এই পথ যদি না শেষ হয়—–

এই পথ যদি না শেষ হয়—–

কবি বিনয় মজুমদার বলেছিলেন, ‘মানুষ নিকটে গেলে প্রকৃত সারস উড়ে যায়। ’ প্রতিটি সম্পর্কেই এমন একটি সময় আসে যখন মানুষ হাঁপিয়ে ওঠে।

যেভাবে সম্পর্কে ছন্দ আনতে পারেন-

ডিভাইস দূরে রাখুন
প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহার আমাদের সম্পর্কগুলোকে যান্ত্রিক করে তুলছে। বাড়িয়ে দিচ্ছে দূরত্ব।

অন্তত সঙ্গীর সঙ্গে কাটানো মুহূর্তে ডিভাইসগুলো দূরে রাখুন। আপনার পূর্ণ মনোযোগ আপনার সঙ্গীর প্রাপ্য। কিন্তু প্রায়ই আমরা এটি ভুলে যাই। সঙ্গীর সঙ্গে কথা বলার সময় ফোন, ল্যাপটপ, অন্য ডিভাইসে মগ্ন হয়ে পড়ি। এতে সে তার প্রতি মনোযোগের অভাব খেয়াল করে। জরুরি মেসেজ বা মেইল চেক করার দরকার হলে তার অনুমতি নিন।  

ঘুরতে যান
একঘেয়েমি কাটিয়ে তুলতে সঙ্গীকে নিয়ে ঘুরতে বেড়িয়ে পড়ুন। দৈনন্দিন সংগ্রাম, সাংসারিক ঝামেলা, মানসিক চাপ একদিকে রেখে সপ্তাহে অন্তত একদিন সঙ্গীকে নিয়ে চলে যান শহর থেকে দূরে কোথাও। সম্ভব হলে কয়েকদিনের ছুটি নিন। একে অপরের সঙ্গে মন খুলে কথা বলুন। একান্তে সময় কাটান। সুন্দর মুহূর্তগুলো সেলফি বন্দি করে রাখুন।  

চিঠি লিখুন
দাম্পত্যে ছন্দ ফেরাতে, উচ্ছলতা ধরে রাখতে ছোট্ট একটি চিরকুটই যথেষ্ট। প্রিয় মানুষের ভালোবাসা, আবেগের মূল্য দিতে সুন্দর হাতের লেখা কিংবা রঙিন কাগজের দরকার নেই। ছোটখাটো অনুভূতি, মিস করা, ভালোবাসার কথাগুলো ইচ্ছে হলেই লিখে ফেলুন।

স্পর্শের অনুভূতি বুঝুন
অনেকেই আছেন সম্পর্কের স্পর্শগুলোকে ততটা গুরুত্ব দেন না। ‘স্পর্শ’ মানে শুধু যৌনতা নয়। প্রেমময় স্পর্শ সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করে। বিশ্বাস বাড়ায়। মুখোমুখি বসে হাতে হাত রেখে কথা বলুন। কখনো নির্জনে কাঁধে হাত রেখে হাঁটুন। একজন আরেকজনের মাথা টিপে দিলে ক্ষতি কি! ভালোবাসা বাড়বে বৈ কমবে না।  

শখের মিল খুঁজুন
ব্যক্তি যেহেতু আলাদা, দুজনের পছন্দও ভিন্ন হবে এটাইতো স্বাভাবিক। কিন্তু এমন কিছু শখের বিষয় থাকে যা দুজনেরই পছন্দের। কেরাম কিংবা লুডু খেলুন। হতে পারে কবিতা, বই, সিনেমা দেখা। খুঁজে বের করুন কোন কোন বিষয়গুলো দুজনেরই ভালোলাগে।  

সারপ্রাইজ দিন
বাসায় গিয়ে দেখলেন আপনার ড্রয়ারে নতুন একটি মোবাইল ফোন। তাও আবার মনে মনে যেটা কিনবেন বলে ঠিক করে রেখেছেন, সেই মডেলটাই! এ যেন খুশিতে মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়া অবস্থা! সারপ্রাইজ কার না ভালো লাগে ম্যারেজ ডে-তে ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা’র দু’টি এয়ার টিকেট কেটে ফেলুন। সঙ্গীকে জানান ঠিক আগ মুহূর্তে। এমন সব আনন্দঘন মুহূর্ত সেই সব সুখী জুটিদের জন্য, যারা একে অপরকে সারপ্রাইজ দিতে জানে। সঙ্গীকে চমক দিলে, ফিরতি চমকে, চমকে যাবেন আপনিও।

নিজেকে সময় দিন
সম্পর্ক মানে একজন আরেকজনকে কী দিলো, কতটুকু পেলো নাকি পেলো না, শুধু এসবের হিসাবনিকাশ নয়। সম্পর্ক মানে প্রত্যেকেই আলাদা আলাদাভাবে কেমন বোধ করছেন সেটা। নিজেকে সময় দিন। মনে রাখবেন, নিজের সঙ্গে নিজের ভালো বোঝাপড়া মানেই সঙ্গীর সঙ্গে ভালো বোঝাপড়া।

এসবের বাইরেও ভাবুন
আপনার সঙ্গীকে আপনিই ভালো বোঝেন। ভালো চেনেন। তাই পরামর্শ নেওয়ার থেকে নিজেরাই ঠিক করুন কেমন জীবন চান। দাম্পত্য বলুন আর সম্পর্ক বলুন, আন্তরিক হওয়াটা খুব জরুরি। মন থেকে ভালোবাসুন। সবার আগে শুধরে নিন নিজেকে। সম্পর্কের প্রতি সৎ ও শ্রদ্ধাশীল থেকে গলা মিলিয়ে গেয়ে উঠুন ‘এই পথ যদি না শেষ হয়…। ’

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS