গত বছরের মতো এবারও পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে ভোক্তাদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে ভোগ্যপণ্য বিক্রি শুরু করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এভারকেয়ার হাসপাতাল সংলগ্ন গেটের সামনে সাশ্রয়ী দামে এই ভোগ্যপণ্য বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধন করেন বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফিয়াত সোবহান।
‘পবিত্র রমজানজুড়ে, সাশ্রয়ী মূল্যে বসুন্ধরার পণ্য, ভোক্তার জন্য’ স্লোগানকে সামনে রেখে এই বছর ট্রাক সেলের মাধ্যমে ৩১টি পণ্য বিক্রি করছে বসুন্ধরা গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের (সেক্টর-এ) চিফ হিউম্যান রিসোর্স অফিসার ক্যাপ্টেন (অব.) শেখ এহসান রেজা, বসুন্ধরা গ্রুপের (সেক্টর-এ) ব্র্যান্ড অ্যান্ড মার্কেটিং সিওও এম. এম. জসীম উদ্দিন, বসুন্ধরা গ্রুপের (সেক্টর-এ) সাপ্লাই চেইন ডিভিশনস সিওও আব্দুস শুক্কুর, বসুন্ধরা গ্রুপের বসুন্ধরা ফুড ডিভিশনসের চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার বেলাল হোসেন, বসুন্ধরা গ্রুপের (সেক্টর-এ) প্ল্যানিং এবং পাবলিক রিলেশন্সের হেড অব স্ট্র্যাটেজি জাকারিয়া জালাল, বসুন্ধরা গ্রুপের ফুড ডিভিশনস অ্যান্ড এলপিজির হেড অব সেলস রেদোয়ানুর রহমান।
এসময় রেদোয়ানুর রহমান বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের স্লোগান হলো, দেশ ও মানুষের কল্যাণে। প্রতি বছর রমজান এলে দেশের বাজারে এক প্রকার মূল্যবৃদ্ধির অস্থিরতা শুরু হয়। এর থেকে মানুষকে স্বস্তি দিতে গত বছর থেকে এই ট্রাক সেল কার্যক্রম চালু করা হয়েছিল। গত বছর নয়টি বিভাগীয় শহরে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছিল। এবারই প্রথম ঢাকার ছয় এলাকা ও ১৪ জেলা শহরসহ মোট ২০টি স্থানে এই কার্যক্রম সম্প্রসারিত হয়েছে। ঢাকার মধ্যে সচিবালয়ের সামনে, কারওয়ান বাজারের টিসিবি ভবনের সামনে, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, মোহাম্মদপুরের লিমিটেড এলাকা, মিরপুর ও উত্তরা বিজিবি মার্কেটের সামনে একযোগে চালু হয়েছে এ কার্যক্রম।
তিনি বলেন, এই পণ্যগুলো এমআরপি (মোড়কের মূল্য) থেকে ছাড়ে সাশ্রয়ী মূল্যে পাবেন ভোক্তারা। এই বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ভোক্তা অধিদপ্তর বসুন্ধরা গ্রুপকে অনেক উৎসাহ দিয়েছে এবং সহযোগিতা করেছে। বসুন্ধরা গ্রুপের এই কার্যক্রম ঈদ উৎসবকে সামনে রেখে রমজান মাসজুড়ে থাকবে। আর সামনে কোরবানির ঈদেও এই কার্যক্রম চলবে।
রেদোয়ানুর রহমান বলেন, এই ট্রাক সেলে সবাইকে একটি বিষয়ে অনুরোধ করা হচ্ছে যে, কেউ যেন অধিক পণ্য (মজুতের উদ্দেশ্যে) এখান থেকে না কেনেন। যেন অন্য আরেক ভোক্তাকে আমরা কেনার সুযোগ করে দিতে পারি।
বসুন্ধরা গ্রুপের ফুড ডিভিশনস অ্যান্ড এলপিজির হেড অব সেলস রেদোয়ানুর রহমান আরও বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান এই ট্রাক সেল কার্যক্রমের উদ্বোধনে এসে বলেছেন, এবার এই কার্যক্রম ২০টি স্থানে হলেও আগামী বছর থেকে ৬৪টি জেলায় একযোগে এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখব। আমরা অনেক জায়গা থেকে শুনতে পাই, আমাদের পণ্যগুলো ভোক্তা পর্যায়ে যেতে যেতে দাম অনেক বেড়ে যায়। সেটা যেন বাড়তে না পারে সেজন্য ৬৪ জেলায় একযোগে এই কার্যক্রম চালু করব।
