রমজানের ২৫ তারিখ পর্যন্ত ৫৯৫ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রির ঘোষণা দিয়েছিলেন রাজধানীর উত্তর শাহজাহানপুরের ব্যবসায়ী খলিলুর রহমান। তবে ১০ রমজান শেষ না হতেই তিনি মাংসের দাম এক লাফে ১০০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন।বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সকাল থেকেই ৬৯৫ টাকা দরে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে খলিল গোস্ত বিতানে।
যদিও খুচরা বাজারে ৬৬৪ দশমিক ৩৯ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি করতে হবে বলে সরকারের নির্দেশনা রয়েছে। তবে সেই বেঁধে দেওয়া মূল্যের চেয়ে খলিল বর্তমানে প্রায় ৩০ টাকা বেশিতে মাংস বিক্রি করছেন।
শুক্রবার (২২ মার্চ) সরেজমিনে রাজধানীর খিলগাঁও ফ্লাইওভার সংলগ্ন উত্তর শাহজাহানপুরের খলিল গোস্ত বিতানে গিয়ে দেখা যায়, দুপুরের দিকে খলিলের দোকানের সামনে ক্রেতারা দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে মাংস কেনার জন্য অপেক্ষা করছেন। দূরদূরান্ত থেকে অনেকে এসেছেন মাংস কিনতে। তবে মাংসের দাম বেড়ে ৬৯৫ টাকা হওয়ায় এসব ক্রেতারা এক প্রকার হতাশা প্রকাশ করেছেন।
রোজা শুরুর পর গত ১৫ মার্চ গরুর মাংসসহ ২৯টি পণ্যের পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। এতে বলা হয়েছে, প্রতি কেজি গরুর মাংসের উৎপাদন খরচ ৫৮৭ দশমিক ৫০ টাকা। উৎপাদক পর্যায়ে তা বিক্রি করতে হবে ৬০৫ দশমিক ১৩ টাকায়, পাইকারিতে ৬৩১ দশমিত ৬৯ টাকা এবং খুচরা বাজারে বিক্রি করতে হবে ৬৬৪ দশমিক ৩৯ টাকায়।
কিন্তু মাংস ব্যবসায়ীদের অনেকে এটি মানছেন না। কোনো কোনো দোকানি ৭০০ কিংবা ৭৫০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি করেছেন। এর বিপরীতে দাঁড়িয়ে খলিল গোস্ত বিতানে গরুর মাংস বিক্রি হতে থাকে ৫৯৫ টাকায়। যে কারণে সেখানে ক্রেতাও ছিল অনেক বেশি। এজন্য শহরজুড়ে আলোচনায়ও ছিলেন খলিল।
তবে সেই অবস্থান থেকে সরে গিয়ে এবার তিনিও দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। খলিলুর রহমানের দাবি, ভারত থেকে গরু আমদানি বন্ধ থাকায় এবং হাটে গরুর দাম বেশি হওয়ায় মাংসের মূল্য কেজিতে ১০০ টাকা বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।
মোবাইল ফোনে কল করা হলে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, হাটে গরুর দাম এতটা বেড়েছে যে দোকানের কর্মচারীদের খরচ দিয়ে ৫৯৫ টাকায় মাংস বিক্রি করে লাভ করা যাচ্ছে না। যে কারণে দাম বাড়াতে হয়েছে। দেশে যদি ভারতীয় গরু আমদানি হতো তাহলে মাংসের দাম কমানো সম্ভব ছিল।
এদিকে হঠাৎ করে খলিলের দোকানে মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা এক প্রকার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন। দক্ষিণ বনশ্রী এলাকা থেকে পারিবারিক অনুষ্ঠানের জন্য খলিলের দোকান থেকে কম মূল্যে মাংস কিনতে আসেন মো. শাহজাদা। দাম বাড়ার বিষয়টি তিনি জানতেন না। যে কারণে তিনি মাংসের দাম বৃদ্ধি দেখে এক প্রকার হতাশ হয়েছেন।
মো. শাহজাদা বাংলানিউজকে বলেন, খলিলের দোকানে মাংসে হাড়-চর্বি সব কিছু একসঙ্গে মেশানো থাকে। দাম কম থাকা অবস্থায় এই মাংস নিতে তেমন কোনো আপত্তি ছিল না। তবে দাম বেড়ে প্রায় ৭০০ মূল্যে বিক্রি করা এই ধরনের মাংস কিনে পোষায় না। যদিও পারিবারিক অনুষ্ঠানের জন্য এখন এক প্রকার বাধ্য হয়েই মাংস নিতে হচ্ছে। এখান থেকে যে পছন্দ করে মাংস কিনব সেই সুযোগ পাচ্ছি না। তার ওপর আবার দীর্ঘ লাইন। এরপর থেকে এলাকায় মাংস কিনব। এলাকায় ৭২০ টাকার মাংস পাওয়া যায়, সেখানে নিজের পছন্দমত মাংস নেওয়া যায়।