বাজারে সরবরাহ কমায় বেড়েছে ইলিশের দাম

বাজারে সরবরাহ কমায় বেড়েছে ইলিশের দাম

নিষেধাজ্ঞা শেষে ৩ নভেম্বর রাত ১২টার পর থেকে জেলেদের অবাধে ইলিশ ধরা শুরু হয়। নিষেধাজ্ঞা শেষের ২/১ দিন শিবচরের হাট ও বাজারগুলোতে ইলিশের সরবরাহ বাড়লেও ৩/৪ দিন বাজারে কমেছে ইলিশের সরবরাহ।ফলে বেড়েছে দামও। ২/৩ দিনের ব্যবধানে আকার ভেদে মাছের দাম কেজিতে বেড়েছে ২ থেকে আড়াইশ টাকা।

এছাড়া আকারে বড় মাছ বাজারে নেই বললেই চলে। অন্যদিকে নিষিদ্ধ মৌসুমে অসাধু জেলেদের ধরা কিছু মাছ এখনো বাজারে বিক্রি হচ্ছে। ওগুলোর দাম তুলনামূলক একটু কম।
শনিবার (৯ নভেম্বর) শিবচরের বিভিন্ন মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে এই চিত্র।

জানা গেছে, ইলিশের প্রজনন মৌসুম ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর ২২ দিন নিষিদ্ধ ছিল ইলিশ ধরা। এর ৩ নভেম্বর রাত ১২টার পর থেকে শিবচরের পদ্মা-আড়িয়ল খাঁ নদীতে অবাধে ইলিশ ধরতে নামে জেলেরা। তবে প্রজনন মৌসুম শেষ হলেও নদীতে তেমন ধরা পড়ছে না ইলিশ। ফলে শিবচরের বাজারগুলোতে পদ্মার ইলিশের সরবরাহ অনেকটাই কম। এতে করে দাম এখন আকাশচুম্বী। আর দাম শুনে ক্রেতারাও ইলিশ সহসা কিনছেন না।

এদিকে ১ কেজি পরিমাণ ইলিশ বাজারে এখন নেই। মাঝেমধ্যে এলেও দাম অনেক বেশি। বর্তমানে আকারে ছোট ইলিশ দেখা যাচ্ছে বাজারে। তবে দাম কেজিতে বেড়েছে ২ থেকে আড়াইশত টাকা। এসব মাছ আকার ভেদে ১২/১৩শ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত কয়েকদিন আগে যে ইলিশ ৭শ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে, এখন এক হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে।

পদ্মাপাড়ের একাধিক জেলেরা জানান, ইদানীং জালে মাছ কম ধরা পড়ছে। তাছাড়া বড় মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। পদ্মায় পানি কমতে শুরু করেছে। এজন্য ইলিশ কম এখানে। এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জেলে জানান, এ বছর নিষিদ্ধ মৌসুমে অবাধে ইলিশ ধরেছে এক শ্রেণির জেলেরা। প্রচুর মাছ তখন ধরা পড়েছে। ওই মাছ মজুদ করে এখন বিক্রি করছে!

উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, মৌসুম শেষ হওয়ার পর মাছ কম ধরা পড়ার কথা নয়। এখানে সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে দাম বাড়ানোর একটা কৌশল হতে পারে ব্যবসায়ীদের।

বিক্রেতাদের সাথে আলাপ করলে তারা জানান, বাজারে মাছ কম আসছে। আমরা পাইকারি বাজারেই মাছ কম পাচ্ছি। তারা বলে, নদীতে পানি কমতে থাকায় ইলিশ কম পাওয়া যাচ্ছে। কারণেই দাম বেড়েছে। আর দাম বাড়ায় বিক্রিও কমেছে। দাম শুনেই ক্রেতারা চলে যায়!

মো. লিটন নামে শিবচর বাজারের এক মাছ বিক্রেতা বলেন,৭শ টাকা ইলিশ বিক্রি করতে হচ্ছে ১ হাজার টাকায়। এজন্য বিক্রি কমেছে। বড় ইলিশ বাজারে নেই। এদিকে বাজারে ইলিশ মাছ থাকায় দেশীয় অন্যান্য মাছের দাম কিছুটা কমেছে বলে বিক্রেতারা জানান। পাঙাশ, তেলাপিয়া, চাষের রুইসহ অন্যান্য মাছের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে।


ক্রেতারা জানান, ইলিশের দাম বেশি। অনেক দোকানে আগে ধরা মাছ এখনো বিক্রি করছে। দাম বেশি থাকায় কেনা হচ্ছে না। অন্যান্য মাছের দাম একটু কম।

শিবচর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফেরদৌস ইবনে রহিম জানান, এখন নদীতে মাছ কম থাকার কথা পুরোপুরি সঠিক নয়। উপকূলীয় এলাকায় মাছ ধরা পড়ছে অনেক।
শিবচরের পদ্মায় ক্ষেত্র বিশেষ কম ধরা পড়তে পারে। তবে এটা সামগ্রিক চিত্র নয়। দাম বাড়াতে সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া এক কৌশল হতে পারে।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS