এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটার তালিকা প্রস্তুতে আইন-কানুন জেনে নিয়েছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দীনের নেতৃত্বাধীন কমিশন। এক্ষেত্রে নতুন কমিশনের নির্দেশনায় অপেক্ষায় নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়।
গত বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাষ্ট্রপতি পাঁচ সদস্যের ইসি নিয়োগ দিলে গত রোববার (২৪ নভেম্বর) শপথ নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন সিইসিহ অন্য নির্বাচন কমিশনাররা। গত কয়েকদিন ধরে অনুনাষ্ঠানিক বৈঠকের অংশ হিসেবে বুধবার (২৭ নভেম্বর) তারা জেনে নিয়েছেন ভোটার তালিকার আইন-কানুন।
বৈঠক শেষে ইসির অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ বলেন, আইন অনুযায়ী প্রতিবছর ভোটার তালিকা হালনাগাদের খসড়া প্রস্তুত করে প্রকাশ করি জানুয়ারির ২ তারিখে। এ খসড়া তালিকা প্রকাশ করার পর কেউ যদি মনে করে সে খসড়া তালিকা মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়নি, তখন তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ভোটার হওয়ার যোগ্য হলে ভোটার হিসাবে গণ্য করা হয়। এ কাজ আমাদের শেষ করতে হয় মার্চের দুই তারিখের মধ্যে বা তার আগে। কারণ দুই তারিখে এ সংশোধনী বা আমাদের ডাটাবেজে আগের যে তথ্য থাকে তার আলোকে যারা প্রতি বছর ১ জানুয়ারিতে ১৮ বছর পূর্ণ হয় তারা ওই বছরেরই ভোটার তালিকায় যুক্ত হয়। এ কাজটা আমাদের সামনে করতে হবে। এ বিষয়ে কমিশনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এর বাইরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য কি কি প্রস্তুতি প্রয়োজন সে প্রস্তুতি সম্পর্কে আমরা কমিশনকে অবহিত করেছি।
ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে ইসি সচিবালয়ের কি প্রস্তুতি আছে -এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কমিশন যদি আমাদের বলে তাহলে আমাদের তো করতে হবে। তবে আমাদের প্রস্তুতির কথা যদি বলেন তাহলে ঠিক এ মূহূর্তে নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না যে প্রস্তুতি আছে কি-না। কমিশন যেভাবে চাইবে সেভাবে আমাদের শেষ করতে হবে এবং সে প্রস্তুতি আমাদের গ্রহণ করতে হবে। বাড়িবাড়ি গিয়ে হালনাগাদ করতে হয় তাহলে আমাদের কি করতে হবে এ বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি।
তিনি বলেন, বাড়িবাড়ি গিয়ে হালনাগাদ করতে হলে আমাদের কি কি প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে এর আগে আমরা যা করেছি তাও কিন্তু প্রস্তুতি। এছাড়া নতুন করে আবার অনেক কিছু সংযুক্ত করতে হবে। যার জন্য আবার প্রস্তুতি নিতে হয়। কিন্তু এমন না যে আমাদের ব্যাপক ঘাটতি আছে।
এবার যদি বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয় তাহলে একই সঙ্গে একাধিক বছরের তথ্য নেবেন কি-জানতে চাইলে অতিরিক্ত সচিব আরও বলেন, আমাদের সভায় আলোচনা হয়েছে আমাদের আইনগত বাধ্যবাধকতা। সেটা করলে কী ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে, আগাম ১ বছরের তথ্য সংগ্রহ করলে কী প্রস্তুতি লাগবে, ২ বছরের তথ্য সংগ্রহ করলে কী প্রস্তুতি লাগবে, ৩ বছরের করলে কী প্রস্তুতি লাগবে, কী পরিমাণ বাজেট লাগবে, কী পরিমাণ জনবল লাগবে, কী পরিমাণ লজিস্টিক লাগবে; এগুলো সম্পর্কে আমরা কমিশনের কাছে তুলে ধরেছি। আমাদের কাজ আমরা উপস্থাপন করেছি। আমরা ভোটার তালিকা হালনাগাদের সমস্ত কার্যাবলী কমিশনের তুলে ধরেছি।
বিগত সময়ে বিতর্কিত ভোটার তালিকা হালনাগাদের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনি জানেন যে কমিশন শুরু থেকে বলছে যে, সবাই যাতে অবাধে ভোট দিতে পারে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। তার প্রথম ধাপ হচ্ছে ভোটার তালিকার শুদ্ধতা। তাই এটা স্বাভাবিক, যে এবার শুদ্ধভাবে ভোটার তালিকা করা হবে।
সর্বশেষ ২০২২ সালে বাড়িবাড়ি ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচির সময় দেওয়া হয়েছিল ৩ সপ্তাহ, তথ্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল বিদ্যমান ভোটারের ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। কার্যক্রম শেষে তথ্য সংগ্রহ দাঁড়িয়েছিল ৯ দশমিক ০৮ শতাংশ এবং নিবন্ধন হয় ৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
২০২৪ সালের মার্চের হালনাগাদ অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ভোটার রয়েছে ১২ কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার ১৬০ জন।