সপ্তাহ বা মাসে এক দিন আলমারি গোছানো যতটা না কঠিন, প্রতিদিন গুছিয়ে রাখা তার চেয়ে ঢের কঠিন নিঃসন্দেহে। প্রতিদিন কাপড় বের করা, কাপড় খোঁজা, পছন্দ–অপছন্দ সব মিলিয়ে আলমারি গুছিয়ে রাখা বেশ কষ্টের কাজ। গোছালেই তো নষ্ট হয়ে যাবে, এমন ভেবে অনেকে ঠিকমতো গোছাতেও চান না। ভাবেন, যেভাবে আছে থাকুক। এতে অবশ্য সমস্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়। প্রয়োজনের সময় পছন্দের জামাকাপড় খুঁজে পাওয়া যায় না। কাপড়ের আলমারি গুছিয়ে রাখতে না পারার কিছু কারণ আছে, সেসব জেনে রাখুন। কারণগুলো জানা থাকলে সমাধানও বের করতে পারবেন।
ধরা যাক, অনলাইনে অর্ডার করে সুন্দর একটা টপস কিনেছেন। ট্রায়াল দিয়ে দেখলেন, বেশ মানিয়েছে। এরপর কী করবেন? ভাঁজ করে আলমারিতে সাজিয়ে রাখবেন। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু দুই দিন পর যখন টপস খুঁজে বেড়াচ্ছেন, সারা আলমারি তন্ন তন্ন করেও সেটা আর পাচ্ছেন না। কেন? কারণ, টপসটা রেখেছিলেন শাড়ির সঙ্গে। শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে কোথায় হারিয়ে লুকিয়ে আছে, জানা নেই। আলমারিতে জামাকাপড় সারিবদ্ধ করে না রাখলে এমন বিপত্তি বেশ স্বাভাবিক। আলমারির হাজারো জামাকাপড়ের ভিড়ে কাঙ্ক্ষিত জামাটি হারিয়ে যেতে পারে সহজেই। তাই আলমারিতে ক্যাটাগরি করে জামাকাপড় সাজিয়ে রাখুন। এতে খুঁজে পাওয়া সহজ হবে।
পছন্দ হলেই এটা–সেটা কেনার অভ্যাস কিংবা বদভ্যাস আছে অনেকের। অগোছালো আলমারির এটাও একটা কারণ। এভাবে দেদার কেনাকাটার ফলে একটার পর একটা জামাকাপড় জমতে থাকে আলমারিতে। প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় জামাকাপড় পড়ে যায় নিচে বা পেছনে। ফলে প্রয়োজনের সময় খুঁজে পাওয়া আরও কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে। ফলে যে জামাকাপড়গুলো পুরোনো হয়ে গেছে কিংবা নষ্ট, তা আলমারি থেকে সরিয়ে অন্য কোথাও রাখুন। এতে অতিরিক্ত জামাকাপড় আলমারি থেকে দূর হয়ে যাবে।
বর্তমানে বেশির ভাগ মানুষই রেডিমেড আলমারি কেনেন। দামে কম, মানেও ভালো—সব মিলিয়ে মানুষের পছন্দের তালিকায় ঠাঁই পাচ্ছে এ ধরনের আলমারি। এতে প্রয়োজন মেটানো সম্ভব হলেও দেখা যায় জায়গার স্বল্পতা। আলমারিগুলো বানানো হয় নির্দিষ্ট শ্রেণির প্রয়োজন মাথায় রেখে। সবার আলমারিতে তো আর সবকিছুর প্রয়োজন নেই। ফলে দেখা যায়, রেডিমেড আলমারি কেনা হলেও তার বেশির ভাগ জায়গাই অপচয় হয় সঠিক ব্যবহারের অভাবে।
বেশির ভাগ সময় রেডিমেড আলমারিগুলোর ভার্টিক্যাল স্পেস বা লম্বালম্বি জায়গা ঠিকমতো ব্যবহার করা হয় না। ফলে আলমারি বিশাল হলেও সঠিক ব্যবহারের অভাবে আলমারি হয়ে থাকে অগোছালো।
সব জামাকাপড়ই যে ভাঁজ করে রাখলে ভালো থাকবে, তেমনটা নয়; বরং কিছু কিছু জামাকাপড় ভাঁজ না করে ঝুলিয়ে রাখলেও ভালো থাকে এবং আলমারির জায়গা অনেকটা বেঁচে যায়। শার্ট ও পাঞ্জাবিজাতীয় জামাকাপড় ভাঁজ করে রাখতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন অনেকে। এতে আলমারির জায়গার অপচয় হয়। ঝুলিয়ে রাখলে বরং তা কাপড়ের জন্য যেমন ভালো, জায়গারও অপচয় হয় না।
কাজের ব্যস্ততায় বা সময়ের অভাবে অনেকেই শুকানো কাপড় স্তূপ করে সরাসরি আলমারিতে রেখে দেন। যাতে ধোয়া কাপড়গুলো একত্রে খুঁজে পাওয়া যায়। কিন্তু এতে আরও বিপত্তি বাড়তে পারে। বিভিন্ন ধরনের কাপড় একসঙ্গে থাকলে তা হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায় অনেক গুণ।
তথ্যসূত্র: রিয়েল সিম্পল