বদলে যাওয়া লাইফস্টাইলের কারণে আমাদের জীবনে অন্য জটিলতার পাশাপাশি ব্যাপকহারে ডায়াবেটিস বেড়ে যাচ্ছে। একে আয়ত্বে রাখার জন্য প্রথমেই ভাবতে হবে খাবারের কথা। কারণ পথ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
বাংলাদেশের ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ. কে. আজাদ খান বলেন, ডায়াবেটিস আছে এমন রোগীদের অন্তত ৫০ শতাংশ জানেন না যে, তার ডায়াবেটিস আছে। অন্য কোন রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে গিয়ে তাদের রোগটি ধরা পড়ে। এ কারণে ডায়াবেটিস সম্পর্কে সবার সচেতনতা বৃদ্ধি খুব জরুরি।
একটা বিরাট অংশের ডায়াবিটিস রোগী কিন্তু ব্লাড সুগারকে কিছুতেই কন্ট্রোলে রাখতে পারেন না। আর এই কারণেই তারা ক্রনিক কিডনি ডিজিজ থেকে শুরু করে রেটিনোপ্যাথি, নিউরোপ্যাথির মতো জটিল সব অসুখের ফাঁদে পড়েন। তাই তো বিশেষজ্ঞরা ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে হাতের কাছে মজুত থাকা কয়েকটি সবজি। তাই এই অসুখকে বশে রেখে সুস্থ-সবল জীবন কাটানোর ইচ্ছে থাকলে পুষ্টিবিদদের পরামর্শ মতো এই ৫ সবজিকে ডায়েটে যুক্ত করে দিন, যা আপনার সুস্থ থাকার পথ প্রশস্থ করবে।
১. ঢ্যাঁড়শ-
এই সবজিতে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি, ফলিক অ্যাসিডের ভাণ্ডার যা কি না শরীরের জন্য খুবই উপকারী। শুধু তাই নয়, ঢ্যাঁড়শের ক্যালোরি ভ্যালুও খুবই কম। এমনকী এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটরি ফাইবার। তাই নিয়মিত ঢ্যাঁড়শ খেলে সহজেই ব্লাড সুগারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
২. লাউ-
আমাদের হাতের কাছে মজুত থাকা অত্যন্ত উপকারী একটি সবজি হলো লাউ। কারণ এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভাণ্ডার। শুধু তাই নয়, এই সবজির ক্যালোরি ভ্যালু কম, ফ্যাট প্রায় নেই বললেই চলে। তার বদলে এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার মজুত রয়েছে যা কি না সুগার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাই রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে এই সবজি যুক্ত করুণ খাবারের তালিকায়।
৩. করলা-
ব্লাড সুগারকে বিপদসীমার নীচে নামিয়ে আনার ইচ্ছে থাকলে আপনাকে নিয়মিত করলা খেতেই হবে। আসলে এইসব সবজিতে রয়েছে চ্যারানটিন নামক একটি ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট যা রক্তে শর্করার মাত্রাকে নিম্মমুখী করার কাজে কার্যকর। শুধু তাই নয়, দেহে ইনসুলিন হরমোনের কার্যক্ষমতা বাড়ানোর কাজেও এর জুড়ি মেলা ভার। তাই ডায়াবিটিস রোগীর প্রতিদিনের ডায়েটে করলা থাকাটা জরুরি। এই কাজটা করতে পারলেই আপনার একাধিক ওষুধের প্রতি নির্ভরশীলতা কমে যাবে।
৪. গাজর-
এই সবজিতে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন কে, ভিটামিন বি৬, ফোলেট, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়ামের মতো একাধিক জরুরি ভিটামিন ও খনিজ। তাই তো সুস্থ-সবল জীবন কাটানোর ইচ্ছে থাকলে প্রতিদিন গাজর খেতেই পারেন। শুধু তাই নয়, এই সবজিতে রয়েছে বেশকিছুটা পরিমাণে ইনসলিউবল ফাইবার যা কিনা ব্লাড সুগারকে নিয়ন্ত্রণে আনার কাজে সাহায্য করে। তাই ডায়াবিটিস রোগীরা যত দ্রুত সম্ভব এই সবজির সঙ্গে বন্ধুত্ব করে নিন।
৫. ক্যাপসিকাম-
জানলে অবাক হবেন, এই সবজিতে রয়েছে বেশ কিছু অ্যান্টিডায়াবিটিক উপাদান যা কি না রক্তে শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার কাজে বেশ কার্যকরি। তবে এখানেই শেষ নয়, এতে রয়েছে এ, বি, সি, কে এবং ডায়েটরি ফাইবারের খনি। আর এই সমস্ত উপাদান এক সঙ্গে ডায়াবিটিস রোগীর শরীরের সুস্থতা এনে দিতে পারে।