যেসব স্থানে বসুন্ধরার এ কার্যক্রম
এ বছর রাজধানীর ছয়টি স্থানে ও রাজধানীর বাইরে ১৪টি জেলায় ট্রাক সেলের মাধ্যমে সাশ্রয়ীমূল্যে পণ্য বিক্রি করছে বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ। রাজধানীর ছয় স্থান হলো- সচিবালয়ের সামনে, কারওয়ান বাজারের টিসিবি ভবনের সামনে, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এভারকেয়ার হাসপাতাল সংলগ্ন ফটক, মোহাম্মদপুরের লিমিটেড এলাকা, মিরপুর ও উত্তরা বিজিবি মার্কেটের সামনে।
ঢাকার বাইরে গাজীপুরের জয়দেবপুর, নারায়ণগঞ্জের সদর, ময়মনসিংহের বিদ্যাময়ী স্কুল গেইট, নরসিংদীর বেলানগর, টাঙ্গাইলের নিরালা মোড়, কুমিল্লার কান্দিরপাড়, চট্টগ্রামের সিএনবি কলোনি মোড়, সিলেটের বন্দরে, বগুড়ার সাতমাথা জিলা স্কুল গেইট, রাজশাহীর আলুপট্টি মোড়, রংপুরের পাবলিক লাইব্রেরি গেইট, খুলনার ডাকবাংলা মোড়, ফরিদপুরের চকবাজার হেলিপ্যাড ও বরিশালের চৌমাথা হাতেম আলী কলেজের সামনে এই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
যেসব পণ্য পাচ্ছেন ভোক্তারা
এ বছর ট্রাক সেলের মাধ্যমে এক লিটার সয়াবিন তেল ১৬৩ টাকার পরিবর্তে ১৫৫ টাকা, দুই লিটার সয়াবিন তেল ৩২৬ টাকার পরিবর্তে ৩১০ টাকা, তিন লিটার সয়াবিন তেল ৪৮৮ টাকার পরিবর্তে ৪৬৫ টাকা, পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল ৮০০ টাকার পরিবর্তে ৭৬৫ টাকা, আট লিটার সয়াবিন তেল ১২৮০ টাকার পরিবর্তে ১২২৫ টাকা, এক লিটার সরিষার তেল ৩৬০ টাকার পরিবর্তে ২৬৫ টাকা, এক কেজি আটা ৬৫ টাকার পরিবর্তে ৪৮ টাকা, এক কেজি ময়দা ৭৫ টাকার পরিবর্তে ৬০ টাকা, ২৫০ গ্রাম সুজি ২৫ টাকার পরিবর্তে ২০ টাকা, এক কেজি মসুর ডাল ১৫০ টাকার পরিবর্তে ১৪০ টাকা, এক কেজি চিনিগুঁড়া চাল ১৮০ টাকার পরিবর্তে ১৪১ টাকা, ২০০ গ্রাম সেমাই ৩০ টাকার পরিবর্তে ২৫ টাকা, ২০০ গ্রাম লাচ্ছা সেমাই ৫০ টাকার পরিবর্তে ৩৫ টাকা, ইনস্ট্যান্ট মাসালা নুডলস (৮ প্যাক) ১৪০ টাকার পরিবর্তে ১১০ টাকা, ১৫০ গ্রাম স্টিক এগ অ্যান্ড চিকেন নুডলস ২৫ টাকার পরিবর্তে ২২ টাকা, ৩০০ গ্রাম পান্ডা অথেনন্টিক চাইনিজ নুডলস ৬০ টাকার পরিবর্তে ৪৮ টাকা, ২০০ গ্রাম সি-শেল পাস্তা ৫০ টাকার পরিবর্তে ৩৭ টাকা, ২০০ গ্রাম ম্যাকারনব অ্যাসরটেড ৪৫ টাকার পরিবর্তে ৩৫ টাকা, ৫০০ গ্রাম হলুদের গুঁড়ার প্যাকেট ২৪০ টাকার পরিবর্তে ১৭৫ টাকা, ৫০০ গ্রাম মরিচের গুঁড়ার প্যাকেট ৪১০ টাকার পরিবর্তে ৩১৫ টাকা, ৫০০ গ্রাম ধনিয়ার গুঁড়ার প্যাকেট ২৪০ টাকার পরিবর্তে ১৭৫ টাকা, ৫০০ গ্রাম জিরার গুঁড়ার প্যাকেট ৯০০ টাকার পরিবর্তে ৭৭৫ টাকা, ২০০ গ্রাম হালিম মিক্স ৫৫ টাকার পরিবর্তে ৫০ টাকা, ১০০ গ্রাম মুরগির মসলা ৭৮ টাকার পরিবর্তে ৬২ টাকা, ৪০ গ্রাম বিরিয়ানির মসলা ৬০ টাকার পরিবর্তে ৫০ টাকা, ১০০ গ্রাম গরুর মাংসের মসলা ৮৪ টাকার পরিবর্তে ৭০ টাকা, ৫০ গ্রাম কাবাব মসলা ৯০ টাকার পরিবর্তে ৭০ টাকা, ৫০ গ্রাম বোরহানি মসলা ৪০ টাকার পরিবর্তে ৩০ টাকা, ৫০ গ্রাম চটপটি মসলা ৪০ টাকার পরিবর্তে ৩২ টাকা, ২০০ গ্রাম বসুন্ধরা চা (প্রিমিয়াম) ১১০ টাকার পরিবর্তে ৮০ টাকা, ১০০ গ্রাম বসুন্ধরা প্রিমিয়াম টি ব্যাগ ৯০ টাকার পরিবর্তে ৬৫ টাকায় বিক্রি করছে প্রতিষ্ঠানটি।