শরীর যেন এক নীরব আয়না! আমরা যা খাই, যা বেছে নিই, তা-ই ধীরে ধীরে সেখানে প্রতিফলিত হয়। বাইরে থেকে তাৎক্ষণিকভাবে বোঝা না গেলেও, এই প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসই ধীরে ধীরে আমাদের দেহের ভেতরে ভবিষ্যতের স্বাস্থ্য তৈরি করে। ঠিক যেমন একটি যন্ত্রের কার্যক্ষমতা নির্ভর করে তার জ্বালানির মানের ওপর, তেমনি শরীরও নির্ভর করে খাদ্যের গুণমান ও ভারসাম্যের ওপর।
আমরা যদি পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করি, দেহ সেই উপাদান থেকেই গড়ে তোলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা, হরমোনের ভারসাম্য ও মানসিক স্থিতি। আর যদি প্রতিনিয়ত তেল-চর্বি, অতিরিক্ত চিনি-যুক্ত খাবার গ্রহণ করি, তার প্রভাব নীরবে জমে থেকে একসময় রূপ নেয় নানা জটিলতায়-হাড় ক্ষয়, হৃদরোগ, হরমোনজনিত সমস্যা কিংবা প্রজনন অক্ষমতার মতো বিপদে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীর নিজে থেকে কোনো উপাদান তৈরি করতে পারে না; আমরা যা দিই, সেটিই সে গ্রহণ করে, রূপান্তরিত করে শক্তি ও কোষে। তাই প্রতিদিনের খাবারের পছন্দই আসলে আমাদের জীবনের মান নির্ধারণ করে। দেহের পূর্ণাঙ্গ বৃদ্ধি, সুস্থতা এমনকি মানসিক প্রশান্তিও খাদ্যাভ্যাসের ওপর গভীরভাবে নির্ভরশীল।
একটি সঠিক ডায়েটের মূল উপাদান হলো ফলমূল ও শাকসবজি। এই উপাদানগুলো আমাদের দেহের বৃদ্ধি, শক্তি এবং সম্পূর্ণতার জন্য প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি উপাদানে ভরপুর। উদাহরণ হিসেবে গাজরের কথা ধরা যাক-কেবল ১০০ গ্রাম গাজরে থাকে ৮৯% পানি, ০.৯ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ২.৭ গ্রাম ফাইবার এবং ০.১ গ্রাম ফ্যাট। গাজরের মতোই প্রায় সব সবজি বা ফলে রয়েছে প্রয়োজনীয় নিউট্রিয়েন্টস। আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় এসব নিউট্রিয়েন্টস পরিমিত পরিমাণে থাকা একান্ত প্রয়োজন।
যুক্তরাজ্যের ফুড স্ট্যান্ডার্ডস এজেন্সি (FSA) ২০০৪-২০০৫ সালে ‘HFSS’ নামে একটি ধারণা প্রকাশ করে। আমরা হয়তো এটিকে ‘High in Fat, Sugar, or Salt’ হিসেবে জানি। এই ধারণার মূল কথা হলো—যেসব খাবারে ফ্যাট, চিনি ও লবণ বেশি থাকে, তা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
পুষ্টিবিদদের মতে, কোনো একটি খাদ্য উপাদান সম্পূর্ণরূপে বাদ দেওয়া বা অতিরিক্ত গ্রহণ-উভয়ই ক্ষতিকর। খাদ্যের প্রধান তিনটি উপাদান—কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাটের মধ্যে সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। এই বিবেচনায় শাকসবজি ও ফলমূলকে পুষ্টি, শক্তি এবং ‘গুড ফ্যাট’-এর পাওয়ারহাউস বলা যেতে পারে।
তবে, পুষ্টিগুণে এগিয়ে থাকলেও এই অত্যাবশ্যক খাবারগুলো স্বাদ বা টেক্সচারের প্রতিযোগিতায় অনেক সময় পিছিয়ে যায়। এই স্বাদ বা টেক্সচারের সমস্যাটি শিশুদের মধ্যে প্রবল। পুষ্টিগুণ বা প্রয়োজনীয়তা জানা সত্ত্বেও ফলমূল ও শাকসবজি প্লেটে দেখলে মুখটা যেন খানিকটা বেঁকেই যায়। শিশুদের ক্ষেত্রে তো শাকসবজি খাওয়ানো যেন প্রতিদিনের এক যুদ্ধ।
পরিস্থিতি এতটাই আশঙ্কাজনক যে, দেশে প্রায় ৪৬% শিশু শাকসবজি খেতে অনিচ্ছুক—জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ)-এর ‘শিশু পুষ্টি প্রতিবেদন ২০২৫’-এ এই তথ্যটি উল্লেখ করা হয়েছে। তবে যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, তা খাওয়ার জন্য কিন্তু কারও একটুও অনীহা নেই! কথায় আছে—‘আগে দর্শনধারী, তারপর গুণবিচারী’। বাচ্চারা যেন প্রথমেই খোঁজে “ভিজুয়ালি আপিলিং” খাবার। এই অভ্যাসের কারণেই যে স্বাস্থ্যের করুণ ক্ষতি হচ্ছে, তা বলাই বাহুল্য।
ফলমূল ও শাকসবজি না খাওয়ার ফলে এখন শিশুরা অল্প বয়স থেকেই দুর্বল দৃষ্টিশক্তি, পেশির দুর্বলতা এবং হাড়ের অস্বাস্থ্যজনিত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশনের এক জরিপ অনুযায়ী, পুরুষ ও নারী উভয়ের প্রজনন প্রক্রিয়ায় খাদ্যাভ্যাস একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অর্থাৎ, বর্তমানে নারীদের মধ্যে গর্ভধারণের অক্ষমতা যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তার অন্যতম প্রধান কারণ হলো অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস। নবজাতকদের মধ্যেও অপুষ্টির প্রভাব স্পষ্টভাবে দেখা যায়, যার মূল কারণ প্রসবকারী মায়ের অনুপযুক্ত খাদ্যাভ্যাস।
তাহলে এই ফলমূল ও শাকসবজিকে মজার করে তোলার কি কোনো উপায় নেই? অনেকে হয়তো বলবেন, ‘না, নেই।’ কিন্তু এই ধারণাটিকে ভুল প্রমাণ করেছে অর্গানিক নিউট্রিশন লিমিটেডের ‘কারকুমা’ ব্র্যান্ডের একটি স্প্রেড—যা আমরা চিনি ‘কারকুমা ভেজ-স্প্রেড’ নামে।
স্বাদে কখনোই বোঝা যায় না যে এই ভেজ স্প্রেডের মূল উপাদান আসলে শাকসবজি। গাজর, পালংশাক, ব্রকলি, মুলবেরি এবং হ্যাজেলনাটের মতো পুষ্টিসমৃদ্ধ উপাদানের সংমিশ্রণে ফলমূল ও শাকসবজিকে দেওয়া হয়েছে এক নতুন রূপ। বড়-ছোট সবার পছন্দের চকোলেট স্বাদের মধ্যে যদি শাকসবজি খাওয়া যায়—তাহলে কেন নয়!
প্রশ্ন হতে পারে—বাজারে এত চকোলেট স্প্রেড থাকতে কেন ভেজ-স্প্রেড কিনব? কারণ, ‘কারকুমা ভেজ-স্প্রেড’ খাদ্য নিরাপত্তা ও গুণগত মানের সর্বোচ্চ মানদণ্ড পূরণ করে। এটি সার্টিফায়েড GMP, IFOAM, ISO-2000, USDA Organic, US FDA এবং BSTI-এর দ্বারা। অর্থাৎ, এটি শুধু স্বাদেই নয়, মানের দিক থেকেও একেবারে দুর্দান্ত!
তবে অর্গানিক নিউট্রিশন লিমিটেডের স্বাস্থ্যকর পণ্যের তালিকা এখানেই শেষ নয়। তাদের রয়েছে আরও নানা পুষ্টিগুণে ভরপুর পণ্য—যেমন কারকুমা অর্গানিক হেলদি গাট, কারকুমা অর্গানিক টারমেরিক ইমিউন বুস্টার, কারকুমা অর্গানিক ইমিউন প্লাস এবং কারকুমা জয়েন্ট গার্ড। তাদের বেশিরভাগ পণ্যই শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহে গুরুত্ব দেয়।
২০১৬ সালে গবেষণার মাধ্যমে অর্গানিক নিউট্রিশন লিমিটেড (ONL)-এর যাত্রা শুরু হয়। অভিজ্ঞ বিজ্ঞানী, পুষ্টিবিদ ও খাদ্যপ্রযুক্তি বিদদের সমন্বয়ে পরিচালিত গবেষণায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বারডেমের মতো প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি অদূর ভবিষ্যতে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে প্রবেশের পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।