ঈদের দ্বিতীয় দিনে ফাঁকা রাজধানীতে যা দেখা গেল

ঈদের দ্বিতীয় দিনে ফাঁকা রাজধানীতে যা দেখা গেল

দীর্ঘ দিন পর দেখা পাওয়া স্বস্তির ঈদের দ্বিতীয় দিনে রাজধানীর সড়ক ছিল প্রায় ফাঁকা। তবে কিছুটা ভিড় দেখা গেছে বিনোদন কেন্দ্র, পার্ক, মানিক মিয়া এভিনিউ ও হাতিরঝিল এলাকায়।এসব স্থানে নগরবাসী তাদের পরিবার ও আত্মীয় স্বজনকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছেন।

তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদের দিন থেকে আজ মঙ্গলবার ভিড় তুলনামূলক কম। অতিরিক্ত গরম আবহাওয়া থাকায় সড়ক ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে মানুষের উপস্থিতিও কম।

সড়কে যানবাহনের উপস্থিতি কম

রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে স্বল্প সংখ্যক সিটি সার্ভিসের বাস দেখা গেছে। সে সব বাসে যাত্রীর সংখ্যা কম থাকলে ভাড়া আদায় নিয়ে যাত্রী ও সুপারভাইজরদের মধ্যে বচসাও দেখা গেছে। গুলিস্তান ফ্লাইওভারের দিয়ে চলাচলকারী শ্রাবণ পরিবহনের সুপারভাইজর জাহেদুল বলেন, ঈদ উপলক্ষে ৫ টাকা বলে নিচ্ছি। অনেক যাত্রী সেটা দিচ্ছেনও। কিন্তু ২/১ যাত্রী ঝগড়া বাধিয়ে দিচ্ছেন। তারা অতিরিক্ত ভাড়া দিতে রাজী নন।

একই সমস্যা দেখা গেছে ভিক্টর, শিকড়সহ কয়েকটি পরিবহনেও। তবে সড়কে অল্প সংখ্যক সিটি বাসের পাশাপাশি দুরপাল্লার বাসও দেখা গেছে। এর মধ্যে সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা। এসব অটোরিকশা রাজধানীর অলিগলিসহ প্রধান সড়কে বেপরোয়াভাবে চলতেও দেখা গেছে।  

গুলিস্তান শহীদ মতিউর পার্ক

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অধীন গুলিস্তান শহীদ মতিউর পার্কে কিছুটা ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ১০ টাকা দিয়ে টিকেট কেটে নগরবাসী তাদের সন্তানদের নিয়ে বিভিন্ন রাইড উপভোগ করতে দেখা গেছে। এই পার্কে রয়েছে খাবার ক্যান্টিন,ফুড কোট, পুকুরে প্যাডেল বোট ও শিশুদের জন্য বিভিন্ন ধরণের রাইড।

নগরীর মুগদা থেকে আসা হোসেন আহমদ বলেন, অনেক গরমের মধ্যেও দুই সন্তানকে কিছুটা আনন্দ দিতে গুলিস্তান পার্কে নিয়ে এসেছি। এখানে শিশুদের জন্য অনেকগুলো রাইড আছে। তারা ভালো উপভোগ করছেন। আর বড়রাও পুকুরে বোটে ছড়ে আনন্দ পাচ্ছেন।

একজন টিকেট বিক্রেতা বলেন, মনোরম পরিবেশের এই পার্কে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি একেবারে কম না। দুপুরে উপস্থিতি কম হলেও বিকাল ও সন্ধ্যানাগাদ ভরপুর দর্শনার্থী থাকে।

রমনা পার্ক

রাজধানীর রমনা পার্ক জুড়ে নানান বয়সী মানুষের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মত। শিশুদের জন্য থাকা বিশেষায়িত স্থান তথা শিশু চত্বরে কিছুটা ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। কেউ কেউ আবার লেকে থাকা বোটেও ঘুরছেন। আবার কেউবা গাছের ছায়ায় বসে প্রকৃতির সৌন্দর্য্য উপভোগ করছেন।

শান্তিনগর থেকে তিন সন্তানসহ স্ত্রীকে নিয়ে আসা কবির হোসেন জানান, সন্তানরা শিশুদের জন্য বিশেষায়িত স্থানে থাকা রাইডে খেলাধুলা করছেন। আর তার স্ত্রী লেকের পানিতে বোটে চড়েছেন।

আজিমপুর থেকে তিন বন্ধুসহ রমনা পার্কে ঘুরতে এসেছেন কলেজ শিক্ষার্থী জুনায়েদ করিম। খোলামেলা পরিবেশ গাছের ছায়ায় আড্ডা দিতে দিতে বলেন, ছুটিতে এখানে বন্ধুদের নিয়ে একটু সময় কাটাতে এসেছি। এক ফাঁকে বোটেও চড়েছি।

হাতিরঝিল

ওয়াটার ট্যাক্সি ও চক্রাকার বাসে করে হাতিরঝিলে সৌন্দর্য্য উপভোগ করছেন নগরবাসী। এছাড়া ব্রিজসহ সবুজের সমারোহে কিছুটা সময় কাটাতে পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেককে আড্ডাও দিতে দেখা গেছে। তবে এবার ভিড় কিছুটা কম। বনশ্রী থেকে ঘুরতে আসা মাওলানা মো.আবদুল্লাহ বলেন, দুই সন্তানকে নিয়ে হাতিরঝিলে এসেছি। বাচ্চাদের এখানে কৃত্রিমভাবে স্থাপিত হাতি দেখিয়েছি। ওয়াটার ট্যাক্সিতে উঠেছি। ভিড় তেমন একটা নেই। তার কিছুটা স্বস্তির সঙ্গে সময় কাটিয়েছি।     

মহাখালী থেকে আসা রিয়াদ হোসেন জানান, কোনো প্রকার লাইন ছাড়াই ওয়াটার ট্যাক্সিতে উঠেছি। এবার মানুষ কম। লাইনে দাঁড়ানো লাগেনি। হয়তো গরমের কারণে মানুষের উপস্থিতি কম।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS