যুদ্ধাপরাধের বিচার-জামায়াত নিষিদ্ধের দাবি জানালেন আলাল

যুদ্ধাপরাধের বিচার-জামায়াত নিষিদ্ধের দাবি জানালেন আলাল

একাত্তরের যুদ্ধাপরাধে জড়িতদের বিচার ও জামায়াতের সাংগঠনিক নিষিদ্ধকরণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।

শনিবার (১ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম আয়োজিত ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অপরিহার্য’ শীর্ষক মুক্তিযোদ্ধা সভায় তিনি এ দাবি জানান।

আলাল বলেন, আমি অনুরোধ করব মঞ্চে আজকে মাননীয় মহাসচিব ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা থাকলে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি উত্থাপন করা উচিত যে ১৯৭১, ১৯৭২–৭৩, ১৯৭৪ এবং এর আগের গণহত্যা, নির্মূল নির্যাতন, নিপীড়ন, ভোটাধিকার হরণ এসব কারণে যদি আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা যায়, তাহলে ১৯৭১-এর গণহত্যা, ধর্ষণ ও হত্যাযজ্ঞের কারণে তাদের (জামায়েত) কার্যক্রমও নিষিদ্ধ করা উচিত। একই অপরাধে দুই রকম বিচার হতে পারে না, এটা প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে আজকের এ কথা বলতে চাই।

জামায়াত সম্পর্কে আলাল বলেন, জামায়াত এখন নিজেদের চেহারা, পোশাক-আশাক, কর্মকাণ্ড সব বদলে নিচ্ছে। গতকাল জামায়াতের সেক্রেটারি হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে সমাবেশ করেছেন, কিন্তু সেখানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কথা একবারও বলেননি, সব কথা বলেছেন বিএনপির বিষয়ে।

তিনি আরও বলেন, ধানের শীষের সঙ্গে না থাকলে জামায়াতের কেউ তাদের কথায় দুই টাকাও দিতে চাইবে না। বিএনপির সঙ্গে ছিল বলেই তারা একসময় রাজনৈতিক মাঠে টিকে ছিল।

আলাল বলেন, বিএনপি যদি কোনো ভুল করে থাকে, তবে ২০০১–২০০৬ সালের সরকারে অংশীদার হিসেবে জামায়াতও সেই ভুলের অংশীদার।

নিজের বক্তব্যের শেষ অংশে তিনি রসিকতা করে বলেন, মুরগির বাচ্চারা যেমন পরে নাম পায়, চিকেন রোস্ট, বিরিয়ানি বা তন্দুরি, তেমনি জামায়াতও মরার পর নাম পাবে। জীবিত অবস্থায় এই দেশের মানুষ তাদের মেনে নেবে না।

দেশ আজ বহুমুখী রূপ ধারণ করা রাজনীতিকদের কবলে পড়েছে। এ অবস্থায় বিএনপির কাজ হবে ধৈর্য ধরে সময়ের অপেক্ষা করা এমন মন্তব্য করে মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, বিএনপি এখন এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে, যাদের প্রয়োজন হয়, তারা নিজেদের স্বার্থে এ দলকে ব্যবহার করে নিচ্ছে। বিএনপি আজ অর্জুন গাছের ছালের মতো, যার দরকার পড়ে, কেটে নেয়।

আলাল বলেন, বর্তমান সরকার মনে করে সব অনাচার, নির্যাতন ও অর্থপাচারের মূল হয়তো বাংলাদেশের সংবিধান। আসলে সমস্যার মূলে রয়েছে ক্ষমতা নবায়নের নামে অনুষ্ঠিত একতরফা নির্বাচন প্রক্রিয়া।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা নির্বাচনের মাধ্যমে নয়, বরং নির্বাচনের নাম করে ক্ষমতা নবায়ন করেছেন।

মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS