আরও ৩৯ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠালো যুক্তরাষ্ট্র

আরও ৩৯ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠালো যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসের অভিযোগে আরও ৩৯ জন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছে দেশটি। ফেরত আসা এই কর্মীদের মধ্যে ২৬ জনই নোয়াখালীর। বাকিরা অন্য জেলার বাসিন্দা।

শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টায় যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশেষ সামরিক ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান এই ৩৯ বাংলাদেশি। এরপর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দেশে ফেরত কর্মীদের ব্র্যাকের পক্ষ থেকে পরিবহন সহায়তাসহ জরুরি সহায়তা দেওয়া হয়।

ফেরত আসা ৩৯ কর্মীদের মধ্যে ২৬ জনই নোয়াখালীর। এ ছাড়া কুমিল্লা সিলেট, ফেনী, লক্ষ্মীপুরের দুজন করে এবং চট্টগ্রাম, গাজীপুর, ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ ও নরসিংদীর একজন করে রয়েছেন। এর আগে চলতি বছরে ১৮৭ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন।

দেশে ফেরত এই কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম বিভাগ জানিয়েছে, এই ৩৯ জনের মধ্যে ৩৪ জন জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ছাড়পত্র নিয়ে ব্রাজিল গিয়েছিলেন। এরপর সেখান থেকে মেক্সিকো হয়ে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন। বাকি পাঁচজনের মধ্যে দুজন সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রে যান আর তিনজন দক্ষিণ আফ্রিকা হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন। এরপর এই ৩৯ জন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের জন্য আবেদন করলে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক (মাইগ্রেশন ও ইয়ুথ প্ল্যাটফর্ম) শরিফুল হাসান জানিয়েছেন, এই যে সরকারের পক্ষ থেকে ব্রাজিলে বৈধভাবে কর্মী পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হলো সেক্ষেত্রে তারা ব্রাজিল না যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন সেটি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সরকার বা এজেন্সির কী কোনো সতর্কতা বা কৌশল ছিল? একেকজন ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা খরচ করে শূন্য হাতে ফিরলেন তার দায় কার? এভাবে বৈধভাবে অবৈধ হওয়ার পথে ছেড়ে দেওয়া ভীষণ দুর্ভাগ্যজনক ও দায়িত্বহীনতা। যে এজেন্সি তাদের পাঠিয়েছিল এবং যারা এই অনুমোদন প্রক্রিয়ায় ছিল তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত।

সূত্র জানায়, ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর অভিযান আরও জোরদার করা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় একাধিক দফায় বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে।

এর আগে চলতি বছরের ৮ জুন একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে ৪২ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনা হয়। এর আগে চলতি বছরের ৬ মার্চ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত একাধিক ফ্লাইটে আরও অন্তত ৩৪ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। ২০২৪ সালের শুরু থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো বাংলাদেশির সংখ্যা ২২০ ছাড়িয়েছে।

মার্কিন আইন অনুযায়ী বৈধ কাগজপত্র ছাড়া অবস্থানকারী অভিবাসীদের আদালতের রায় বা প্রশাসনিক আদেশে দেশে ফেরত পাঠানো যায়। আশ্রয়ের আবেদন ব্যর্থ হলে অভিবাসন কর্তৃপক্ষ (আইসিই) তাদের প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করে। সাম্প্রতিক সময়ে এ প্রক্রিয়া দ্রুততর করার কারণে চার্টার্ড ও সামরিক ফ্লাইটের ব্যবহার বেড়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS