বরগুনার তালতলী উপজেলার ছালেহিয়া আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে দাখিল পরীক্ষায় নকল সরবরাহে জড়িত থাকার অভিযোগে মাদ্রাসার চার শিক্ষক, সহযোগীসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ রোববার পরীক্ষা চলাকালে তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিফাত আনোয়ার ওই মাদ্রাসার কেন্দ্রের সচিব হারুন অর রশিদের বাসায় অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে আটক করেন। এ ঘটনায় আজ সন্ধ্যায় হল সুপার আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে মামলা করলে ওই ১০ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাখাওয়াত হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ওই মামলায় কেন্দ্রের সচিব হারুন অর রশিদসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার অন্য দুই আসামি পলাতক। গ্রেপ্তার আসামিদের আগামীকাল সোমবার আদালতে নেওয়া হবে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন কড়ইবাড়িয়া এতিম মঞ্জিল বালিকা দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক মো. নাজমুল হাসান ও মোসা. ফাহিমা আক্তার, বালিয়াতলী দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক মো. জামাল উদ্দিন ও মো. মনোয়ার হোসেন এবং সহযোগী ইয়ামিন, সাফামনি, ফজিলা, মো. ওবায়দুল, মো. কামাল ও শাহ নেওয়াজ।
অভিযান সূত্রে ইউএনও সিফাত আনোয়ার বলেন, গত ৩০ এপ্রিল দাখিল পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষা শুরুর পর থেকে তালতলী ছালেহিয়া আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রের সচিব অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ অসদুপায় অবলম্বন করে পরীক্ষা চালিয়ে আসছেন, এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ গণিত পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্র সচিব তাঁর বাসায় গণিতের প্রশ্ন সরবরাহ করে গণিত শিক্ষক দিয়ে প্রশ্নপত্র সমাধান করছিলেন। গোপন সূত্রে নকল সরবরাহের তথ্য পেয়ে উপজেলা প্রশাসন ওই বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় নকল সরবরাহের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ১০ জনকে আটক করে তালতলী থানায় সোপর্দ করা হয়।
এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত কেন্দ্র সচিব হারুন অর রশিদ পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাই এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আমতলীতে ৮ শিক্ষক বরখাস্ত
দায়িত্বে অবহেলা ও নকল সরবরাহে সহযোগিতার অভিযোগে আমতলী উপজেলার বন্দর হোসাইনিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্র থেকে আট শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত শিক্ষকেরা হলেন মাহমুদিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক ফরিদুল ইসলাম, আমতলী বন্দর হোসাইনিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক আফরোজা আকতার, গুলিশাখালী দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মো. খাইরুজ্জামান, পশ্চিম চিলা আমিনিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মো. হুমায়ুন কবির, উত্তর টেপুড়া এলাহিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মো. রুহুল আমিন, রহমতপুর দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মো. নজরুল ইসলাম, তক্তাবুনিয়া নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহসুপার মো. আবদুল কারিম ও মাহমুদিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মো. নুরুল ইসলাম। আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।