আন্তর্জাতিক নারী দিবস প্রতি বছর মার্চ মাসের ৮ তারিখে পালিত হয়। সারা বিশ্বব্যাপী নারীরা একটি প্রধান উপলক্ষ্য হিসেবে এ দিবস উদযাপন করে থাকেন।বিশ্বের একেক প্রান্তে নারী দিবস উদযাপনের প্রধান লক্ষ্য একেক রকম হয়। কোথাও নারীর প্রতি সাধারণ সম্মান ও শ্রদ্ধা উদযাপন মুখ্য বিষয় হয়, আবার কোথাও নারীদের আর্থিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠাটি বেশি গুরুত্ব পায়।
এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে ৮ মার্চকে নারী দিবস হিসেবে পালন করে আসছে সারাবিশ্বের মানুষ।
ইব্রাহিমপুরে চৈতী টেইলার্সে কাজ শিখতে আসা শিল্পী দাস সরকার ( ৪০) তিনি বাংলানিউজকে জানান, নারী দিবস সম্পর্কে আমার ভালো ধারণা নেই, তবে এতটুকু বলতে পারি আমরা নারীরা পরিবারের কাছে সমাজের কাছে এখনো অনেকভাবে অবহেলিত। স্বামী চাকরি করে উপার্জনের টাকা আমাদের কতটুকু দেয় বাচ্চাদের কতটুকু দেয়। আমরা তো ছেলেমেয়েদের সব অধিকার পূরণ করতে পারি না।
আমার দুটি ছেলে তারা স্কুলে পড়াশোনা করছে, আমার স্বামী অসুস্থ নানা ধরনের রোগে ভুগছেন তার চাকরিও নেই, কিছুই করতে পারেন না। এখন আমাকে এ ৪০ বছর বয়সে সংসারের হাল ধরতে হলো এর আগে কখনো আমি কাজ করিনি কীভাবে আমি চলবো।
এ নারী দিবস পালন করে কি হবে, আমার বাচ্চাদের পড়াতে গেলে যে খরচ, স্কুলে যে খরচ ক্লাসে কতটুকু শিখতে পারে তাদের কোচিং দিতে হয়, সেখানে অনেক টাকার প্রয়োজন, সংসারে তো নুন আনতে পান্তা ফুরায়। সংসার ঠিক রাখতেই জীবনের হিমশিম অবস্থা।
রাজধানীর মিরপুর ১৪ নম্বর কাফরুল থানার ইব্রাহিমপুর মুন্সিবাড়ি রোডে চৈতী টেইলার্সের ফেরদৌসী বেগম (৫০) বাংলানিউজকে বলেন, আমার গ্রামের বাড়ি পাবনায়, ৩০ বছর আগে স্বামীর সঙ্গে ঢাকায় এসেছিলাম ছেলেমেয়েদের নিয়ে সংসার জীবনে ভালোই ছিলাম, স্বামীর চাকরি ছিল পাশাপাশি টেইলারিং পেশায় নিযুক্ত ছিলেন। বিগত তিন চার বছর আগে স্বামী গুরুতর অসুস্থ হয়ে যাওয়ার কারণে এখন কোনো কাজ করতে পারেন না।
এমনকি চোখে দেখতে পারেন না। তাই এ শেষ বয়সে আমাকে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে দুটি মেয়ে কলেজে পড়ে, কি করে সংসার চালাবো চরম হতাশার মধ্যে দিন যাচ্ছে। নারী দিবসে প্রধানমন্ত্রীসহ বিশ্ব নেত্রীদের কাছে আমার একটি দাবি আমাদের মতো অবহেলিত নারীদের যদি একটু সহযোগিতা করতেন তাহলে আমরা সন্তানদের মানুষ করতে পারতাম। এছাড়া নারী দিবসে আর বলার কিছু নেই।