ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নগরে হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে।
সংগ্রাম পরিষদের দাবি, তাদের মিছিলে অতর্কিত হামলা চালানো হয়েছে।আর সিএনজি (থ্রি-হুইলার) চালক-শ্রমিকদের দাবি ওই মিছিল থেকে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে যানবাহনও ভাংচুর করা হয়েছে।
এ ঘটনায় সিএনজি চালকরা সড়ক অবরোধে করার পাশাপাশি বিক্ষোভ মিছিল করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন।
জানা গেছে, শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় নগরের অশ্বিনী কুমার হলচত্বরে ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদের এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। তারা সদর রোড অবরোধ করে। যদিও অল্প সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে পুলিশ।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগ্রাম পরিষদের বরিশাল জেলার সভাপতি দুলাল মল্লিক। বক্তব্য দেন সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা ও বাসদ বরিশাল জেলা শাখার সমন্বয়কারী ডা. মনীষা চক্রবর্তী, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন খোকন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বরিশাল জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, সংগ্রাম পরিষদের ১৩ নং ওয়ার্ড শাখার সভাপতি শহিদুল শেখ, ৩ নং ওয়ার্ড শাখার সভাপতি মনির সর্দার প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
কর্মসূচি শেষে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বরিশাল জেলার দপ্তর সম্পাদক শহিদুল ইসলামের পাঠানো এক বার্তায় জানানো হয়, নগর ভবনের মোড় থেকে মিছিলটি যাওয়ার সময় একটি পালসার মোটরসাইকেল প্রচণ্ড গতিতে মিছিলের মধ্যে শ্রমিকদের গায়ে উঠে যায় ও কিছু অজ্ঞাতপরিচয় লোক মিছিলে ঢুকে শ্রমিকদের ওপর হামলা করে ও আশেপাশে গাড়িতে ও আঘাত করে। পরে শ্রমিকরা ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। নেতৃবৃন্দ সংগ্রাম পরিষদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে এই অতর্কিত হামলার তীব্র নিন্দা জানান ও তদন্তসাপেক্ষে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
যদিও ঘটনাস্থলে থাকা সিএনজি (থ্রি-হুইলার) চালক জুয়েল হাওলাদার জানিয়েছেন, ডা. মনীষা চক্রবর্তীসহ নেতাকর্মীরা তাদের মিছিল নিয়ে নগরভবনের সামনে থেকে যাওয়ার সময় বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল। তখন মিছিলের পেছনের দিকে থাকা লোকজন সড়কে চলাচলরত সবুজ ও নীল রং সিএনজি গাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায় এবং চালকদের মারধর করে।
সিএনজি (থ্রি-হুইলার) চালক নাছির হোসেন জানান, মনীষা চক্রবর্তী, জামাল গাজীর নেতৃত্বে মিছিল যাওয়ার সময় ট্রাফিক পুলিশ আমাদের গাড়িগুলোকে সিগনাল দিলে সেগুলো সেখানেই থামিয়ে রাখা হয়। কিন্তু তারপরও আকস্মিক আমাদের ওপর হামলা চালানো হয় এবং ৪-৫টি গাড়ির গ্লাস ভাংচুর করা হয়।
সিএনজি চালক-শ্রমিক নেতাদের দাবি, তাদের বেশ কয়েকজন চালককে মারধরসহ বেশ কয়েকটি সিএনজি গাড়ি ভাংচুর করা হয়। এ ঘটনা জানতে পেরে নগরের সিএনজি চালকরা সবাই নগর ভবনের সামনে এসে গাড়ি চালনা বন্ধ করে দেয় এবং হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে। পরে তারা কোতায়ালি মডেল থানায় গেলে পুলিশ হামলার ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
চালক ইমনসহ বিক্ষোভকারীরা জানান, সিএনজিচালিত সব অটোরিকশা বিআরটিএর অনুমোদন নিয়ে ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়ে শহরে চলাচল করে, আর অটোরিকশা, ব্যাটারিরিকশার কোনো বৈধতা নেই। তা নিয়ে কিছু লোক দাপট দেখায়, আর সে কারণে অবৈধ হয়েও বৈধ গাড়ি ভাংচুর করেছে। আমরা এর বিচার চাই, সেইসাথে কোন অবৈধ গাড়ি সড়কে চলতে না দেওয়ার দাবি জানাই।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিচুল হক জানিয়েছেন, ব্যাটারিচালিক থ্রি-হুইলার সরকারি অনুমোদন না পাওয়ায় তারা তা নিয়ে সড়কে বিক্ষোভ করছিল। যাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করা হয়েছে, তবে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটতে পারে। আর সিএনজি থ্রি-হুইলারদের সঙ্গে তাদের একটি দ্বান্দ্ব থাকতে পারে। যে কারনে দু’গ্রুপ মুখোমুখি। দুপক্ষকেই ডেকে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে। আর এ বিষয়ে কেউ আইনের আশ্রয় নিতে চাইলেও তা দেখা হবে।