হঠাৎ গলায় কোনো কিছু আটকে গেলে তা বের করে আনার প্রাথমিক চেষ্টা বাড়িতেই হতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তি যদি কথা বলতে পারেন, ভালোভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে পারেন, কাশতে পারেন, তাহলে আটকে থাকা জিনিসটি জোরে কাশি দিয়ে বের করে ফেলতে উৎসাহিত করুন। তবে যদি তাঁর কথা আটকে যায়, তিনি কাশতে না পারেন, কিংবা শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে অসুবিধা হয়, সে ক্ষেত্রে হেইমলিক ম্যানুভারের (গলায় কিছু আটকে শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা হলে তার প্রাথমিক চিকিৎসাপদ্ধতি) মাধ্যমে আটকে থাকা বস্তুটিকে বের করার চেষ্টা করতে হবে।
হেইমলিক ম্যানুভার কীভাবে করবেন? ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক কান গলা এবং হেড নেক সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. শেখ নুরুল ফাত্তাহ রুমি বলেন, ‘আক্রান্ত ব্যক্তিকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে নিজের দুই হাতের সাহায্যে তাঁর ওপর পেটে জোরে চাপ দিতে হবে। কার্যকরভাবে চাপ দেওয়ার জন্য এক হাতের আঙুলগুলো মুঠি করতে হবে। এরপর আরেক হাত দিয়ে সেই মুঠিকে জড়িয়ে ধরে সেই অবস্থায় দুই হাতের সাহায্যে ওপর পেটে সজোরে চাপ দিতে হবে। পেটে এমনভাবে চাপ প্রয়োগ করতে হবে, যাতে চাপটা পেট থেকে বুকের দিকে হয়। এভাবে কয়েক দফায় চাপ দিতে হবে।’
এ পদ্ধতিতে রোগীর বমি হতে পারে, বমির সঙ্গে ওই আটকে থাকা বস্তুটি বের হয়ে আসে কি না বা রোগীর অবস্থার উন্নতি হয় কি না, লক্ষ করতে হবে। আর যদি এভাবে আটকে থাকা বস্তুটি গলার দিকে উঠে আসে এবং বস্তুটি দেখা যায়, তাহলে আঙুলের সাহায্যে তুলে আনার চেষ্টা করা যায়। তবে এই কাজ করতে হবে খুব সাবধানে, যাতে ধাক্কা লেগে তা আবার ভেতরে না চলে যায়। তবে গর্ভবতী নারী এবং স্থূলকায় ব্যক্তির ক্ষেত্রে পেটের পরিবর্তে চাপ দিতে হবে বুকে।
তিনি আরও জানান, ছোট শিশুর ক্ষেত্রে এমন দুর্ঘটনা ঘটলে তাকে উল্টো করে ঝুলিয়ে পিঠে জোরে থাপড়ানো যেতে পারে বারকয়েক। প্রয়োজনে শিশুর শরীরের সামনের অংশে নিজের হাত দিয়ে রেখে শিশুর ঘাড় ও মাথার ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে।
বাড়িতে সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান না হলে কালক্ষেপণ না করে রোগীকে নিকটস্থ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। তাৎক্ষণিক সমাধানের পদ্ধতিগুলো ইউটিউব থেকে শিখে রাখতে পারেন। কখন কোন বিপদে দরকার হবে, কে বলতে পারে!