দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি বিস্তৃতি হয়ে আরও অবনতি হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েক লাখ মানুষ।
বুধবার (২১ আগস্ট) পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এমন তথ্য জানিয়েছে।
পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ নাজমুল আবেদীন জানিয়েছেন, বর্তমানে সাতটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সুনামগঞ্জের মারকুলিতে কুশিয়ারার পানি বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, মৌলভীবাজারের রেল ব্রিজে মনু নদীর পানি বিপৎসীমার ৯৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে ও মৌলভীবাজারে ৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, ধলাই নদীর পানি মৌলভীবাজারে ৪৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, হবিগঞ্জের বান্নায় খোয়াই নদীর পানি ১৯৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে ও হবিগঞ্জে ১৯০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, ফেনীর পরশুরামে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, ফেনী নদীর পানি চট্টগ্রামের রামগড়ে বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে ও হালদা নদীর পানি চট্টগ্রামের নারায়ণহাটে বিপৎসীমার ১০০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ফেনী ও চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
পাউবো জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও গঙ্গা নদ-নদীর পানির সমতল কমছে, অপরদিকে পদ্মা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে। আগামী দুদিনে এসব নদীর পানির সমতল কমতে পারে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীসমূহের পানির সমতল বাড়ছে।
আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, আগামী দুদিনে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে, এ সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার প্রধান নদীসমূহের পানির সমতল কতিপয় পয়েন্টে সময় বিশেষে বাড়তে পারে।
এদিকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই, ধলাই নদীর পানির সমতল বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে এবং নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।
আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, আগামী একদিনে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে, এ সময় এ অঞ্চলের মুহুরী, ফেনী, হালদা, সাঙ্গু, মাতামুহুরী ও গোমতী ইত্যাদি নদীসমূহের পানির সমতল সামগ্রিকভাবে স্থিতিশীল থাকতে পারে।
একই সময়ে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ফেনী ও চট্টগ্রাম জেলার মুহুরী ও হালদা নদীর পানির সমতল বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে এবং নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে। এছাড়া পূর্বাঞ্চলের কুমিল্লা জেলার গোমতী নদীর পানির সমতল বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে এবং সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।