ভারতীয় ধনকুবের আদানি গোষ্ঠীর বিভিন্ন ব্যবসায়িক অনিয়ম তদন্তের জন্য যুগ্ম সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) গঠনে আবারও দাবি জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। আজ বৃহস্পতিবার মুম্বাইয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র পক্ষে এ দাবি জানান তিনি। এ সময় তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের ‘দ্য গার্ডিয়ান’ ও ‘দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমস’ পত্রিকায় আদানি গোষ্ঠী নিয়ে যে প্রতিবেদন বেরিয়েছে, তা নিয়ে নতুনভাবে তদন্ত করা দরকার। এটা এই মুহূর্তে ইন্ডিয়ার দাবি।
সংবাদ সম্মেলনে রাহুল বলেন, ‘এই প্রতিবেদন দেশের ভাবমূর্তিকে সরাসরি প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। প্রশ্নবিদ্ধ করেছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও। তাঁর নাম করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাঁরই ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি এর সঙ্গে জড়িত। তিনি বলেন, জি–২০ সম্মেলনে যোগদানকারী দেশের নেতারাও এই প্রশ্ন তুলবেন। আমাদের উচিত দেশের সম্মান রক্ষা করা।’
ব্রিটিশ সংবাদপত্র দুটি আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার কেলেঙ্কারি–সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনটি ‘অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্টের’ (ওসিসিআরপি) তদন্তের ওপর তৈরি। সেই তদন্তে প্রকাশিত, আদানি পরিবারের ঘনিষ্ঠরা গোপনে নিজেদের গোষ্ঠীর শেয়ার কিনে দাম বাড়িয়েছেন।
রাহুল বলেন, এভাবে সম্পত্তি বাড়িয়ে ১০০ কোটি ডলার বিদেশে নিয়ে গিয়ে সেই অর্থ ঘুরপথে দেশে এনে আদানি গোষ্ঠী বাণিজ্য করেছে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ কিনেছে। সবকিছু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশ্রয়ে হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রধানমন্ত্রীর উচিত নিজেকে এই অপবাদ থেকে মুক্ত করা। এবং সে জন্য অবিলম্বে জেপিসি গঠন করা দরকার।
কংগ্রেসের এই নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী সব জানেন। তাই যখনই আদানি প্রসঙ্গ ওঠে, তিনি বিব্রতবোধ করেন। আদানি ও মোদির সম্পর্কটা কী তা স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন। রাহুল এই অভিযোগও করেন, আদানি সম্পর্কে তদন্ত করে তাঁকে ক্লিনচিট দিয়েছে ভারতের শেয়ার বাজারের নিয়ন্ত্রক ‘সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড’ (সেবি)। যিনি তদন্ত করেছিলেন, তিনিই আবার আদানি গোষ্ঠীর সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভির পরিচালক পদে যোগ দিয়েছেন।
প্রতিবেদনে আদানি গোষ্ঠীর দুই বিদেশি কর্মকর্তার নাম রয়েছে। তাঁদের একজন চীনা নাগরিক বলে রাহুলের দাবি। সেই ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতা নিয়েও রাহুল প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, চীনা নাগরিকের ভূমিকা কী তা তদন্ত করা দরকার। কারণ, আদানি গোষ্ঠী ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবসার সঙ্গেও যুক্ত।