আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে কিনা সেই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন নয়, বরং তারা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু পরিবেশে নির্বাচন চায় বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন উপসহকারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আখতার।
বাসস’র প্রতিবেদনে জানানো হয়, মার্কিন উপসহকারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আখতার শনিবার রাজধানীতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে কি না সে বিষয়ে আমরা কোন মন্তব্য করছি না। আমরা বাংলাদেশে নির্বাচনের পরিবেশের ওপরই গুরুত্ব দিচ্ছি।’
বিএনপি অথবা অন্য কোনো দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে ওয়াশিংটন উদ্বিগ্ন কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে তারা অংশ নেবে কি নেবে না, রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে এবং নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হতে হবে কিনা আমরা এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করছি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘তার দেশ কোন বিশেষ দল বা প্রার্থীর ব্যাপারে হস্তক্ষেপ বা মূল্যায়ন করছি না। তবে আমরা এখানে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে সহায়তায় কাজ করছি।’
তিনি বলেন, আমি আরো বলতে চাই যে, যুক্তরাষ্ট্র কোন রাজনৈতিক দল, কোন প্রার্থী, কোন ব্যক্তিকে সমর্থন করে না। আফরিন আখতার বলেন, ‘বাংলাদেশের নির্বাচনে আমরা মধ্যস্থতা করতে চাই না।’
আফরিন আখতার বর্তমানে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের নেপাল, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, ভুটান ও মালদ্বীপ সংক্রান্ত দক্ষিণ ও মধ্যএশিয়া ব্যুরোর দায়িত্বে আছেন।
মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রকে সমর্থন করে, কারণ যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে যে গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থাই সর্বোত্তম এবং এই নীতিতেই তার দেশ বিশ্বব্যাপী সুশীল সমাজ এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সমর্থন করে।
তিনি বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে, সুশীল সমাজের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করার সুযোগ রয়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাধীনভাবে নিজেদের মত প্রকাশ করার সুযোগ রয়েছে এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ দেয় এমন গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করছে।
মার্কিন নির্বাচন পর্যবেক্ষক
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তা বলেন, ওয়াশিংটন আগামী মাসগুলোতে বাংলাদেশে প্রাকনির্বাচন পর্যবেক্ষক মিশন পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে মিশনের সফরের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঠিক করা হয়নি।
আফরিন আখতার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা সম্প্রতি বাংলাদেশর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছ থেকেও সেই বার্তা শুনেছি।’
মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, মার্কিন প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক মিশনের প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর ওয়াশিংটন একটি মূল্যায়ন করবে এবং আসন্ন নির্বাচনের সময় বাংলাদেশে একটি পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
গত মাসে ওয়াশিংটনে অ্যান্টনি জে ব্লিঙ্কেনের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন যে, বাংলাদেশ মার্কিন পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানাবে।
আফরিন আখতার ১২ থেকে ১৩ মে ঢাকায় আয়োজিত ৬ষ্ঠ ভারত মহাসাগর সম্মেলনে (আইওসি) মার্কিন প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন।