বইয়ের তাক কেনার যা যা জেনে রাখা ভালো

বইয়ের তাক কেনার যা যা জেনে রাখা ভালো

ছোটবেলায় ফেব্রুয়ারি মাস আসার আগে থেকেই ঠিক করে রাখতাম, বইমেলা থেকে কোন বই কিনব। বাবার সঙ্গে একবার বইমেলা ঘুরে আসার পর বায়না ধরা হতো আরও কয়েকবার। পরেরবার হয়তো যাওয়া হতো মামাদের সঙ্গে। এই বইমেলা ঘিরে কতই না স্মৃতি আমাদের! প্রযুক্তির এ সময়েও যাঁরা বই নিয়ে দিন কাটিয়ে দিচ্ছেন দিনের পর দিন, তাঁদের বাহবা দিতেই হয়। একজন বইপ্রেমীর কাছে বইয়ের চেয়ে প্রিয় জিনিস বোধ হয় কমই আছে। ভালোভাবে সংরক্ষণ করা না হলে খুব সহজেই নষ্ট হয়ে যায় বই। সংগ্রহে থাকা বইগুলোকে পরিপাটি করে সাজিয়ে রাখতে কিনতে পারেন বইয়ের তাক। তবে শুধু বই গুছিয়ে রাখাই না, অন্দরের সৌন্দর্য অনেকটা বাড়িয়ে দেয় মানানসই বইয়ের তাক।

হাতিল, রিগ্যাল, বহুসহ বেশ কয়েকটি আসবাবের ব্র্যান্ড ঘুরে দেখা গেল নানা রকম বইয়ের তাক। ছোট-বড় গতানুগতিক ধারার বইয়ের তাকের পাশাপাশি আছে দেয়ালজুড়ে বই রাখার তাক। বইয়ের তাকের আকার আকৃতিতেও দেখা মিলছে ভিন্নতার।

সাবেকি ধাঁচের বইয়ের তাকে নতুনত্ব

আমাদের দেশে বড় বড় আলমারির মতো কাচের দরজা দেওয়া বইয়ের তাক ব্যবহৃত হয়ে আসছে বহু বছর ধরে। এখনো সাবেকি ধাঁচ ধরে রাখতে কেউ কেউ বেছে নেন এমন বইয়ের তাক। তবে অনেকের আবার কাচে আবদ্ধ বইয়ের তাক পছন্দ নয়। বইয়ের তাক কিনতে আসা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তুবা খান বলেন, বইয়ের তাকে কাচের ব্যবহার বইয়ের সঙ্গে একধরনের দূরত্ব তৈরি করে। এ কারণে খোলামেলা বইয়ের তাকই তাঁর পছন্দ। এ রকম বইয়ের তাকের আকৃতিতেও দেখা গেল বৈচিত্র্য। আছে চারকোনা, গোলাকার, উপবৃত্তাকার, বোতলাকৃতিসহ নানা আকারের বিভিন্ন জ্যামিতিক আকৃতির খোলা বা পাল্লাবিহীন বইয়ের তাক। সাধারণত পাঁচ–ছয় ফুট আকারের হয়ে থাকে এসব তাক। আবার অনেককে দেখা যায়, মাটি থেকে ছাদ পর্যন্ত লম্বা বইয়ের তাক বানিয়ে নিতে।

কোন ঘরে কেমন তাক

আজকাল দেয়ালজুড়ে সাজানো তাকে বই রাখতে পছন্দ করেন অনেকেই। এতে যেমন শহরের ছোট্ট বাসায় বইয়ের জন্য একটি সুন্দর জায়গা তৈরি হয়, তেমনি ঘরের সৌন্দর্যে যুক্ত হয় ভিন্ন মাত্রা। সাদামাটা চারকোনা বইয়ের তাকে ব্যবহার করা হচ্ছে পছন্দসই মোটিফও। এসব তাকে বইয়ের পাশাপাশি ছোট ছোট গাছ বা শোপিস রাখেন অনেকে। বসার ঘরের এক পাশের দেয়ালজুড়ে রাখতে পারেন ছিমছাম নকশার বইয়ের তাক। আরেকটু বড় বইয়ের তাক রাখতে চাইলে ঘরের এক কোনায় রাখা যেতে পারে বোতলাকৃতির বইয়ের তাক। অনেকের আবার ঘুমানোর আগে বই পড়ার অভ্যাস আছে। শোবার ঘরে রাখতে পারেন পাল্লাবিহীন বইয়ের তাক। এ ছাড়া পড়ালেখার জন্য শিশুদের ঘরেও প্রয়োজন হয় বইয়ের তাকের। শিশুদের ঘরের জন্য বেছে নিতে পারেন ‘বহুমুখী তাক’। কারণ, শিশুদের স্কুলের বই-খাতা, গল্পের বই, ছবি আঁকার রং ইত্যাদি সরঞ্জাম মিলিয়ে অনেকটা জায়গার প্রয়োজন হয়। পাল্লাবিহীন তাকগুলো সাধারণত বই রাখার জন্য আর পাল্লা দেওয়া তাকগুলোয় থাকতে পারে ব্যক্তিগত প্রয়োজনীয় জিনিস।

বইয়ের তাকের রং

অন্দরের অন্যান্য আসবাবের রঙের সঙ্গে মিল রেখে বইয়ের তাকের রং বেছে নিতে পারেন। এ ছাড়া দেয়ালজুড়ে থাকা বইয়ের তাকের রং নির্বাচন করার সময় দেয়ালের রং বিবেচনায় রাখুন। হালকা রঙের দেয়ালের জন্য বেছে নিতে পারেন কালো, কফি বা বাদামি রঙের বইয়ের তাক। আবার গাঢ় রঙের দেয়ালে মানিয়ে যায় সাদা বা উজ্জ্বল রঙের বইয়ের তাক।

কোথায় পাবেন

হাতিল, রিগ্যাল, অটবি, বহুসহ আসবাবের যেকোনো ব্র্যান্ডে পেয়ে যাবেন বিভিন্ন ধরনের বইয়ের তাক। এ ছাড়া কাঠের আসবাব তৈরি করে এমন কোনো দোকানে গিয়ে নিজের পছন্দমতো ডিজাইনের বইয়ের তাক বানিয়ে নিতে পারবেন। ঢাকার মিরপুরের রয়্যাল ফার্নিচারের বিক্রেতা মাহমুদ হোসেন জানান, আজকাল অনেকেই ঘরের দেয়ালের সঙ্গে মিল রেখে নিজের পছন্দের ডিজাইনে বইয়ের তাক বানিয়ে নেন। পাল্লাবিহীন বইয়ের তাকের দাম পড়বে আকারভেদে ৬ থেকে ১০ হাজার টাকা। আলমারির মতো পাল্লাযুক্ত বইয়ের তাকের দাম ১২ হাজার টাকা থেকে শুরু আর দেয়ালে ঝুলন্ত বইয়ের তাকের দাম পড়বে আকারভেদে ২ থেকে ৫ হাজার টাকা।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS