ওঝা দিয়ে ঝাড়ফুঁক করেও ইভিএমে ভূত-প্রেত পাওয়া যায়নি: সিইসি

ওঝা দিয়ে ঝাড়ফুঁক করেও ইভিএমে ভূত-প্রেত পাওয়া যায়নি: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘ইভিএমের পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে। অনেকে এর ভেতরে ভূত-প্রেত অনেক কিছু থাকার কথা বলেছেন। আমরা খুঁজতে গিয়ে কিছু পাইনি। অনেক ওঝা দিয়ে ঝাড়ফুঁক করেও কোনো রকম ভূত-প্রেত পাওয়া যায়নি।’

শনিবার দুপুরে সিলেট শহরের জালালাবাদ গ্যাস অ্যান্ড টিঅ্যান্ডডি সিস্টেম লিমিটেডের সম্মেলনকক্ষে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

সভায় মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিভিন্ন পরামর্শ, অভিযোগ ও আশঙ্কার কথা শোনেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘কেউ যদি ভোট দিতে গিয়ে দেখেন তাঁর ভোট অন্য কেউ দিয়ে দিয়েছেন, তবে যাঁরা ‘মিডিয়া’ (গণমাধ্যমকর্মী) তাঁদের চিৎকার দিয়ে জানাবেন, ‘‘আমি গিয়েছিলাম, আমার ভোট আমি দিতে পারিনি।” যদিও এমন ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ যখন ব্যালট ওপেন হবে, তখন আমরাও সেটি পর্যবেক্ষণ করব সিসিটিভির মাধ্যমে। এরপরও যদি কেউ মনে করেন, তিনি তাঁর ভোটটি দিতে পারেননি, সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার দিয়ে জানাবেন, আমরা সেটি আমলে নেব।’

ইভিএম প্রসঙ্গে সিইসি আরও বলেন, ‘আমরা প্রচলিত যে সিস্টেম, তাতে দেখেছি কোনোভাবেই একজনের ভোট আরেক জায়গায় যায় না, যায় না, যায় না। সেই নিশ্চয়তা দিতে চাই। ১০০ পেজের একটি ব্যালট ছিনিয়ে নিয়ে সিল মারতে পারেন, কিন্তু ইভিএমে কোনোভাবেই তা সম্ভব না। ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে ব্যালট ওপেন করতে হয়।’
সিলেট সিটি নির্বাচনে সব ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা থাকবে জানিয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘কেন্দ্র থেকে সেগুলো পর্যবেক্ষণ করা হবে। আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ এলে প্রার্থিতা বাতিল হবে। আপনারা এমন কিছু করবেন না, যাতে প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায়।’

প্রচারণায় পলিথিনের ব্যবহার থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে সিইসি বলেন, পুলিশ চাইলে পলিথিনে মোড়ানো ব্যানার-পোস্টার ছিঁড়ে ফেলতে পারে। আর এটা একটা বৈশ্বিক সমস্যা। তাই সবাইকে সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এই জিনিসটা করা যাবে না। ভবিষ্যতে প্রচারণার ধরন পাল্টে যেতে পারে। এটা সময়ের প্রয়োজনে হয়ে যাবে। তথ্যপ্রযুক্তি এতে যোগ হবে। প্রার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা চালাবেন।

সিলেটে এক কাউন্সিলর প্রার্থীর অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়া বিষয়ে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে। তিনজনকে পুলিশ গ্রেপ্তারও করেছে। ফিরে গিয়ে আমরা নির্বাচন কমিশনে বসে প্রার্থিতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার ইলিয়াছ শরীফ, জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান, সিলেট জেলার পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন, সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদের।

সভায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাহমুদুল হাসান, জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলমসহ অন্য মেয়র, কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিল প্রার্থীরা প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS