তৃতীয় বিশ্বের সব দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে স্থগিত করার পরিকল্পনা করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে কোন কোন দেশ এই সিদ্ধান্তের আওতায় আসবে, সেটি তিনি স্পষ্ট করেননি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবস্থা বা সিস্টেমকে ‘সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধার’ করতে দেবে, কারণ অভিবাসন নীতি অনেক আমেরিকানের ‘অর্জন ও জীবনমান ক্ষতিগ্রস্ত’ করেছে।
ট্রাম্পের এই ঘোষণা এমন সময়ে এলো যখন এক আফগান নাগরিকের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটন ডিসিতে ন্যাশনাল গার্ডের দুজন সদস্যকে গুলি করার অভিযোগ আনা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ একজনের মৃত্যু হয়েছে।
ঘটনার পর ট্রাম্পের বিভিন্ন ঘোষণা তার অভিবাসনবিষয়ক অবস্থানকে আরও কঠোর করেছে, ইস্যুটি তার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অগ্রাধিকার।
ওয়াশিংটন ডিসির ওই হামলা জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির প্রমাণ এবং ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, এখানে থাকার যোগ্য নয় এমস বিদেশিদের দেশ থেকে বের করে দেওয়া হবে।
একই দিনে নিরাপত্তা যাচাইয়ের নিয়ম পুনর্বিবেচনার কথা বলে যুক্তরাষ্ট্র আফগানদের সব অভিবাসন আবেদন প্রক্রিয়া সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ও অভিবাসন দপ্তর ঘোষণা করেছে, ১৯টি দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসা নাগরিকদের গ্রিনকার্ড পর্যালোচনা করে দেখা হবে।
বিবিসি জানতে চাইলে, সংস্থাটি হোয়াইট হাউসের জুন মাসের এক ঘোষণার দিকে ইঙ্গিত করে, যেখানে তালিকায় আফগানিস্তান, কিউবা, হাইতি, ইরান, সোমালিয়া ও ভেনেজুয়েলার নাম ছিল।
গ্রিন কার্ড পুনরায় পরীক্ষা কীভাবে হবে, তা নিয়ে আর কোনো বিস্তারিত জানানো হয়নি।
বৃহস্পতিবার রাতে ট্রাম্প আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেন, তিনি বিদেশিদের দেওয়া সব ফেডারেল সুবিধা ও ভর্তুকি বন্ধ করে দেবেন। তিনি শরণার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে ‘সামাজিক বিশৃঙ্খলার’ জন্য দায়ী করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য প্রকৃত সম্পদ নন, এমন ব্যক্তিদের তিনি দেশ থেকে বের করে দেবেন।
এদিকে ওয়াশিংটন ডিসিতে গুলির ঘটনায় অভিযুক্ত রহমানুল্লাহ লাকানওয়াল ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। সে সময় আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় ফিরে আসে এবং যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে কাজ করা অনেক আফগান প্রতিশোধের ঝুঁকিতে ছিলেন। লাকানওয়াল সিআইএ–র সঙ্গে কাজ করেছিলেন বলে জানান সংস্থাটির পরিচালক জন র্যাটক্লিফ।
এক কর্মকর্তা মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএসকে জানান, লাকানওয়াল ২০২৪ সালে আশ্রয়ের আবেদন করেন এবং এ বছর তার আবেদন অনুমোদিত হয়।
ট্রাম্প এই গুলির ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এর আগেই তিনি আফগানিস্তানসহ মূলত আফ্রিকা ও এশিয়ার ১১টি দেশের নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন। তার প্রথম মেয়াদেও কয়েকটি মুসলিম-অধ্যুষিত দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল।
সূত্র: বিবিসি