তুরস্কের পার্লামেন্ট ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বাকি আর মাত্র ৩ দিন। এরই মধ্য চলছে শেষ সময়ের হিসাব-নিকাশ। ধারণা করা হচ্ছে এবারের নির্বাচনের ভাগ্য নির্ধারণ করবে তরুণ ভোটাররা, যাদের সংখ্যা প্রায় পাঁচ মিলিয়ন। এছাড়াও এতে ভূমিকা রাখতে পারে নারী ভোটাররাও।
বৃহস্পতিবার বিবিসির প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তুরস্কের নির্বাচনে মোট ভোটারদের অর্ধেক সংখ্যায় নারী। ভোটারদের মধ্যে নারী ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৫০.৬ শতাংশ রয়েছে।
তবে আসন্ন নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের দু’দশকের ক্ষমতার অবসান হওয়ার অনেকটাই সম্ভাবনা রয়েছে। তার কারণ হিসেবে অনেকটা তরুণ ভোটারদের দেখছেন বিশ্লেষকরা। এছাড়াও তারা বলছেন, এরদোয়ান যদি এবার ক্ষমতা থেকে ছিটকে পড়েন, তবে তা হবে তার অর্থনৈতিক নীতিমালাজনিত কয়েকটি ভুল পদক্ষেপের কারণে।
বিশ্ববিদ্যালযয় শিক্ষার্থী পেরিট (২৩) বলেন, ‘যদি রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান আবারও জয়ী হন, আমাদের সবার জীবন দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠবে।’ সরকারপন্থী ডিন নিয়োগের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় তাকে কারাগারে নেওয়া হয়েছিল এবং প্রায় দু’মাস কারাভোগ করেন তিনি।
পেরিট এর আগে মাত্র একবার ভোট দিয়েছেন। অন্যদিকে তার বন্ধু সৌউদি এবং এমরু প্রথমবারের মতো ভোটার হয়েছেন। এছাড়াও এবার তরুণ ভোটারদের সংখ্যা প্রায় পাঁচ মিলিয়ন, যারা এরদোগান ছাড়া অন্য কোন তুর্কি নেতাকে চেনেন না।
সরকারী পরিসংখ্যান অনুসারে বর্তমানে ৪৪ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতির দিকে ইঙ্গিত করে এমরু অভিযোগ করেন, তুরস্কের তরুণদের জন্য জীবন ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, ‘আপনি পড়ালেখা করারও সামর্থ্য রাখেন না, চলার জন্য আপনাকে পাশাপাশি ফুল টাইম চাকরিও করতে হবে।’
এরদোয়ান ও তার একে পার্টি প্রথম এক দশকের শাসন মেয়াদে তুরস্কে উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধি অর্জন হতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী দশক থেকে পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করে। মুদ্রার মান কমে যাওয়া এবং জীবনযাপনের খরচ বেড়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে গত কয়েক বছরে এরদোয়ানের প্রতি মানুষের সমর্থন কমতে দেখা গেছে। তবে তার জনপ্রিয়তা কমার এ প্রবণতা শুরু হয়েছে মূলত ২০১৩ সাল থেকে।
ওই বছর তুরস্কজুড়ে এরদোয়ান সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ হতে দেখা গেছে, বিরোধীদের ওপর ধরপাকড় চালানো হয়েছে। এছাড়া বৈশ্বিক সংকটের কারণে তুরস্ক এবং অন্য উদীয়মান বাজারগুলো তহবিল-সংকটে পড়ে।