বাউলশিল্পী আবুল সরকারের ভক্ত-অনুরাগীদের ওপর মানিকগঞ্জে চালানো হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস)।
সোমবার (২৩ নভেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এইচআরএসএস-এর নির্বাহী পরিচালক ইজাজুল ইসলাম এ নিন্দা জানান।
সম্প্রতি ধর্ম অবমাননার অভিযোগে বাউলশিল্পী আবুল সরকারকে আটকের পর ২৩ নভেম্বর তার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত কর্মসূচিতে ‘মানিকগঞ্জ জেলার সর্বস্তরের আলেম-ওলামা ও তৌহিদী জনতা’ ব্যানারে হামলা চালানো হয় বাউল ভক্ত-অনুরাগীদের ওপর। এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এইচআরএসএস।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, রোববার (২৩ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে মানিকগঞ্জ জেলা স্টেডিয়াম এলাকায় বাউলশিল্পী আবুল সরকারের মুক্তির দাবিতে কর্মসূচি পালন করছিলেন তার ভক্ত ও অনুসারীরা। এ সময় ‘মানিকগঞ্জ জেলার সর্বস্তরের আলেম-ওলামা ও তৌহিদী জনতা’ ব্যানারে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির মধ্যে অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন। এমনকি প্রাণ বাঁচাতে অনেক বাউল অনুরাগী স্টেডিয়ামসংলগ্ন ডোবায় ঝাঁপ দিতে বাধ্য হন।
এইচআরএসএস মনে করে, দেশের সাংস্কৃতিক চর্চা, শিল্পী ও শিল্প–অনুরাগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্র ও সমাজের দায়িত্ব। বাউলদের ওপর এ হামলা কেবল ব্যক্তিগত নিরাপত্তার ওপর আঘাত নয়; বরং দেশের সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের ওপর হুমকি, যা মব সহিংসতার শামিল।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ৫ আগস্টের ছাত্র–জনতা বিপ্লবের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে শতাধিক মাজার ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মতো ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। এসব নৈরাজ্য ও উগ্রতা রাষ্ট্র ও সমাজকে মারাত্মক ক্ষতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। পাশাপাশি প্রশাসনের নীরবতা ও দৃশ্যমান পদক্ষেপের অভাব নিয়মিত এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে, যা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির ইঙ্গিত দেয়।
এইচআরএসএস দাবি জানিয়েছে, এ ধরনের সব ঘটনা দ্রুত, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক স্থাপনার নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে এবং সাম্প্রদায়িক উসকানি বা সহিংসতায় জড়িত সব পক্ষকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে সরকার, স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।