সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী

সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী

মূল্যস্ফীতি নিয়ে আমরাও শঙ্কিত 

অর্থমন্ত্রী গতকাল অন্য সাতজন মন্ত্রী, একজন উপদেষ্টা, গভর্নর ও পাঁচজন আমলাকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। তবে কথা বলেছেন নয়জন। 

উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ে শঙ্কার কথা জানালেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালও। তবে তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন বলেও জানান তিনি। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ে আমরাও শঙ্কিত। সারা বিশ্বেই এখন উচ্চ মূল্যস্ফীতি। তবে আমরা খাবার তো বন্ধ করতে পারব না। একটা নমনীয় পথে এগোচ্ছি। যেসব কারণে এটি (মূল্যস্ফীতি) হয়, তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। প্রয়োজন অনুযায়ী ছাড়ও দিচ্ছি।’

জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনের পরদিন গতকাল শুক্রবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত বাজেট–পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রীর ডানে ছিলেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিন ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শরিফা খান। 

আর অর্থমন্ত্রীর বাঁ পাশে ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী (এলজিআরডি) মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম ও পরিকল্পনাসচিব সত্যজিৎ কর্মকার।

সূচনা বক্তব্যে প্রস্তাবিত বাজেট দেশের মানুষের কল্যাণে ব্যবহৃত হবে বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী। বলেন, ‘বাজেটে দেওয়া প্রতিশ্রুতি কতটা বাস্তবায়ন হচ্ছে, গত পাঁচ বছর ধরেই তা জানিয়ে আসছি। আমরা ব্যর্থ হইনি। ভবিষ্যতেও ব্যর্থ হব না।’ এরপরই অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের কাছ থেকে প্রশ্ন চান। 

অর্থমন্ত্রী কোনো প্রশ্নের জবাব নিজে দেন, কোনোটির জবাব দিতে ঠেলে দেন অন্য মন্ত্রী ও আমলাদের। কোনো প্রশ্নের জবাব অর্থমন্ত্রী তো দেননি, অন্যরাও এড়িয়ে যান, অন্য বিষয়ে কথা বলেন। অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে প্রশ্ন করা হলেও কেউ কেউ নিজ দায়িত্বে জবাব দেন। তবে গুরুত্বপূর্ণ বেশির ভাগ প্রশ্নের জবাব দেওয়ার দায়িত্ব পান গভর্নর। 

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন, ইআরডি সচিব শরিফা খান ও পরিকল্পনাসচিব সত্যজিৎ কর্মকার কোনো প্রশ্নের জবাব দেওয়ার সুযোগ পাননি। 

এবারের বাজেট সবার জন্যই উপহার দিয়েছি—এমন মন্তব্য করে সাংবাদিকদের উদ্দেশে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘মধ্যম মানের আয় করা অনেকেই কর দেন না, আপনারাই এ কথা বলতেন। সময় এসেছে তাঁদের কাছ থেকে কর আদায়ের। বিশ্বব্যাংক-আইএমএফও বলেছে, কর দেওয়ার মতো ব্যক্তিদের কাছ থেকে যেন কর আদায় করা হয়।’ 

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রেসক্রিপশনে বাজেট করেননি বলে মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী। বলেন, ‘আইএমএফ শুধু ঋণ দেয় না, পরামর্শও দেয়। অর্থনৈতিক বিভিন্ন সংস্কারে সহায়তা করে। তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার থাকে। তাদের পরামর্শের যেটুকু গ্রহণ করা যায়, সেটুকুই নেওয়া হয়। সেখানে আমাদের কোনো আপত্তি থাকে না। আইএমএফ থেকে যতটুকু ঋণ নিয়েছি, তা মাত্র দেড় মাসের প্রবাসী আয়ের সমান।’ 

মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সারা বিশ্বের দিকে তাকানোর পরামর্শ দেন সাংবাদিকদের। তিনি এ-ও বলেন, টিসিবির মাধ্যমে এক কোটি নিম্ন আয়ের পরিবারের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে তেল, চিনি বিক্রি করা হচ্ছে। যদিও নিত্যপণ্যের দামে কোথাও কোথাও মধ্যস্বত্বভোগীরা সুযোগ নিচ্ছে।

বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৯ থেকে ৬ শতাংশে ও ডলারের দাম ১০৮ থেকে ১০৪ টাকায় নামিয়ে আনার স্বপ্ন দেখিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। রিজার্ভ, প্রবাসী আয় ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির কথাও বলেছেন। কীভাবে—এমন প্রশ্নের জবাব দিতে অর্থমন্ত্রী দায়িত্ব দেন গভর্নরকে। গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ১৮ জুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে। কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা মুদ্রানীতিতে থাকবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরবরাহ ব্যবস্থায় কোনো প্রতিবন্ধকতা নেওয়া হয়নি। সুদ ও বকেয়া পরিশোধে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। ফলে মূল্যস্ফীতিতে কোনো প্রভাব পড়বে না। চাহিদা কমানোর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় বেশ কিছু পদক্ষেপ নেবে।

আব্দুর রউফ তালুকদার আরও বলেন, ‘আগামী মুদ্রানীতিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ে কিছু বিষয় থাকবে, যাতে উঠে আসবে প্রত্যাশিত মূল্যস্ফীতির বিষয়টি। ১০ বছর আগে রিজার্ভ ছিল এক হাজার কোটি ডলার। এখন যে রিজার্ভ, দিয়ে তা দিয়ে পাঁচ মাসের আমদানি দায় মেটানো যাবে। আমরা চাইছি আর্থিক হিসাব ঋণাত্মক থেকে ভালো করার। এ জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে কয়েক মাসের মধ্যে রিজার্ভ বাড়তে শুরু করবে।’

অর্থমন্ত্রী জবাববিহীন 

অর্থমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন ছিল, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত বড় সমস্যায়। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বাড়ানো হয়েছে কয়েক দফা। এখন দৈনিক ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। আবার বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ৩৫ হাজার কোটি টাকা পাওনা থাকলেও টাকা পাচ্ছে না। এসবের কারণ কী? 

প্রশ্নের জবাব দেননি অর্থমন্ত্রী। জবাব দিতে তিনি এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলামকে দায়িত্ব দেন। তাজুল ইসলামও এ বিষয়ে নিরুত্তর থাকেন। তবে তিনি কোভিড-১৯ ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি ও ইউরোপের সাধারণ মানুষের অসহনীয় অবস্থার কথা তুলে ধরেন। বলেন, মানুষের যাতে কষ্ট না হয়, এ জন্য সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে। কৃষিসহ সব খাত তুলনামূলক ভালো আছে। আওয়ামী লীগের ১৫ বছরে খাদ্যঘাটতি হয়নি, হাহাকার হয়নি। 

বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বৈশ্বিক মূল্যবৃদ্ধি ও দেশে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হারের অবচিতির কারণে চলতি অর্থবছরের মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ৫ দশমিক ৬ শতাংশে সীমিত রাখা সম্ভব হবে না বলেছেন। বৈশ্বিক পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া সত্ত্বেও তিনি আবার আগামী অর্থবছরের মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ৬ শতাংশ নির্ধারণ করেছেন। অথচ মূল্যস্ফীতির হার এখন ৯ শতাংশের বেশি। প্রক্ষেপণের এত পার্থক্য তথ্যের গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে কি না—এমন প্রশ্নের জবাব দেননি অর্থমন্ত্রী। 

প্রশ্ন করা হয়েছিল, কম টাকায় বাস্তবায়ন করার যোগ্য প্রকল্প বেশি টাকায় করায় দেশে দুর্নীতি হয়। প্রশ্ন উন্নয়ন প্রকল্পবিষয়ক হলেও নিজে থেকে জবাব দেন এলজিআরডি মন্ত্রী। তিনি বলেন, সব প্রকল্প যাচাই-বাছাই করেই হাতে নেওয়া হয়।

যা বললেন কৃষিমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী 

২০১৯-২০ অর্থবছরে অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, এক বছরে তিন কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। এবার বলা হয়েছে এক কোটি, তবে সময় বলা হয়নি। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২ কোটি ৪৫ লাখ মানুষের চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছে। 

কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বেসরকারি খাত এবং কৃষি খাতের সঙ্গে যুক্তরাও এর মধ্যে আছেন। কৃষি উৎপাদনে আগে সেচ, বীজ ও সারে বেশি খরচ হতো। এখন হয় মজুরিতে বেশি। এখন ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা দিতে হয় দৈনিক মজুরি। 

সরকারি কর্মচারীদের জন্য ডে-কেয়ার সেন্টার থাকলেও বেসরকারি কর্মজীবী নারীদের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই—এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ তৈরিতে শেখ হাসিনার সরকারের চেয়ে এত বেশি অবদান আর কোনো সরকার রাখেনি। তবে নারীবান্ধব কর্মসূচি আরও বাড়িয়ে নিতে হবে। এদিকে নিশ্চয়ই আরও নজর দিতে হবে।

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলেন, বর্তমান সরকারের আমলেই কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে।

শেয়ারবাজার নিয়ে গভর্নর ও অর্থসচিব

প্রস্তাবিত বাজেটে করপোরেট করহার কমানো ও শেয়ারবাজার প্রসঙ্গে কোনো কথা বলা হয়নি প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এ হার ক্রমাগত কমিয়ে ৫০ থেকে ২৭ শতাংশে নামিয়েছি।’

করপোরেট কর বিষয়ে আরও কথা বলতে তিনি এনবিআর চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেন। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘করপোরেট কর প্রতিবছর কমাতে হবে—এমন মানসিকতা ঠিক নয়। আমরা উন্নত দেশের কাতারে যেতে চাইব, কিন্তু কর দিতে চাইব না—এমন মানসিকতাও ঠিক নয়।’

শেয়ারবাজার নিয়ে কথা বলতে অর্থমন্ত্রী হঠাৎ দায়িত্ব দেন অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিনকে। অর্থসচিব বলেন, এ ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। তবে শেয়ারবাজার নিয়ে কী কী কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে, তা গভর্নর ভালো বলতে পারবেন। 

তখন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে বেশ কিছু নীতি সমস্যা ছিল। বড় সমস্যাগুলো সমাধান হয়ে গেছে। বিএসইসি এখন বন্ড বাজার নিয়ে কাজ করছে বেশি।

টাকা ছাপানোয় মূল্যস্ফীতি হচ্ছে না

টাকা ছাপিয়ে সরকারকে ঋণ দেওয়ায় মূল্যস্ফীতি বাড়ছে কি না, অর্থমন্ত্রী এই প্রশ্নের জবাব দেওয়ার দায়িত্ব দেন গভর্নরকে। জবাবে গভর্নর বলেন, গত দুই বছরে দুই হাজার কোটি টাকার সমান ডলার বিক্রি করা হয়েছে, এর ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চলে এসেছে দুই লাখ কোটি টাকা। এ টাকা বাজারে থাকলে সরকারের এক লাখ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া কোনো বিষয় ছিল না। যেহেতু তারল্যসংকট হয়েছে, তাই বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে সরকারকে দিয়েছে। এর ফলে মূল্যস্ফীতির কোনো আশঙ্কা নেই। 

