তাইওয়ান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চীন ও পাশ্চাত্যের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। তাইওয়ানকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য চীন সক্রিয়ভাবে একটি আগ্রাসী পন্থা অনুসরণ করছে। এমন সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ৪০০টি ধ্বংসাত্মক ক্ষেপণাস্ত্র কিনতে যাচ্ছে তাইওয়ান। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের হুমকির মুখে যুক্তরাষ্ট্রের ৪০০ টি হারপুন ক্ষেপণাস্ত্র কিনবে তাইওয়ান। তাইওয়ানের ক্ষেপণাস্ত্র ক্রয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে বাণিজ্য গোষ্ঠীর এক নেতা এ তথ্য জানিয়েছে।
গত ৭ এপ্রিল মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পেন্টাগন ৪০০টি জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র কেনার জন্য ১ দশমিক ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি ঘোষণা করে। দপ্তরটি জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর উৎপাদন ২০২৯ সালের মার্চের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, তাইওয়ান এই ক্ষেপণাস্ত্রের ক্রেতা। পেন্টাগন অবশ্য এই চুক্তির বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন চলতি মাসে যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন।
এ সময় তিনি ক্যালিফোর্নিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এবং সেই বৈঠকে প্রেসিডেন্ট সাই চীনের ক্রমবর্ধমান হুমকির মুখে তাইওয়ানে অস্ত্র সরবরাহ ত্বরান্বিত করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছিলেন।
বৈঠক শেষে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির হাউস সিলেক্ট কমিটির রিপাবলিকান চেয়ারম্যান মাইক গ্যালাঘার জানান, সৌদি আরব সফরের আগে তাইওয়ানকে হারপুন অ্যান্টি-শিপ ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের উপায় খুঁজে বের করতে চান তিনি।
এর আগে ২০২০ সালে তাইওয়ান জানায়, সামরিক আধুনিকায়ন প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তারা বোয়িংয়ের তৈরি হারপুন স্থল-ভিত্তিক জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র কেনার পরিকল্পনা করছে।
এদিকে, তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সান লি ফাং ক্ষেপণাস্ত্র কেনার বিষয়ে জানান, ক্ষেপণাস্ত্র কেনার তথ্য আগেই প্রকাশ করা হয়েছিল। এ সময় তিনি আশা প্রকাশ করেন, নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী চুক্তি হবে।
১৯৪৯ সালে চীনে কমিউনিস্টরা ক্ষমতা দখলের পর থেকে তাইওয়ান মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তারপর থেকে তাইওয়ান তার নিজস্ব সরকার দ্বারা পরিচালিত হয়।
যাইহোক, বেইজিং সবসময় তাইওয়ানকে তার নিজস্ব একটি প্রদেশ হিসেবে বিবেচনা করে। অন্যদিকে, তাইওয়ান নিজেকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র বলে মনে করে। তাইওয়ানের মতে, দেশটির ভবিষ্যত তার জনগণের হাতে থাকবে।