সুস্থ জীবনের জন্য প্রতিটি মানুষের ভালো ঘুম অত্যন্ত জরুরি। বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনিক অন্তত ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন ঘুমের প্রয়োজন।ভালো ঘুমের জন্য চাই আমাদের আরামদায়ক বিছানা, বালিশ আর শান্ত পরিবেশ। বিশেষ করে বালিশ ঠিকঠাক না হলে অনেকেই শান্তিতে ঠিকমতো ঘুমোতে পারেন না। বিছানা খুব বেশি নরম কিংবা খুব বেশি শক্ত হওয়া যাবে না।
তোশক ও জাজিম একসঙ্গে ব্যবহার না করাই ভালো। তবে খাট বা বিছানার ওপর ভিত্তি করে দুটিই ব্যবহার করা যেতে পারে যদি সেটা সঠিক উপায়ে বানানো যায়। প্রথমে জাজিম বিছিয়ে তার ওপর শক্ত কাঠ বা হার্ডবোর্ড দিয়ে এর ওপর তোশক পাততে হবে। তোশক ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভালো মানের তুলা ব্যবহার করা উচিত। শিমুল তুলা ব্যবহার করতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়। দামে অন্যান্য তুলার চেয়ে একটু বেশি হলেও দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারে ভালো সিদ্ধান্ত হয় শিমুল তুলা ব্যবহার করলে।
জাজিম সাধারণত পাঁচ-সাত ইঞ্চি এবং তোশক তিন-পাঁচ ইঞ্চি উচ্চতার বানানো ভালো। ম্যাট্রেসের ক্ষেত্রে একটু শক্ত প্রকৃতির কেনাই উত্তম। বেশি নরম ম্যাট্রেস মেরুদণ্ডের হাড়ের গঠনের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, এর ফলে পিঠে ব্যথা, ঘাড়ে ব্যথার মতো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। শোয়ার সময় বিছানার কোনো অংশ যেন দেবে না যায় সেটা নিশ্চিত করে বিছানা কিনুন।
বালিশ কেমন হলে ঘুম ভালো হয়
* বালিশের উপকরণ প্রাকৃতিক হওয়া উত্তম।
* ফোম বা কৃত্রিম ফাইবারের বালিশ নরম হলেও ঘুমের জন্য একদমই আরামদায়ক নয়।
* তুলার তৈরি বালিশ স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
* বেশি উঁচু বা নিচু বালিশ ব্যবহার করা উচিত নয়।
* বালিশের উচ্চতা এমন হবে যেন যাতে ঘাড় ও পিঠ সমান্তরালভাবে থাকে।
* তিন-পাঁচ ইঞ্চি উচ্চতার বালিশ সাধারণত আদর্শ উচ্চতা হিসেবে ধরা হয়।
* বালিশের মাপ খুব বেশি ছোট না হওয়াই ভালো। যেমন কুশন।
* বালিশের কভার বেশি খসখসে হওয়া যাবে না।
আরও যা মাথায় রাখতে হবে
* মেঝে বা সোফায় শোয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
* বিছানার আয়তন এমন হতে হবে যেন আরাম করে হাত-পা স্বাচ্ছন্দ্যে রেখে ঘুমানো যায়।
* একপাশ হয়ে ঘুমানো ভালো, তবে শরীর কুঁকড়ে না ঘুমানোই উত্তম।
* কোলবালিশের আয়তন এমন হওয়া যাবে না যাতে ঘুমাতে গেলে বেগ পেতে হয়।
* বিছানায় সুতির চাদর ব্যবহার করুন।
* ২/৩ বছর অন্তর অন্তর বালিশ এবং বিছানা পরিবর্তন করুন।
* ঘুমের সময় নাক ডাকা বা নিশ্বাস নিতে সমস্যা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সাজানোর জন্য যা ব্যবহার করতে পারেন
* আরামের ঘুমের জন্য যেমন বিছানা বালিশ সঠিক হতে হয় তেমনি তার সাজানোর ধরনের উপরও নির্ভর করে রুচিশীলতা।
* সুন্দর করে সাজানো বিছানা মনের মধ্যে এক ধরনের ভালো লাগা সৃষ্টি করে যা ভালো ঘুমের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
* বিছানার চাদর এবং বালিশের এক রংয়ের কভার কিংবা বিপরীত রংয়ের ব্যবহার করুন।
* বিছানা সাজানোর জন্য বালিশের পাশাপাশি বিভিন্ন আকারের কুশন ব্যবহার করতে পারেন।
* বিছানার এক পাশে সুন্দর নকশার কমফর্টার রাখতে পারেন।
* বিছানা জানালার পাশে হলে কার্টেইন বা পর্দা উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার করতে পারেন।