২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি/

২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি/

ওয়ানডে ক্রিকেট ও পাকিস্তানের জন্য কঠিন পরীক্ষা

ওয়ানডে ক্রিকেটের আগের সেই জৌলুস নেই। বিশ্বকাপ ছাড়া এই ফরম্যাটের বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট বলতে আছে কেবল চ্যাম্পিয়নস ট্রফি।কিন্তু টি-টোয়েন্টির আগ্রাসন এবং দর্শক ও স্পন্সরদের আকর্ষণ কমে যাওয়ায় সেটিও বিলুপ্ত হওয়ার পথেই ছিল।  

২০১৭ সালের পর এটির ভবিষ্যৎ নিয়েই শঙ্কা দেখা দিয়েছিল। প্রায় ৮ বছর আগের সেই আসর বসেছিল ইংল্যান্ডে, শিরোপা জিতেছিল পাকিস্তান। এতদিন পর ফের মাঠে গড়াচ্ছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। এবারের আসর বসছে গতবারের চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তানের মাটিতেই। এটি দেশটির জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ দেশটিতে ২৯ বছর আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট হয় না।  

মূলত ভারতের মাটিতে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের সফল আয়োজনের মাঝেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আলোচনা উঠে আসে। হঠাৎ করেই আইসিসি জানায়, বিশ্বকাপের সেরা আট দল সরাসরি খেলবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে। আর তাতে দলগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতাও বেড়ে যায়, বিশেষ করে শেষ দুই অবস্থানে না থাকার চেষ্টা দেখা যায় সবার মধ্যে।  

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আলোচনা শুরু হলেও এটি কীভাবে এবং কোথায় হবে তা নিয়ে শুরু হয়েছিল নতুন ঝামেলা। বিশেষ করে ভারত ও পাকিস্তানের রাজনৈতিক বৈরিতা টুর্নামেন্টের সম্ভাবনাই প্রায় শেষ করে দিচ্ছিল। কারণ সম্ভাব্য আয়োজক পাকিস্তানে যেতে রাজি হচ্ছিল না ভারত। এ নিয়ে দীর্ঘ জটিলতা শেষ হয় আইসিসির হস্তক্ষেপে। সিদ্ধান্ত হয়, আসর হবে হাইব্রিড মডেলে। অর্থাৎ ভারত তাদের সবগুলো ম্যাচ খেলবে দুবাইয়ে।

সবমিলিয়ে এবারের আসরটি আলাদা দুটি কারণে। এক, বিশ্বকাপের বাইরে আইসিসির ওয়ানডে টুর্নামেন্ট টিকে থাকবে কি না, সেটির পরীক্ষা হয়ে যাবে এবার। বিশ্বজুড়ে টি-টোয়েন্টি মারাত্মক আগ্রাসন ও তুমুল জনপ্রিয়তার সামনে ওয়ানডের ভবিষ্যৎ অন্ধকার, এমন ধারণা অনেকের। সেটিকে ভুল প্রমাণ করার সুযোগ এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি।

দুই, পাকিস্তানের মাটিতে বৈশ্বিক আসর আয়োজন কতটুকু সফল হয় তা দেখার অপেক্ষায় পুরো ক্রিকেটবিশ্ব। বিশেষ করে তাদের ভেন্যুগুলো কতটা প্রস্তুত এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার দিকেও চোখ থাকবে অনেকের। এছাড়া পাকিস্তানের ‘রাস্তার মতো’ পিচ আর ফ্লাডলাইটের সমস্যা তো আছেই।

নিরাপত্তার ব্যাপারে পাকিস্তান কোনো ছাড় দিচ্ছে না এবার। দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলোর খবর অনুযায়ী, আসরের দুই ভেন্যু লাহোর ও রাওয়ালপিন্ডিতে কড়া নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান। পাঞ্জাব প্রদেশে অবস্থিত দুটি ভেন্যুর জন্য ১২ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। এর মধ্যে লাহোরে ৮ হাজার ও রাওয়ালপিন্ডিতে প্রায় ৫ হাজারের মতো পুলিশ সদস্য।

আগামীকাল আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে স্বাগতিক পাকিস্তান। তবে পরদিন বাংলাদেশ-ভারতের ম্যাচটি হবে দুবাইয়ে। অর্থাৎ দুই দিনে দুটি আলাদা দেশে হবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ম্যাচ। তবে মাঠের পাশাপাশি চোখ থাকবে ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির দিকেও। আকর্ষণের কেন্দ্রে থাকবে ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ। সবমিলিয়ে জমজমাট লড়াইয়ের অপেক্ষা ক্রিকেটপ্রেমীদের। লড়াইটা ওয়ানডেরও, টিকে থাকার।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS