বিপিএলে ফরচুন বরিশালকে চ্যাম্পিয়ন করার পর তামিম ইকবাল বলেছিলেন, জাতীয় দলে ফিরতে হলে অনেক কিছু ঠিক হতে হবে। তার এমন কথা হজম করতে পারছেন না বোর্ড পরিচালক ও সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন।জাতীয় দলের হয়ে খেলতে শর্ত কেন লাগবে, এমন প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
গত রোববার তৃতীয়বারের মতো বিসিবির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন তামিম। যদিও তাকে নিয়ে ধোঁয়াশা এখনো বিদ্যমান। তবে সবকিছু বিসিবিই পরিষ্কার করবে বলে জানিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে জানালেন নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকার কথা।
তামিমের শর্ত কী, সেটা জানেন না সুজন। আজ মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে পারটেক্সের বিপক্ষে আবাহনীর ম্যাচের পর তিনি বলেন, ‘দেখুন, তামিমের অভিজ্ঞতা নিয়ে, পারফরম্যান্স নিয়ে কারও তো কোনো কথা নেই। মিডিয়ায় আমিও শুনি। তামিমের সঙ্গে আমার কথা হচ্ছে অনেক দিন ধরে। এবারের বিপিএলে তামিমের সঙ্গে আমার শুধু হাত মেলানো হয়েছে খেলা শেষে। ওইভাবে বসে কথা হয়নি। আমি বলতে পারব না ও কী চাচ্ছে, কী চাচ্ছে না। যেহেতু ও বিশেষভাবে প্রেসিডেন্ট স্যারের সঙ্গেই বসতে চাচ্ছে, এখানে আমার কথা না বলাই ভালো। ’
সুজনের মতে, জাতীয় দল সবার ঊর্ধ্বে। তাই শর্ত দিয়ে খেলার কথা শুনতেই তার খারাপ লাগছে। তিনি বলেন, ‘কথা বলুক, কেন খেলতে চাচ্ছে না, কী হলে খেলবে, এটা ওর প্রেসিডেন্ট স্যারকে পরিষ্কার করাটাই ভালো। এটার মধ্যে আমাদের থার্ড পারসন না যাওয়াটাই ভালো। আমরা সবাই চাই, তামিম ফিরে আসুক। খেলতে চাইলে অবশ্যই খেলবে। কিন্তু শর্ত দিয়ে খেলবে, এই কথাটা শুনতে যেন কেমন শোনায়। আমি জাতীয় দলের হয়ে খেলব। দেশ, জাতীয় দল— এসব অনেক আগে, অনেক ঊর্ধ্বে। এখানে আসলে শর্ত থাকবে কী থাকবে না, এই কথাটা শুনতেই খারাপ দেখায়। ’
তামিমকে এখনো বাংলাদেশের প্রয়োজন বলে মনে করেন সুজন, ‘তামিম এত বছর বাংলাদেশ দলকে সার্ভিস দিয়েছে, ওকে আমাদের প্রয়োজন। টিম, সিলেক্টররা আছেন, তারা যদি মনে করেন তামিমকে আমাদের প্রয়োজন…অবশ্যই তামিমকে আমাদের প্রয়োজন। দরকার হলে খেলবে। কিন্তু সেটা কোনো কিছুর বিনিময়ে বা কোন শর্তে, সেটা কতটা যৌক্তিক, আমি নিজেও বলতে পারব না। ’
‘আমি মূলত কোনো মন্তব্যই করতে চাই না এই বিষয়টা নিয়ে। অবশ্যই তামিম বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একজন খেলোয়াড়। সেটা বোর্ডই সিদ্ধান্ত নেবে। ও যেহেতু বলেছে বোর্ডের সঙ্গে বসবে। পাপন ভাই (নাজমুল হাসান) যেহেতু কথা বলতে চেয়েছেন। পাপন ভাই সিরাজ ভাই ও জালাল ভাইকে সেই দায়িত্বটা দিয়েছেন। কোনটা ঠিক সময়ে বলবে, কখন বলবে, কখন তাদের সময় হয় বসার, এত দিন সময় লাগছে কেন—কারণ, সবাই তো আমরা বাংলাদেশেই থাকি। সেই সময়টাই–বা কেন হচ্ছে না, সেটা আমি জানি না। ’
গত জুলাইয়ে আফগানিস্তান সিরিজের মাঝপথে আচমকা অবসর ঘোষণা দেন তামিম। তবে পরদিনই প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে জাতীয় দলে ফেরার ঘোষণা দেন তিনি। কিন্তু বিশ্বকাপ দলে ডাক পাননি এই ওপেনার।
তামিম ইস্যুর দ্রুত ইতি দেখতে চেয়ে সুজন আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, যত তাড়াতাড়ি বসে একটা সুরাহা করা যাবে…এটা এমন একটা ব্যাপার যে প্রতিদিন টক অব দ্য টাউন হয়ে যাচ্ছে। আমি মনে করি, বাংলাদেশ ক্রিকেট এই সবকিছুর ঊর্ধ্বে। ’