দীর্ঘ বিরতির পর যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে বরিশালে এসে পৌঁছেছে শতবর্ষী স্টিমার পি এস মাহসুদ। শতবর্ষী এই স্টিমার শুধু নৌযান নয়— এ দেশের নদীপথ ও দক্ষিণাঞ্চলের জীবনযাত্রায় একটি জীবন্ত ইতিহাস।
রাষ্ট্রীয় নৌ বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বিআইডব্লিউটিসির ঐতিহ্যবাহী প্যাডেল চালিত যাত্রীবাহী নৌযান পিএস মাহসুদ শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় ‘পর্যটক সার্ভিস‘ হিসেবে ঢাকা থেকে বরিশালের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। দুপুর ১টার দিকে স্টিমারটি চাঁদপুর ঘাটে নোঙর করে দশ মিনিট অপেক্ষার পর আবার বরিশালের উদ্দেশে যাত্রা করে। তবে চাঁদপুর থেকে নৌযানটিতে কোনো যাত্রী আরোহণ করেনি।
পরে সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে পি এস মাহসুদ বরিশাল নদী বন্দর সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদী অতিক্রম করে। ঘাট সংকটের কারণে বরিশাল বন্দরে না ভিড়িয়ে নগরের ত্রিশ গোডাউন এলাকায় নেওয়া হয়।
নৌযানটিতে থাকা স্টাফদের সূত্রে জানা গেছে, ৯৬০ যাত্রী বহন ক্ষমতাসম্পন্ন নৌযানটিতে প্রায় অর্ধশত যাত্রী ভ্রমণ করেছেন প্রথম দিনে।
এর আগে গত ১৫ নভেম্বর ও ২১ নভেম্বর নৌযানটি ঢাকা থেকে যাত্রা করার কথা থাকলেও যাত্রী সংকটে, ভাড়া নির্ধারণসহ কয়েকটি কারণে তা আর হয়নি।
প্রথম যাত্রায় ভ্রমণকারী যাত্রীরা বলছেন, সময় ও গন্তব্য আরও যাচাই-বাছাই করে নৌযানটি পরিচালনা করা হলে যাত্রী সংকট কেটে যাবে। সেইসাথে ভাড়া কমানোর দাবি জানান তারা।
উল্লেখ্য, পি এস মাহসুদ ১৯২২ সালে কলকাতার গার্ডেন রিচ ওয়ার্কশপে নির্মিত হয়। বেলজিয়ামের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় ১৯৮৩ সালে নারায়ণগঞ্জের ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ লিমিটেডের মাধ্যমে স্টিমারটির স্টিম ইঞ্জিনকে ডিজেল ইঞ্জিনে রূপান্তর করা হয়। ১৯৯৫ সালে মেকানিক্যাল গিয়ার সিস্টেমে রূপান্তর করা হয়।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে বন্ধ হওয়ার আগে নৌযানটি টানা প্রায় ২৫ বছর অন্যান্য স্টিমারের সাথে ঢাকা-বরিশাল-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল-মোড়েলগঞ্জ নৌপথে যাত্রী পরিবহন করে।
বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নতুনভাবে ঢাকা-বরিশাল রুটে প্রথম শ্রেণিতে জনপ্রতি ভাড়া ২৬৬০ টাকা, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ১৬৫০ টাকা এবং ডেক শ্রেণিতে ৬০০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। সংস্থাটির সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পিএস মাহসুদ প্রতি শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকা থেকে এবং প্রতি শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় বরিশাল থেকে যাত্রা করবে।