রংপুরের পীরগঞ্জে বঙ্গবন্ধু পরিষদের উদ্যোগে এবং ড. আব্দুল ওয়াদুদ এর সৌজন্যে সোমবার (১৭ এপ্রিল) প্রায় দুই হাজার পরিবারের মধ্যে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ করা হয়। এ সময় ড. আবদুল ওয়াদুদ এর সম্পাদিত বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বার্তা সম্বলিত লিফলেটও বিতরণ করা হয়। ফিকামলি তত্ত্বের জনক, বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বাংলাদেশ মনোবিজ্ঞান সমিতির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ড. আবদুল ওয়াদুদ এর নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত এ কার্যক্রম দেশের বিভিন্ন জেলায় চলমান রয়েছে।
পীরগঞ্জ উপজেলা চত্বরে আয়োজিত ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি’র ভাইস চ্যান্সেলর, বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রফেসর আব্দুল মান্নান চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা সেন্ট্রাল কমান্ড কাউন্সিল এর চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) হেলাল মোর্শেদ খান, বীর বিক্রম, বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক, ডাক্তার শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন, বাংলাদেশ মনোবিজ্ঞান সমিতি’র মহাসচিব প্রফেসর ড. শামসুদ্দীন ইলিয়াস প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী পীরগঞ্জের মানুষের জন্য ঈদ উপহার নিয়ে আসার জন্য ড. আব্দুল ওয়াদুদকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে ড. ওয়াদুদ এর মত সমাজের অন্যান্য বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসা উচিত।
ড. আবদুল ওয়াদুদ বলেন, ‘পীরগঞ্জের লোকজনের সঙ্গে আমি এক অলিখিত ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ; এখানকার প্রতিটা মানুষকেই আমার খুব আপনজন বলে মনে হয়। এর পেছনে প্রধান কারণ এলাকাটিতে রয়েছে আমার প্রিয় নেত্রী, তার স্বামী বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া এবং তাদের সন্তান ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার বিশিষ্ট কম্পিউটার বিজ্ঞানী সজীব ওয়াজেদ জয় ও বিশিষ্ট মনোবিজ্ঞানী সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বাড়ী। এছাড়াও আমার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত পীরগঞ্জের কর্মচারীদের সততা ও আচার-আচরণ সব সময় আমাকে মুগ্ধ করে। কোন দান বা অনুদান প্রদানের ক্ষেত্রে অহংকার করার মত বা লোক দেখানোর মত কিছু নেই । আসলে সচ্ছলদের অর্থ-সম্পদের ওপর অসচ্ছলদের রয়েছে সামাজিক ও ধর্মীয় অধিকার; অন্যদিকে অসচ্ছলদের প্রতি সচ্ছলদের রয়েছে সামাজিক দায়বদ্ধতা। ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে জনকল্যাণে কোথাও কিছু করতে পারা, মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মধ্যেই নিহিত রয়েছে সত্যিকারে মানবপ্রেম। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন সৈনিক হিসাবে, তার মানবসেবার শিক্ষাকে ধারণ করে, নিজের সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেই সাধারণ মানুষের কল্যাণে, তাদের সেবায় নিয়োজিত থাকতে চাই আজীবন। আত্মনিয়োগ করতে চাই তাদের ভাগ্য উন্নয়নের অভিযাত্রায়। দেখতে চাই বঙ্গবন্ধু কন্যার হাত ধরে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলার বাস্তবায়ন।’
ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী বলেন, ‘ওয়াদুদ আমার একজন প্রিয় ছাত্র। আমি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, তখন দেখেছি স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে তার বলিষ্ঠ ভূমিকা ও নেতৃত্ব। বঙ্গবন্ধু কন্যার প্রতি তার অবিচল আস্থা ও বঙ্গবন্ধুর প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা থেকে ব্যতিক্রমধর্মী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। দিন দিন তার কর্মকাণ্ড দেখে মুগ্ধ হই। ড. ওয়াদুদ একজন শক্তিমান লেখক, গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক। আপাদমস্তক সৎ সজ্জন একজন মানুষ, যিনি দানশীল ও পরোপকারী। আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেন। মানুষের সুস্থ থাকার জন্য তার ফিকামলি তত্ত্ব নিঃসন্দেহে এক যুগান্তকারী আবিষ্কার। ওয়াদুদকে নিয়ে আমি গর্ববোধ করি।’
মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, বীর মুক্তিযোদ্ধা হেলাল মোর্শেদ খান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখছে বিশ্ববাসী। কিন্তু কিছু সংখ্যক কুচক্রী মহল এবং স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করার ব্যর্থ প্রয়াস চালাচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের মিথ্যাচার, অপপ্রচার এবং নাশকতার মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ড. আবদুল ওয়াদুদ এর সম্পাদিত বর্তমান সরকারের সরকারের উন্নয়নের বার্তা সংবলিত লিফলেট বিতরণ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ- একথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।’
প্রফেসর ড শামসুদ্দীন ইলিয়াস বলেন, ‘ড. আব্দুল ওয়াদুদ রংপুরের কেউ নন, তিনি পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ার লোক। কিন্তু এবারের শীতে দেশেব্যাপী শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করেছেন। এখন আবার ঈদ উপহার সামগ্রী বিভিন্ন জেলায় বিতরণ করছেন। সুন্দরবনে বাঘের আক্রমণে নিহত প্রায় আড়াই হাজার পরিবারকে, বিশেষ করে বাঘ আক্রমণে বিধবা হওয়া মহিলাদের মাঝে তিনি প্রতিবছর আর্থিক অনুদান প্রদান করে থাকেন। তিনি পুরো দেশের মানুষকে নিয়ে ভাবেন, বর্তমান সরকারের রাষ্ট্র ক্ষমতায় টিকে থাকার উপায় নিয়ে ভাবেন। দানশীল, জনদরদী মানুষ ড. আবদুল ওয়াদুদ সমাজ সেবার এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।’
ঈদ উপহার বিতরণের পূর্বে অতিথিবৃন্দ বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার কবর জিয়ারত করেন। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, ১৫ আগস্টে নিহত সব শহিদ, জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধের সব শহিদ, পরমাণু বিজ্ঞানী এম এ ওয়াজেদ মিয়া, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাবেক সভাপতি এস এ মালেক, গনতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে নিহত সকল শহিদের বিশেষ করে ড. আব্দুল ওয়াদুদ এর রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রামের সহযোদ্ধা ও রুমমেট ১৯৮৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে নিহত শহিদ সেলিম ও দেলোয়ার এর রুহের মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।