পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে কারাগারে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন দলটির শীর্ষ কয়েকজন নেতা। এ কারণে তারা আগামী মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) ইসলামাবাদ হাইকোর্টের (আইএইচসি) সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবেন।
শনিবার (২৯ নভেম্বর) দেশটির সম্প্রচার মাধ্যম জিওটিভির অনলাইন সংস্করণে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। খবরে বলা হয়, সম্প্রতি পিটিআই চেয়ারম্যানের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে। তিনি কারাগারে জীবিত আছেন কিন সরকারের কাছে সেই প্রমাণ দাবি করেছেন তার ছেলে কাসিম খান।
গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে পরিবার, আইনজীবী ও দলীয় কর্মীদের সাথে ইমরান খানকে দেখা করতে না দেওয়ার পর তার জীবিত থাকার বিষয় নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এরইমধ্যে কারাকর্তৃপক্ষের এমন আচরণে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে পিটিআই।
খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখপাত্র আদিল ইকবাল হাইকোর্টের সামনে বিক্ষোভের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। শনিবার তিনি জিও নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী সোহেল আফ্রিদি পেশোয়ারে পৌঁছেছেন। আগামীকাল রোববার (৩০ নভেম্বর) তিনি দলের সংসদীয় কমিটির বৈঠক আহ্বান করেছেন।
তিনি বলেন, ২ ডিসেম্বর) ইসলামাবাদ হাইকোর্টের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে পিটিআই। মুখ্যমন্ত্রী সোহেল আফ্রিদি আদিয়ালা কারাগারের বাইরে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে নেতাদের ব্রিফ করবেন। এবার পিটিআই প্রতিষ্ঠাতার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আরও স্পষ্ট ও নির্দিষ্ট কৌশল নেওয়া হবে। পিটিআই তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া যেকোনো অবৈধ পদক্ষেপের জবাব দেবে। এ সময় ‘সংবিধান লঙ্ঘনকারীদের দিন শেষ হয়ে এসেছে’ বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
পিটিআইয়ের এই ঘোষণার দুদিন আগে খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী আফ্রিদি টানা আটবারের মতো রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে গিয়ে পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে ব্যর্থ হন।
গত বৃহস্পতিবারও তিনি দলের চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন। ব্যর্থ হয়ে ফেরার পথে গোরখপুর চেকপোস্টে গণমাধ্যমকে আফ্রিদি বলেন, বৈধ ও গণতান্ত্রিক সব পথ অনুসরণের পর দলটি এখন ‘শেষ বিকল্প’ হিসেবে বিক্ষোভের পথ বেছে নিচ্ছে। সেদিন আদিয়ালা রোডে টানা ১৬ ঘণ্টার অবস্থান ধর্মঘট করেন এবং ইমরান খানের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতের দাবি জানান।
এরপর মুখ্যমন্ত্রী আইএইচসিতে সাক্ষাতের অনুমতি চেয়ে আবেদন করলেও প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাননি। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা কথা বলতে পারিনি। প্রধান বিচারপতির বার্তা এসেছে যে তিনি আমাদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না।
এর আগেও কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে ইমরানের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। তার পরিবারের সঙ্গেও একই আচরণ করা হচ্ছে বলে দাবি করেছে পিটিআই।
গতকাল শুক্রবার ইমরান খানের বোন আলীমা খান আগের নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করায় আদিয়ালা কারাগারের সুপারিনটেনডেন্টের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেন। একই দিনে রাষ্ট্রীয় আইনমন্ত্রী আকিল মালিক বলেন, বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামী মঙ্গলবার খানকে সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হতে পারে।
তিনি জিও নিউজের একটি অনুষ্ঠানে বলেন, ইমরান খানের কোনো একজন আত্মীয় (বোন) বা কোনো আইনজীবীকে সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হতে পারে। তার দাবি, পিটিআই একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপূর্ণ সাক্ষাৎ চাইছে। অতীতে পাকিস্তান মুসলিম লীগ- নওয়াজের (পিএমএল-এন) সভাপতি নওয়াজ শরিফ কারাগারে ছিলেন, তখন সাক্ষাতে কখনো রাজনৈতিক আলোচনা হতো না।