গভর্নর বলেন, ‘আমাদের মুদ্রা সরবরাহ জিডিপির মাত্র ৩৮ শতাংশ, ভারতে যা ৭৬ শতাংশ। থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়ায় প্রায় ১০০ শতাংশ। সরকার ঋণ নিলে মূল্যস্ফীতি হবে বলে যে বলা হচ্ছে, তা মোটেও ঠিক নয়। আমাদের মূল্যস্ফীতি আমদানি করা অর্থাৎ জিনিসপত্র, তেল ও গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে। সরকার যে ঋণ নিচ্ছে, তার চেয়ে অনেক বেশি টাকা বাজার থেকে উঠে আসছে।’

ব্যাংক খাত বেহাল

ব্যাংকগুলোর অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। কী হচ্ছে ব্যাংক খাতে। গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার নিজেই অর্থমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে এ প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি বলেন, ব্যাংকসংশ্লিষ্ট অনেক আইন হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করা যাবে। খেলাপি ঋণকে ব্যাসেল-৩-এর আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। এ জন্য বেসরকারি ব্যাংকে ৫ শতাংশ ও সরকারি ব্যাংকে ১০ শতাংশের মধ্যে খেলাপি ঋণ নামিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারি ব্যাংকে পুরোনো খারাপ ঋণ রয়েছে, এ জন্য সময় লাগবে। এ ছাড়া বেশ কিছু সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংককে চিহ্নিত করে তিন বছর মেয়াদি চুক্তি করা হয়েছে। ব্যাংক খাতে যে ক্ষয় হয়েছে, তা ঠিক হয়ে আসবে।

ক্যাশলেস সোসাইটি করে আগামী চার বছরের মধ্যে ৭৫ শতাংশ কমিয়ে আনা কীভাবে সম্ভব হবে—এর জবাবও দেন গভর্নর। গভর্নর বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে রাজধানীর পাশাপাশি চার জেলায় ক্যাশলেস বাংলাদেশ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছি। সামনে দেশীয় ডেবিট কার্ড আসবে। বিদেশি কার্ডের ফলে অনেক অর্থ বিদেশে চলে যায়। দেশীয় কার্ড চালু হলে বিদেশে অর্থ যাওয়া বন্ধ হবে।’

দুই হাজার টাকা দেওয়া গর্বের বিষয়

প্রস্তাবিত বাজেটে কর শনাক্তকরণ নম্বরধারীদের (টিআইএন) মধ্যে যাঁদের আয়কর রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক, তাঁদের ওপর দুই হাজার টাকা কর আরোপের কথা বলা হয়েছে। এ বিষয়ে কথা বলতে এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম দায়িত্ব পেয়ে বলেন, ন্যূনতম আয়কর হিসেবে দুই হাজার টাকা সরকারের কোষাগারে দিয়ে উন্নয়নে শামিল হওয়া গর্বের ব্যাপার। 

এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন, আগে এটা দেখতে হবে টিআইএন কাদের জন্য বাধ্যতামূলক। এ তালিকায় রয়েছে আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকের ট্রেড লাইসেন্সে, অন্য ট্রেড লাইসেন্সে, কমিশন এজেন্ট, পিস্তলের লাইসেন্সে, সিটি করপোরেশন এলাকায় গাড়ি ও বাড়ি কিনতে। সাধারণ মানুষের জন্য এসব সেবার প্রয়োজন নেই। এ ধরনের সেবা যাঁরা নেন, তাঁদের জন্য রাষ্ট্রীয় কোষাগারে দুই হাজার টাকা জমা দিয়ে উন্নয়নের অংশীদার হওয়া গর্বের বিষয়। এটা তাঁদের জন্য বোঝা হওয়ার কথা নয়। 

সংবাদ সম্মেলন আয়োজনে গতকাল অব্যবস্থাপনা ছিল। সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলে মন্ত্রীরা শুনতে পাননি, মন্ত্রীরা বললে শুনতে পাননি সাংবাদিকেরা—পৌনে দুই ঘণ্টার আয়োজনে গতকাল এমন পরিস্থিতি ছিল ২০ থেকে ২৫ মিনিট।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS