সামাজিক ঐক্য, মানবিকতা ও সর্বজনীন ভ্রাতৃত্ববাদের চর্চা বাড়াতে উপমহাদেশের প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ও শিক্ষা সংস্কারক হযরত খানবাহাদুর আহছানউল্লা (র.)–এর দর্শন অনুসরণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন বক্তারা।
শনিবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সেমিনারে গ্লোবাল ফ্র্যাটারনিটিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের সভাপতি প্রফেসর ড. গোলাম রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাইম ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. কাজী দীন মোহাম্মদ খসরু।
তিনি বলেন, খানবাহাদুর আহছানউল্লা (র.)–এর জীবন ও দর্শন মানুষকে ঘৃণা পরিহার করে বৈষম্য ও বিভাজন থেকে দূরে থাকতে শেখায়। তার মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি সমাজে এক বৈশ্বিক, সীমানা–অতিক্রমী মানবিক পরিচয় গড়ে তুলতে অনুপ্রাণিত করে।
সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ডাম ক্লাব২৫–এর উপদেষ্টা ড. কাজী এহসানুর রহমান, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের ভিজিটিং রিসার্চ ফেলো খন্দকার সাখাওয়াত আলী, পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অফ লিভিং অ্যান্ড লার্নিংয়ের পরিচালক ড. নূর উল জামান রফিক এবং ইউনাইটেড ন্যাশনস অ্যাসোসিয়েশন অব ফিজির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি আকমল আলী। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আহ্ছানউল্লা সেন্টার ফর ইউনিভার্সাল হিউম্যানিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল মাসুদ। সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন রাখি গাঙ্গুলী।
বক্তারা বলেন, অন্যকে সেবা করার আনন্দ নিজের সেবা পাওয়ার আনন্দের চেয়েও মহান—এই বিশ্বাসে দৃঢ় ছিলেন খানবাহাদুর আহছানউল্লা (র.)। যার মূলে রয়েছে সুফিবাদের মানবিক চেতনা ও কোরআনের করুণাপূর্ণ শিক্ষা। মানবকল্যাণে তার আজীবন নিবেদন, সমাজে ঐক্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা এবং ভালোবাসা ও শান্তির বার্তা তাঁর বৈশ্বিক ভ্রাতৃত্ববাদী ভাবনার বাস্তব প্রতিফলন।
অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানবতাবাদী পেশাজীবী, সমাজকর্মী, সমাজবিজ্ঞানী ও উন্নয়নকর্মীরা সেমিনারে যুক্ত হন। আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণকারীদের সুবিধার্থে সেমিনারের ভাষা ইংরেজি রাখা হয়। আয়োজনের অংশ হিসেবে ছিল উন্মুক্ত আলোচনা, প্রশ্নোত্তর পর্ব এবং আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদের বিশেষ মতামত প্রকাশ।
সুফিবাদ, মানবিক মূল্যবোধ এবং সার্বজনীন ভ্রাতৃত্বের আলোকে আয়োজিত এ সেমিনারে বিশেষভাবে তুলে ধরা হয় খানবাহাদুর আহছানউল্লা (র.)–এর দিকনির্দেশনা। তাঁর দর্শন থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৩৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় আহ্ছানিয়া মিশন, যার মূল লক্ষ্য ছিল সামাজিক ও আধ্যাত্মিক উন্নয়নের ভিত্তি গড়ে তোলা।
সেমিনারে বৈশ্বিক শান্তি, সহনশীলতা ও সৌহার্দ্যের দৃষ্টিকোণ থেকে তাঁর ‘গ্লোবাল ফ্র্যাটারনিটি’ ধারণার গুরুত্বও তুলে ধরা হয়।