ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় ছাগল চুরির অভিযোগে এক মাদ্রাসাছাত্রকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রভাবশালী হওয়ায় থানায় অভিযোগ দিতে পারছে না বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার আংগারিয়া খানবাড়িতে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার কিশোরের নাম মো. শামিম হাওলাদার (১৭)। সে দারুলহুদা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্র এবং দক্ষিণ আংগারিয়া এলাকার মো. ফারুক হাওলাদারের ছেলে। সে পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালায়।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গত বুধবার আংগারিয়া এলাকার আমজেদ খানের ছেলে রফিক খানের একটি ছাগল চুরি হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় মুজাহার খানের ছেলে বেল্লাল খানকে সন্দেহ করেন তিনি।
তবে ঘটনা ভিন্ন খাতে নিতে স্থানীয় মনু খানের ছেলে মো. শফিক ও মুজাহার খানের তিন ছেলে দুলাল খান, বেল্লাল খান ও সোহেল খান মাদ্রসাছাত্র শামিমকে ধরে নিয়ে একটি গাছের সঙ্গে পিছমোড়া করে হাত বাঁধেন। এ সময় চুরি ঘটনা স্বীকার করাতে শামিমকে নির্যাতন করেন তাঁরা। খবর পেয়ে রাজাপুর থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেয়।
ভুক্তভোগী শামিম হাওলাদার প্রথম আলোকে বলে, লেখাপড়ার পাশাপাশি ইজিবাইক চালিয়ে সংসারের খরচ জোগায় সে। গতকাল দুপুরে মো. শফিক, দুলাল খান, বেল্লাল খান ও সোহেল খান ইজিবাইক থামিয়ে তাকে ধরে নিয়ে যান। এরপর শফিকের বাড়ির পাশে একটি গাছের সঙ্গে হাত পিছমোড়া করে বেঁধে বেধড়ক মারধর করেন।
শামিমের বাবা মো. ফারুক হাওলাদার বলেন, নির্যাতনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিতে সাহস পাচ্ছেন না তাঁরা।
ছাগলের মালিক রফিক খান বলেন, ছাগল চুরির ঘটনায় শামিম জড়িত নয়। অভিযোগ অস্বীকার করে মো. শাফিক ও বেল্লাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘মারামারির কথা শুনেছি। পরে পুলিশ এসে শামিমকে উদ্ধার করেছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দিয়েছে। ওই সময় আমরা বাড়িতে ছিলাম না।’
রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলক চন্দ্র রায় প্রথম আলোকে বলেন, ওই কিশোরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে তাকে গাছের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।