব্যবস্থা করেন। শয্যার পাশে নরম বাম্পার প্যাড বা কম্বল দিয়ে থাকেন যাতে খাটের রেলিংয়ে শিশুর মাথা ও পা আঘাত না পায়। এতে আরও হিতেবিপরীত হতে পারে। শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। মনে রাখবেন, শিশুরা যেকোনো জায়গায়ই ভালো ঘুমাতে পারে। শক্ত বিছানায়ও তারা অনেক ভালো ঘুমায়।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS