ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল দীর্ঘদিন ধরেই নাজুক অবস্থায় রয়েছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিশেষজ্ঞ দল এটিকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে মত দিয়েছেন। এসবের পরও নতুন ভবন নির্মাণ না করায় এবার কর্মচারীদের জন্য নির্মিত ভবনে অবস্থান নিয়েছেন হলের শিক্ষার্থীরা। নতুন ভবন নির্মাণের আগ পর্যন্ত তারা সেখানে থাকবেন বলে জানিয়েছেন।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পের পর শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে রাজধানীর পলাশী মোড়ের পাশে অবস্থিত এই ভবনে অবস্থান নেন।
এর পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসেন। কিন্তু মুহসীন হলের আবাসিক ছাত্ররা তাদের দাবিতে অনড়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলসংলগ্ন এলাকায় কর্মচারীদের জন্য নির্মিত আবাসিক এই ভবনটিতে প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবারের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।
এদিকে মুহসীন হলে একাধিক শিক্ষার্থী জানান, হলটির মধ্যে প্রায়ই পলেস্তারা খসে পড়ে। সিলিং ফ্যান পড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এতে হলের একাধিক শিক্ষার্থী আহতও হয়েছেন। সকালে ভূমিকম্পে আতঙ্কিত হয়ে লাফ দিয়ে পড়ে মুহসীন হল সংসদের ভিপি সাদিক শিকদারসহ পাঁচজন শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর আগে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে এক ভূমিকম্পে হলভবন কেঁপে উঠলে আতঙ্কিত হয়ে লাফ দিয়ে আহত হয়েছেন হলের এক শিক্ষার্থী।
এদিকে শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কথা শুনে দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করতে আসেন। তবে শিক্ষার্থীরা আলোচনায় অংশগ্রহণে অনাগ্রহ দেখান।
২০১৪ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় একটি বিশেষজ্ঞ দল বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি হল (মাস্টারদা সূর্যসেন হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল, শহীদুল্লাহ হল) পরিদর্শন করে। পরিদর্শন শেষে হলগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞ দল।
মুহসীন হলের প্রভোস্ট ড. মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, বুয়েটের প্রতিবেদনে ঝুঁকিপূর্ণ বলা হয়েছে, কিন্তু এখনই বসবাসের অনুপযোগী বলা হয়নি। বুয়েটের বিশেষজ্ঞদের নির্দেশে এখন হলের মেরামত ও সংস্কার কাজ চলছে।
তিনি বলেন, দূর্ঘটনায় আফটারশক একটি বিষয় আছে। সেই নিরাপত্তার কারণে শিক্ষার্থীরা সেখানে গেছে। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আবার কথা বলব, হলের ভবনগুলো পরীক্ষা করে শিক্ষার্থীদের জন্য যা ভালো হবে, সেই সিদ্ধান্তই নেওয়া হবে।