দীর্ঘদিন উচ্চমূল্যে স্থিতিশীল থাকার পর ফের অস্থির হয়ে উঠেছে চালের বাজার। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও রাজধানীর পাইকারি বাজারে চিকন ও মোটা চালের দাম বস্তাপ্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, বাবুবাজার ও বাড্ডা বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
সরেজমিনে বাজার ঘুরে দেখা যায়, রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও নতুন ও পুরনো চাল বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে মোটা ও চিকন চাল কেজিতে বেড়ে গেছে চার থেকে ছয় টাকা। মোটা চাল ব্রি-২৮ মানভেদে কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। খুচরা বাজারে চিকন চালের মধ্যে মিনিকেট মানভেদে কেজিপ্রতি ৭০ থেকে ৭৮ টাকা ও নাজিরশাইল মানভেদে ৭০ থেকে ৮৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
এ বিষয়ে চাল ব্যবসায়ী ও চালকলের মালিকরা বলছেন, কৃষকের কাছ থেকে মিল মালিকরা এবার বাড়তি দামে ধান কিনেছেন। এতে তারা নতুন করে কিছুটা দাম বাড়িয়ে বাজারে চাল ছাড়ছেন।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, মিলারদের কারসাজিতে চালের বাজার নতুন করে অস্থির হয়ে উঠেছে। নানা অজুহাতে চালকল মালিকরা দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। এতে পাইকারি ও খুচরা বাজারেও চালের দাম বেড়ে যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারওয়ান বাজারের চালের এক পাইকারি ব্যবসায়ী বলেন, নির্বাচনের এক দিন পর মিলাররা হঠাৎ কারসাজি করে চালের দাম বস্তায় ২৫০ টাকার বেশি বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। এতে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়েও চালের দাম বেড়েছে। সাধারণত যখন চালের দাম বাড়ে, তখন এক লাফে বস্তাপ্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা করে বাড়ে। কিন্তু এবার এক লাফে বস্তাপ্রতি প্রায় ৩০০ টাকার মতো বাড়িয়ে দিয়েছেন মিলাররা।
এ ব্যাপারে বাবুবাজারের চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বাড়তি দামে ধান কিনতে হয়েছে মিলারদের। এতে চালের দাম বাড়তি। মিলাররা বস্তাপ্রতি চাল ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন।
বাড্ডা বাজারে চাল কিনতে আসা এক ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমন মৌসুম শেষ হতেই চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বাজারে সব পণ্যের দাম কয়েক দফা বাড়লেও চালের দাম কিছুটা স্থিতিশীল ছিল। নতুন করে চালের দাম বাড়ায় ক্রেতাদের জন্য বাড়তি চাপ হয়ে গেল। বাজারে সরকারের নজরদারি নেই বলেই ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট চালের দাম বাড়াতে সাহস পাচ্ছে।