ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ প্রতিটি পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন বাহিনীর নতুন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। এ সময় তিনি জুলাই-আগস্টে পুলিশের কর্মকাণ্ডের জন্য দুঃখও প্রকাশ করেন।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) পুলিশ সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আইজিপি পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নিহত প্রতিটি পরিবারের কাছে দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা চান।
আইজিপি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এ নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করতে হবে। এ আন্দোলনে ছাত্র, শিশু-কিশোর, সাধারণ মানুষ শহীদ হয়েছেন। এছাড়া কর্তব্য পালন করতে গিয়ে অনেক পুলিশ সদস্য প্রাণ দিয়েছেন। আমি তাদের সবার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। তাদের শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি জানাচ্ছি গভীর সমবেদনা। যারা আহত হয়েছেন তাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।
তিনি আরও বলেন, এ আন্দোলনের সময় ফ্যাসিবাদী সরকারের স্বার্থ রক্ষায় তাদের নির্দেশে পুলিশের কতিপয় সদস্য বাড়াবাড়ি করেছেন এবং আইন ভঙ্গ করেছেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে অনেক নিরপরাধ পুলিশ সদস্যও নিহত হয়েছেন। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডই নিন্দনীয়। আমি পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রতিটি শহীদ পরিবারের কাছে আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি এবং ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
আইজিপি বলেন, পুলিশের প্রধান দায়িত্ব সংবিধানে উদ্ধৃত মৌলিক অধিকার, অর্থাৎ বেঁচে থাকার অধিকার, সম্পত্তির অধিকার, সমাবেশের অধিকার ইত্যাদি রক্ষা করা। মাঠ পর্যায়ে আদালতের পক্ষে এ কাজটা পুলিশই করে থাকে। এ বাহিনীর সদস্যরা সব সময় সর্বোচ্চ আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করে আসছেন। আমরা আমাদের ওপর অর্পিত আইনি দায়িত্ব পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ পুলিশ এক বিশাল চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। পুলিশের জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে। জনগণ ও সরকারের সহযোগিতায় আমরা পুলিশের কার্যক্রমের গতিশীলতা আনার চেষ্টা করছি। পুলিশ সদস্যদের মনোবল ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।
এ সময় আইজিপি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, জনগণের সমর্থন ও সহযোগিতা ছাড়া পুলিশের একার পক্ষে বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ করা দুরূহ। অপরাধ দমন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় আমি সবিনয়ে দেশের জনগণের আন্তরিক সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।
পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি পুলিশ সদস্যদের তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমেই জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করতে হবে। এজন্য জনগণের সঙ্গে বিনয়ী আচরণ করতে হবে। পুলিশের কাছে আইনি সেবা নিতে আসা জনগণের সঙ্গে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠা দিয়ে দায়িত্ব পালন করত হবে।